ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একনায়কদের মুখোমুখি মার্কিন প্রেসিডেন্টরা

প্রকাশিত: ০৭:২৫, ১২ জুন ২০১৮

একনায়কদের মুখোমুখি মার্কিন প্রেসিডেন্টরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আজ সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার ৭০ বছরের ইতিহাসে কোন কিমই ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৈঠকে বসেননি। ওয়াশিংটন পোস্ট। হুভারের সঙ্গে হিটলারের পরামর্শ ॥ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব শেষ করার পাঁচ বছর পর হারবার্ট হুভার ইউরোপ ভ্রমণে যান। বিশেষ করে ১৯২০সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত মহাদেশে তার ইচ্ছানুযায়ী মানবিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য এ সফর করেন। ১৯৩৮ সালের মার্চে বার্লিনে হুভার রেইক চ্যান্সেলরিতে এ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে ৪০ মিনিট কথা বলেন। হিটলারের সঙ্গে আলাপে হুভার ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। জার্মানির ফিউরার জবাব দিয়েছিলেন, সম্পদশালী যুক্তরাষ্ট্রের মতো সাম্রাজ্যবাদীরা এ ধরনের স্বাধীনতা বহন করতে পারছে না। দেশে ফিরে হুভার জীবন ও ন্যায়বিচারের অবজ্ঞা করায় নাৎসিদের নিন্দা করেন। স্ট্যালিনের সঙ্গে রুজভেল্টের যুদ্ধকালীন বৈঠক ॥ ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট ও উইন্সটন চার্চিল জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধের সমন্বয় করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৌভিয়েত ইউনিয়নের একনায়ক জোসেফ স্ট্যালিনের সঙ্গে দুবার বৈঠক করেন। ১৯৪৩ সালে তেহরানে রুজভেল্ট ও চার্চিল পশ্চিম ইউরোপে একটি দ্বিতীয় ফ্রন্ট খুলতে সম্মত হন। তারা জার্মানির সম্পদ ভাগ করার জন্য পূর্ব ইউরোপে একটি আক্রমণাত্মক অভিযান প্রবর্তন করার জন্য একমত হন। ১৯৩৩ সালে সৌভিয়েত ইউনিয়নে কূটনৈতিক স্বীকৃতি লাভের পর রুজভেল্ট মনে করেন, তিনি প্রতিশ্রুতির সঙ্গে স্ট্যালিনের আস্থা জয় করেছিলেন। কেনেডি-ক্রুশ্চেভ বৈঠক ॥ ১৯৬১ সালের জুনে ভিয়েনায় সৌভিয়েত প্রিমিয়ার নিকিতা ক্রুশ্চেভের সঙ্গে জন এফ কেনেডির বৈঠকে অনেক বাকবিত-া হয়। সম্মেলন থেকে বেরিয়ে কেনেডি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, তিনি আমাকে মেরে নরক থেকে বের করে দিতে বাকি রেখেছিলেন। যদি তিনি মনে করেন আমি অনভিজ্ঞ ও কোন সাহস নেই যদি না আমরা ওই ধারণাগুলো মুছে ফেলি আমরা আর কখনই তার সঙ্গে কোথাও তার সঙ্গে যাব না। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, ক্রুশ্চেভ ও কেনেডির সঙ্গে হওয়া প্রথম সাক্ষাতের ছাপ পরে বারবার সংঘাতের সৃষ্টি করেছে। যেজন্য ১৯৬১সালে বার্লিন ওয়াল ও ১৯৬২ সালে কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। ইতিহাস সৃষ্টিকারী নিক্সন-জো এনলাই বৈঠক ॥ ১৯৭২ সালে রিচার্ড নিক্সন বৈঠক করেলেন একজন কমিউনিস্ট শাসকের সঙ্গে। নিক্সন চীনের গ্রেট ওয়াল অব চায়না পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি তিনি চীনা প্রিমিয়ার জো এনলাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বসেন। তাদের ছবি দেখে অনেকের মধ্যে বিস্ময়ের উদ্রেক করে। রিগ্যান-সুহার্তো বৈঠক ॥ ইন্দোনেশিয়ার কঠোর সেনাশাসক সুহার্তো ১৯৬০ সালে যখন ক্ষমতা দখল করেন তখন তিনি পাঁচ লাখ বামপন্থীকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি যখন ইস্ট তিমুর আগ্রাসন ও দখল করেন তখন দুই লাখ লোককে হত্যা করা হয়। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট লাইডন বি. জনসন থেকে গেরাল্ড ফোর্ডের নেতৃত্বে সুহার্তোর কমিউনিস্ট বিরোধী বাহিনীর অভিযান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অভিযানের কঠোর সমালোচনা করা হয়। রিগ্যান মার্কিন সমর্থনে এমনকি সুহার্তো ও তার স্ত্রীকে হোয়াইট হাউসে ১৯৮২ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় স্বাগত জানান হয়। বুশ-যুবরাজ আবদুল্লাহ বৈঠক ॥ ২০০৫ সালে যখন জর্জ ডব্লিউ বুশ টেক্সাসের ক্রফোর্ডে পৌঁছান তখন যুবরাজ আবদুল্লাহ তাকে চুমু দেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ থেকে ১৯ সৌদি নাগরিকরা বিমান ছিনতাই করে টুইন টাওয়ারে হামলা চালান। যা ওসামা বিন লাদেনের নির্দেশে হয়েছিল। যা নিয়ে দুদেশের কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। ক্লিনটন-কিম জং ইল ॥ ২০০৯ সালে কিম জং ইলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে হাসি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। সে সময় তিনি দক্ষিণ কোরিয়া সফর করছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার কিম ইলও হাসেননি। ওবামা-মুবারক ॥ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন মিসরের প্রেসিডেন্ট হুসনি মুবারকের সঙ্গে বৈঠক করেন তখন ওবামাকে ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল। ২০১০ সালে পরে আবার তাদের দুজনের সঙ্গে দেখা হয় সে সময় মুবারক শুরু হলো মাত্র বলে ঘোষণা করেন। ট্রাম্প-পুতিন ॥ ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের পর ট্রাম্প পুতিনকে তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। ২০১৭সালের জুলাই মাসে জার্মানির হামবুর্গে জি ২০ সমম্মেলনে ট্রাম্প ও পুতিন একসঙ্গে অনেকটা সময় অতিবাহিত করেন।
×