ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষকের বাড়ি থেকে স্কুলের সোলার ও পাম্প উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২২ জুন ২০১৮

  শিক্ষকের বাড়ি থেকে  স্কুলের সোলার ও  পাম্প উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের সতিপুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের সোলার ও মোটর পাম্প উদ্ধার করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয়রা। এদিকে দেয়া প্রজেক্টটি আত্মসাত করেছে বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন ২০১৭ সালের এপ্রিলে বিদ্যালয়টিতে যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন জিনিসপত্র নিজ বাড়িতে নিয়ে যান এমন অভিযোগ করে আসছিলেন এলাকাবাসীর। ২০১৭ সালের বেসরকারী সংস্থার প্রকল্প ওয়াশ ব্লকের দেয়া মোটর পাম্প, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সরকারের দেয়া ৪০ ওয়াটের একটি সোলার নিজ বাড়িতে নিয়ে তিনি ব্যবহার করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং সহকারী শিক্ষদের অজান্তে এসব জিনিসপত্র তিনি নিয়ে যান বলে অভিযোগ সবার। বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার পরিচালনা কমিটি এবং এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে সেগুলো উদ্ধার করেন। এদিকে বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর কোথায় জানতে চাইলে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক। তবে এলাকাবাসী এবং পরিচালনা কমিটির জানায় বিদ্যালয়ে কোন প্রকার চুরির ঘটনা ঘটেনি। চুরির ঘটনার বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা শাকী জানান, ১৯ জুন স্কুল খোলার দিন আমি প্রথমে স্কুলে আসি এবং অফিসকক্ষ খুলে চেয়ার এলোমেলো দেখি। কিছুক্ষণ পর আরও দুই শিক্ষিকা উপস্থিত হন। পরে প্রধান শিক্ষক আসেন। এদিকে অফিস কক্ষের এমন অবস্থা এবং আমাদের (সহকারী শিক্ষকদের) টাকা জমানো একটি মাটির ব্যংক দেখতে না পেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে তিনি চুপ থাকেন। মাটির ব্যাংকের কথা শুনে প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষিকা মেহরুন নেছাকে চাবি দেন এবং তার আলমিরা খুলতে বলেন। ওই শিক্ষিকা আলমিরা খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক চিৎকার দিয়ে বলেন প্রজেক্টর কই। প্রজেক্টর চুরি হয়েছে। সহকারী শিক্ষিকা মেহরুন নেছা জানান, চাবি দিয়ে আলমিরাটা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই হেড স্যার প্রজেক্টর নেই বলে চিৎকার করতে থাকেন। স্কুল কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান জানান, চুরি হলে দুইটা তালা ভাঙ্গার কথা। তালা ঠিক আছে ভেতর থেকে কিভাবে প্রজেক্টর চুরি হয়। আসলে তিনিই এটা আত্মসাত করেছেন। এদিকে কয়েকশ অভিভাবক এবং এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার সারাদিন বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক গা ঢাকা দেন। প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান, শ্রেণীকক্ষের তালা ভাল না থাকায় চোর সেই কক্ষ দিয়ে প্রবেশ করে অফিস কক্ষে আমার আলমিরাতে রাখা প্রজেক্টর চুরি করে নিয়ে যায় এবং আলমিরা আবার লাগিয়ে দিয়ে যায়। এ বিষয়ে কচাকাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় সরকার জানান, ঘটনাটি শুনেছি অফিসিয়ালি কোন কাগজপত্র পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য উক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন দক্ষিণ বলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিকালীন উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করলে তাকে সতিপুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।
×