ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রী হয়রানি ॥ চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৩ জুন ২০১৮

  কাঁঠালবাড়ি ঘাটে কর্মস্থলে  ফেরা যাত্রী হয়রানি ॥  চরম দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২২ জুন ॥ শুক্রবার সকাল থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের ¯্রােত নেমেছে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার মানুষ ঈদের ছুটি শেষে কাঁঠালবাড়ি ঘাট হয়ে রাজধানীতে ছুটছেন। লঞ্চ, স্পীডবোটে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সুযোগে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে শুরু হয়েছে যাত্রী হয়রানি ও জুলুম নির্যাতন। ফলে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি জুলুম চলছে সীবোট যাত্রীদের সঙ্গে। নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমাফিক ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক যাত্রীকে অপমান সহ্য করতে হচ্ছে। তবুও নিস্তার নেই যাত্রীদের। গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। ঘাটে জুলুম নির্যাতন চললেও এসব দেখার কেউ নেই। জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে প্রতিদিন ৮৭ খানা লঞ্চ, ২ শতাধিক সীবোট এবং রো-রোসহ ১৯টি ফেরি যাতায়াত করছে। কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সুযোগ সন্ধানী ইজারাদারের চাঁদাবাজ বাহিনী কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সীবোট কাউন্টারে বসে ইচ্ছেমাফিক যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করাসহ যাত্রীদের হয়রানি ও জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। ঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনের কাছে অভিযোগ করেও ইজারাদার ইয়াকুব বেপারির চাঁদাবাজ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে চাঁদাবাজ বাহিনী কাঁঠালবাড়িঘাট জুলুমের রাজ্যে পরিণত করেছে। ঈদের আগে থেকেই কাঁঠালবাড়ি ঘাটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা থাকলেও প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে সীবোট যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করাসহ জুলুম নির্যাতনের মাত্রা কয়েক গুণ বৃদ্ধি করেছে। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করে প্রকাশ্যেই চলছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের আদলে চাঁদাবাজি। ঈদের পরে কর্মস্থলে ফেরা দরিদ্র অসহায় মানুষগুলো ঢাকায় যাওয়ার জন্য কাঁঠালবাড়ি ঘাটে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। বেশি ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে তাদের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে বাকবিত-া করছে সীবোটের শ্রমিক সিন্ডিকেড। মাদারীপুর থেকে ঢাকাগামী সীবোট যাত্রী এনামুল হক বলেন, ‘এত জুলুম সহ্য করার মতো নয়। আগের চেয়ে পদ্মা পারাপারে দূরত্ব কমেছে ৫ কি.মি.। অথচ ১শ’ ২০ টাকার ভাড়া রাতারাতি হয়ে গেল ১ শ’ ৫০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে ২ শ’ থেকে ২ শ’ ২০ টাকা। শুধু ঈদেই নয়, এদের জুলুম চলে বারো মাস। আমরা জুলুমের শিকার হলেও এসব দেখার কেউ নেই।’ কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ইজারাদার ইয়াকুব বেপারি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ঘাটে সীবোটে ভাড়া একটু বেশি নিচ্ছে, দুই চার দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। তবে ঘাটে আমার কোন লোক চাঁদাবাজি করে না। যারা চাঁদাবাজি করে তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে আইনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এ ব্যাপারে লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আতাহার বেপারি জানান, লঞ্চে ৩৫ টাকার উর্ধ্বে একটি পয়সাও বেশি নেয়া হচ্ছে না। শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ বলেন, ‘কাঁঠালবাড়ি ঘাটে সীবোটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এমন অভিযোগ কেউ করেনি। ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে আমি একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অভিযোগের বিষয়টি আমি এখনই খতিয়ে দেখছি।’
×