ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মীরসরাইয়ে পদচারী সেতু ব্যবহার করছে না কেউ

ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৪ জুন ২০১৮

ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ১২ মে ॥ কোটি টাকায় নির্মিত পদচারী সেতু ব্যবহার করছে না পথচারীরা। প্রতিনিয়ত তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কের খোলা অংশ দিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন। শুধু মানুষ নয়, অটোরিক্সা, সাধারণ রিক্সা, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পারাপার হচ্ছেন। পারাপারের সময় দেখা যায়, দ্রুতগতিতে মহাসড়কে চলমান বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, লং ভেইকেলসহ নানাবিধ গাড়ি দ্রুত সময়ে কষে ব্রেক করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। পথচারীরা চলন্ত গাড়িকে থামার সঙ্কেত দিয়ে তারা পারাপার হচ্ছেন। অনেক সময় পথচারী কিংবা চালকের অসাবধানতায় মুহূর্তে নিভে যাচ্ছে জীবন প্রদীপ। এরকম কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা প্রত্যক্ষ ঘটলেও ন্যূনতম সচেতনাবোধ জাগেনি পথচারীদের মধ্যে। একটি সহজলভ্য পারাপারের জন্য নিভে যাচ্ছে একটি জীবনের আলো। তবুও থেমে নেই এই পারাপার। সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের চার লেনে উন্নীত করার পর পথচারীদের পারাপারে নিরাপত্তা এবং সড়কে ডিভাইডার সংযুক্তির কারণে মীরসরাইয়ে কোটি টাকা ব্যয়ে ২টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এরমধ্যে একটি হচ্ছে মীরসরাই পৌরসদরে, আরেকটি বারইয়ারহাট পৌরসভায়। ব্রিজ নির্মাণের পর সড়কে ডিভাইডার নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় তখনও পথচারীরা ওভারব্রিজ ব্যবহার করেনি। পরে সব স্থানে ডিভাইডার নির্মাণ করলেও মহাসড়কের বারইয়ারহাট ট্রাফিক মোড়ে এবং শান্তিরহাট রোডের মুখে ডিভাইডার নির্মাণের সময় বাধ সাধে সাধারণ জনগণ। এদের সঙ্গে বারইয়ারহাটের ব্যবসায়ী নেতারা একাত্মতা প্রকাশ করে ডিভাইডার নির্মাণ করতে দেয়নি বলে দাবি করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ। পরে বাধ্য হয়ে সেখানে কিছু অংশ ফাঁকা রেখে চলে যায় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এদিকে ডিভাইডার দিয়ে ফাঁকা রাখার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, বারইয়ারহাটের বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পূর্বপাশে অবস্থিত। মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার সকল প্রকার পণ্য মহাসড়কের পূর্ব পাশে হওয়ায় পশ্চিম প্রান্ত থেকে যে সকল ক্রেতা আসেন তারা পূর্বপাশে যেতে হলে ফুটওভার ব্রিজেই তাদের ভরসা। কিন্তু বাজারের ভারি ব্যাগ ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র নিয়ে ওভারব্রিজ পার হওয়া খুব কষ্টসাধ্য বলে তারা সহজপথ অবলম্বন করছেন। এই সহজ পথ অবলম্বন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছেন। এভাবে পারাপারের ফলে ইতিপূর্বে অনেকে গাড়ির চাপায় হতাহত হয়েছে। এ বিষয়ে বারইয়ারহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে ফাঁকা অংশটি বন্ধ করতে মানা করেছিলাম। তবে মানুষের মৃত্যু ঝুঁকির কারণে এখন আমিও চাই সড়কের বাজারের অংশে ছোট বড় সকল ফাঁকা স্থান বন্ধ করা হোক।’ এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তা ও চাহিদার কথা ভেবে সরকার কোটি টাকা ব্যয়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করেছে। কিন্তু মানুষ যদি এর ব্যবহার না করে তাহলে কি করার আছে। আমরা যখন সড়কে ডিভাইডার দিয়ে খোলা অংশটি বন্ধ করতে চেয়েছি তখন জনসাধারণ ও ব্যবসায়ী নেতারা তা করতে দেয়নি। ফলে সে অংশটি এখনও খোলা পড়ে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মীরসরাই সদরে খোলা অংশটি বন্ধ করে দিয়েছি। সেখানে এখন জনসাধারণ সেতু ব্যবহার করছে। ঈদের পরে আমরা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে বারইয়ারহাটে খোলা অংশটি বন্ধ করে দেব।
×