ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকাসহ ১৭ জেলায় গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্স

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৪ জুন ২০১৮

 ঢাকাসহ ১৭ জেলায় গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্স

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পূর্বাঞ্চলের পর দেশের মধ্যে এবং দক্ষিণাঞ্চলকে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। অনুসন্ধানের বাইরে থাকা দেশের ১৭ জেলায় ২য় মাত্রার ভূকম্পন জরিপ করছে রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস উত্তোলন অনুসন্ধান কোম্পানি (বাপেক্স)। সম্প্রতি পেট্রোবাংলা থেকে এক চিঠিতে জরিপ কাজে অন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সহায়তা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেরিতে হলেও এই অনুসন্ধান কাজ সুফল বয়ে আনবে। এখন দেশে গড়ে গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ দুই হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা এর থেকে আরো এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বেশি। কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়াতে সরকার প্রধান জ্বালানি গ্যাস আমদানি করছে। বাংলাদেশে গড়ে বছরে একটি কূপ খনন করা হয়েছে। আর পূর্বাঞ্চল ছাড়া দেশের প্রায় অন্যসব এলাকা তেল গ্যাস অনুসন্ধানের বাইরে রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর আগেও দেশের এমন কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে যথাযথ অনুসন্ধান না করেই বলে দেয়া হয়েছে গ্যাস নেই। আরো ভালভাবে এসব এলাকায় অনুসন্ধান চালানো দরকার। এরমধ্যে চট্টগ্রামের পটিয়া জুলদা ছাড়াও বাগেরহাটের কিছু এলাকা রয়েছে। বাপেক্সের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিন হাজার লাইন কিলোমিটার এলাকায় অনুসন্ধান চালানো হবে। এতে দেশের মধ্য এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যাবে। দেশের মধ্য অঞ্চলের ঢাকার আশপাশে ছোট আকারের গ্যাস খনি থাকতে পারে। এর আগে রূপগঞ্জ এলাকায় গ্যাস পাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকার নরসিংদী এবং গাজীপুরেও গ্যাসের মজুদ রয়েছে। বাপেক্স সূত্র বলছে ১৭ জেলার মধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা এবং বাগেরহাটে গ্যাস অনুসন্ধান চালানো হবে। ভূতাত্ত্বিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, দেরিতে হলেও অনুসন্ধান কাজ শুরু হচ্ছে। কাজটি খুব কারিগরিভাবে জটিল। দেরিতে হলেও এই উদ্যোগ গ্রহণকে শুভ হিসেবে দেখছেন তিনি। অধ্যাপক ইমাম বলছেন, দেশের সব জায়গাতেই গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর মধ্যে দেশের সিলেট অঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে বরিশাল অঞ্চলের মধ্যে ভোলা, বরিশাল এবং শরীয়তপুরে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ব্লক-৭ এ বাগেরহাটে একটি টাইট স্যান্ড এর মধ্যে গ্যাস রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে কূপ খনন করলে ওই গ্যাস উঠবে না। আগে স্যান্ডটি ফাটাতে হবে তারপর গ্যাস উঠবে। হয়তো শেভরনের জন্য এটা লাভজনক হবে না। কিন্তু আমাদের জন্য তো লাভজনক হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, শেভরন বড় আকারের গ্যাস ক্ষেত্র ছাড়া কূপ খনন করে না। কিন্তু বাপেক্সতো ছোট ছোট খনিতেও কূপ খনন করে গ্যাস তুলেছে। প্রসঙ্গত ভোলাতে গ্যাস রয়েছে। ভোলায় বিপুল গ্যাসের মজুদ থাকায় পাশের জেলাগুলোতেও গ্যাস থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া খুলনা অঞ্চলে ব্লক-৭ এ সুন্দরবনের মধ্যে তেল গ্যাস অনুসন্ধান চালায় শেভরন। কিন্তু শেভরন তখন ওই এলাকার গ্যাসকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক নয় উল্লেখ করে তুলতে সম্মত হয়নি। তবে সেখানে গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে কোম্পানিটি জানিয়েছিল। পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোঃ ফয়েজউল্লাহ-এনডিসি সম্প্রতি এক চিঠিতে জ্বালানি বিভাগের কাছে সংশ্লিষ্ট অন্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েছেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদার প্রেক্ষিতে ১৭ জেলায় তেল গ্যাস অনুসন্ধান করা হচ্ছে। দ্বি মাত্রিক জরিপ করার জন্য সিনোপ্যাক ইন্টারন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম সার্ভিস কর্পোরেশনের সঙ্গে গত বছর চুক্তিও করে পেট্রোবাংলা।
×