ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক রাশিয়ার মুখোমুখি সৌদি আরব

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৪ জুন ২০১৮

    উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক রাশিয়ার মুখোমুখি সৌদি আরব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ দুয়ারে। আজ থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের জমজমাট আসর। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক রাশিয়া ও এশিয়ার প্রতিনিধি সৌদি আরব। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জয়ের আশা করছে দু’দলই। স্বাগতিক রাশিয়া প্রথম ম্যাচেই নিজেদের শক্তির জানান দিতে চায়। তেমনি জয়ের স্বপ্ন বুনছে সৌদি আরবও। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য এগিয়ে সৌদিই। মুখোমুখি লড়াইয়েও পিছিয়ে আছে রাশানরা। এ পর্যন্ত মাত্র একবার মুখোমুখি হয়েছে দেশ দু’টি। তাতে সৌদি আরবের জয় ৪-২ গোলে। রাশিয়ার ফিফা র‌্যাঙ্কিং যেখানে ৭০ সেখানে সৌদির র‌্যাঙ্কিং ৬৭। গত আট মাস কোন ম্যাচে জয় না পাওয়া রাশিয়ার জন্য বিশ্বকাপের শুরুটা তাই অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং। ‘এ’ গ্রুপের অপর দুটি দল উরুগুয়ে ও মিসর। গত সপ্তাহে মস্কোতে তুরস্কের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ শেষ করেছে রুশবাহিনী। এই নিয়ে জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক চেরচেসোভের অধীনে টানা সাত ম্যাচ জয়বিহীন থেকেছে রাশিয়া। এর মধ্যে চারটিতে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ রয়েছে। এই প্রথমবারের মতো রাশিয়ান কিংবা সোভিয়েত হিসেবে রাশিয়া জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পেলেন চেরচেসোভ। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ এই আসরের প্রস্তুতির জন্য রাশিয়া ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন নিজেও রাশিয়ার সাফল্যের জন্য সকলকে একত্রিত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। পুতিন বলেন, জাতীয় দলের কথা বলতে গেলে একটি কথা স্বীকার করতেই হবে, দুর্ভাগ্যবশত সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দল তেমন কোন ভাল ফল অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু আমরা অতিমাত্রায় আশাবাদী। রাশিয়ার সকল ফুটবল সমর্থক, ফুটবলপ্রেমী আশা করছে স্বাগতিক হিসেবে রাশিয়া তার মান রাখবে। মাথা উঁচু করে শেষ পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবে। গত প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করা ইগর আকিনফিভ আশা করেন তার দল যে কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করতে প্রস্তুত। গত মাসে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ১-০ গোলে পরাজিত হওয়ার পর আকিনফিভ বলেছিলেন, রাশিয়া অবশ্যই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে। কিন্তু তা না হলে বিশ্বকাপে ভাল কিছু করা অসম্ভব। সোভিয়েত কিংবদন্তি লেভ ইয়াসিন ও রিনাত ডাসাইয়েভের থেকে ক্লাব ও জাতীয় দুই পর্যায়ে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে রাশিয়ান অধিনায়ক আকিনফিভের। পুরো দলই ৩২ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ গোলরক্ষকের দিকে তাকিয়ে আছে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পরে এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যেতে পারেনি রাশিয়া। কিন্তু এবার স্বাগতিক হিসেবে অন্তত সেই বাধাটা দূর করতে চায় চেরচেসোভ শিষ্যরা। ২০১০ সালে একমাত্র স্বাগতিক হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের ইতিহাসে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। তবে রাশিয়ার সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে দলের খেলোয়াড়দের দীর্ঘ ইনজুরি। জেনিট পিটার্সবার্গের স্ট্রাইকার আলেক্সান্দার কোকোরিন মার্চে হাঁটুর ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন। ডিফেন্ডার গিওর্গি ডিজিকিয়া ও ভিক্টর ভাসিনও ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে জায়গা করে নিতে পারেননি। ক্রাসোনডার ফরোয়ার্ড ফিওডোর সমোলোভ ও আরটেম দিজিউবার ওপরই আক্রমণভাগের দায়িত্ব পড়েছে। অন্যদিকে প্রায় দুই বছরের বেশি সময় পরে পুনরায় জাতীয় দলে ফিরেছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক উইঙ্গার ডেনিস চেরিসেভ। অন্যদিকে ২০০৬ সালের পর আবারও বিশ্বকাপের আসরে ফিরেছে সৌদি আরব। শীর্ষ পর্যায়ে খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ে স্পেনের বিভিন্ন ক্লাবে খেলার জন্য দেশটির ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় দলের নয়জন খেলোয়াড়ের ব্যাপারে আলোচনা অনেকটাই এগিয়ে আছে। যার মধ্যে ফরোয়ার্ড ফাহাদ আল-মুবালাদ লেভান্তেতে ধারে এক মৌসুম খেলেছেন। এছাড়া উইঙ্গার সালেম আল-দাওসারি ভিয়ারেলের হয়ে মৌসুমের একেবারে শেষের ম্যাচটিতে কয়েক মিনিটের জন্য মাঠে নেমেছিলেন। এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ইয়াহিয়া আল-সেহরি লেগানেসে গেলেও একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাননি। বাছাইপর্বে ১৬ গোল করা মোহাম্মেদ আল-সালাবি তিন সপ্তাহের জন্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড গত নয় ম্যাচে গোলবিহীন।
×