ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যৌথ ঘোষণা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১১ জুন ২০১৮

যৌথ ঘোষণা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কানাডার ‘অসততা’কে দায়ী করে জি-সেভেন সম্মেলন শেষে স্বাক্ষরিত যৌথ ঘোষণা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শিল্পোন্নত অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ‘বড় ধরনের শুল্ক’ আরোপ করে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। খবর বিবিসির। ইস্পাত ও এ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কানাডার সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের মতবিরোধ চলছিল। তা সত্ত্বেও শিল্পোন্নত দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা জি-৭ সম্মেলনে ‘নিয়মানুযায়ী বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায়’ সমর্থন জানিয়ে যৌথ প্রজ্ঞাপনে সম্মত হয়েছিলেন। ট্রাম্পের প্রত্যাহারের পর ওই প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ার আগেই সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে করা এক টুইটে ট্রাম্প যৌথ ঘোষণা থেকে সরে আসার কথা জানান। তিনি বলেন, জি-৭ সম্মেলনে থাকা মার্কিন প্রতিনিধিদের যৌথ ওই প্রজ্ঞাপনটি অনুমোদন না করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছেয়ে যাওয়া অটোমোবাইল পণ্যের শুল্কের পরিমাণও খতিয়ে দেখা হবে। নিজের এই সিদ্ধান্তের জন্য সংবাদ সম্মেলনে দেয়া ট্রুডোর ‘মিথ্যা বিবৃতি’ এবং মার্কিন কৃষক, শ্রমিক ও কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডার আরোপিত ‘বিশাল শুল্কের’ ওপরই দায় চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে ‘চরম অসৎ এবং দুর্বল’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন তিনি। ট্রাম্পের এই অবস্থানের পরপরই ১ জুলাই থেকে যুক্তরাষ্ট্র্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ট্রুডো। জাতীয় নিরাপত্তায় উদ্বেগের কথা বলে ইস্পাত ও এ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে শুল্ক বসিয়েছে তাকে ‘অপমানজনক’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। ‘খুবই দুঃখজনক হবে, তা সত্ত্বেও দৃঢ় ও স্পষ্ট করে জানাতে চাই, আমরা ১ জুলাই থেকে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার পথেই অগ্রসর হব। কানাডার নাগরিকরা নম্র ও যুক্তিসঙ্গত আচরণ করলেও আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে, তা দেখতে চাইব না আমরা,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন ট্রুডো। আগে বলা হয়নি, এমন নতুন কোন কথা ট্রুডোর বক্তব্যে নেই, জনসম্মুখে এবং ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলোচনাতেও ট্রুডো এসব বারবারই বলেছেন বলে পরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ইইউ বলেছে, ট্রাম্পের প্রত্যাহার সত্ত্বেও যৌথ প্রজ্ঞাপন অটুট থাকবে। ‘জি-সেভেনের ঘোষণায় যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, আমরা তার পক্ষেই আছি,’ যুক্তরাজ্য সরকারের এক শীর্ষ সূত্র এমনটাই বলেছেন। শুল্ক ও বাণিজ্য নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ট্রাম্প শিল্পোন্নত সাত দেশের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে হওয়া যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জি-সেভেন দেশগুলোর মধ্যে ‘শুল্ক মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার’ প্রস্তাব এবং অন্য দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ‘চমৎকার গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপ করা বিশাল শুল্ক এবং মার্কিন কৃষক, শ্রমিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য বাধা অনুমোদন করবেন না বলেও টুইটারে জোর দিয়ে বলেছিলেন তিনি। ‘দশকের পর দশক ধরে অন্যরা সুবিধা নিয়েছে’ অভিযোগ করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি ‘মাটির ব্যাংক’ হিসেবেও অভিহিত করেন, যেখান থেকে ‘সবাই চুরি করছে’। কানাডার কেব্যাক প্রদেশের লা মালবেতে হওয়ার এবারের জি-সেভেন সম্মেলনে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক, ইরান ও প্যারিস চুক্তি নিয়েও আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স ও কানাডার সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। সম্মেলনের শুরুতেই রাশিয়াকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোটে ফেরাতে প্রস্তাব করেন ট্রাম্প। ইতালি সমর্থন জানালেও ইউরোপের বাকি দেশগুলো প্রস্তাবে আপত্তি জানায়। ক্রেমলিনও জানিয়েছে, জি-সেভেন বাদে অন্য কোন ব্যবস্থায় আগ্রহী তারা। মস্কো ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করে নেয়ার পর ২০১৪ সালে জি-এইট থেকে রাশিয়াকে বের করে দেয়া হলে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোটটি ফের জি-সেভেন হিসেবে পরিচিতি পায়। নাফটা চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের দাবি প্রত্যাখ্যান ট্রুডোর ॥ এদিকে সিএনজি জানায়, নাফটা ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সানসেট ক্লজ’-এর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শনিবার তিনি নিজ দেশের এমন অবস্থানের জানান দেন। সানসেট ক্লজ অনুযায়ী, চুক্তিটি পাঁচ বছর পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত হয়ে পড়ার কথা। কিন্তু জাস্টিন ট্রুডো মনে করেন, সানসেট ক্লজসহ চুক্তি আসলে কোন চুক্তির আওতায় পড়ে না। তবে বিষয়টি নিয়ে আপোসরফায় তিনি প্রস্তুত ছিলেন। ট্রাম্প নিয়মিতভাবেই এই নাফটা চুক্তি (নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন। তার দাবি, চুক্তিটি পাঁচ বছর পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত হয়ে পড়বে। তবে ট্রাম্পের এমন দাবিকে অকার্যকর হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে কানাডা ও মেক্সিকো। শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, নতুন চুক্তিতে এই সানসেট ক্লজের বিধান থাকবে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন ট্রুডো। জি-৭ সম্মেলন শেষে কানাডার কুইবেকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এখানে কোন সানসেট ক্লজ থাকবে না। আমরা এমন চুক্তি করব না, যা প্রতি পাঁচ বছর পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, আমি মনে করি এখানে বিকল্পগুলোর বিষয়ে নানা আলোচনা হতে পারে। কিন্তু সেটা একটা বাণিজ্য চুক্তিকে পুরোপুরি অস্থিতিশীল করে দেয়া নয়। তবে আমি মনে করি, সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে আমরা উন্মুক্ত। কর্মকর্তারা বলেছেন, কানাডা ও মেক্সিকোর প্রস্তাব হচ্ছে, প্রতি পাঁচ বছর পর পর চুক্তিটি পর্যালোচনায় একত্রিত হবে এতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো। নির্বাচনী প্রচারকালে ট্রাম্প নাফটার নিন্দা জানিয়েছিলেন। সে সময় অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে নাফটা চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও সহায়ক করতে পুনরায় আলোচনা শুরু করবেন। চুক্তিতে বড় ধরনের সংস্কার না আনলে এবং মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষিত না হলে চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়ারও হুমকি দিয়ে আসছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, তিন দেশের আলোচনায় খুব একটা অগ্রগতি না হওয়ায় ট্রাম্প নাফটা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা ভাবছেন। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, নাফটার মতো চুক্তির ক্ষেত্রে সব অংশীদার রাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের বিষয়ে অবগত করার মাধ্যমে যে কোনও স্বাক্ষরকৃত রাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। চূড়ান্তভাবে চুক্তি প্রত্যাহারের আগে নতুন করে আলোচনার জন্য আরও ছয় মাস সময় দেয়া হয়। তবে ছয় মাসের নোটিস দিলেও ট্রাম্প যে নাফটা চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নেই। চুক্তি থেকে সরে আসার নোটিস কংগ্রেসে অনুমোদন পেতে হবে। আর কংগ্রেসেও এ নিয়ে ট্রাম্পকে বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে। এবারের জি সেভেন সম্মেলনে এ ইস্যুতে কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিবাদ চরমে পৌঁছায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন করে আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুুডো ১ জুলাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। কানাডা, মেক্সিকো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের জবাবে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। জবাবে কানাডাকে ‘অসৎ’ উল্লেখ করে সম্মেলন শেষে দেয়া যৌথ বিবৃতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জি সেভেন সম্মেলনে সাত দেশের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাজনক বাণিজ্য নিয়ে সমঝোতা হলেও শেষ মুহূর্তে সেখান থেকে সরে আসেন তিনি। কানাডায় অনুষ্ঠিত এবারের জি সেভেন সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাভিত্তিক বাণিজ্য নিয়ে মতৈক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছিলো। দুইদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি ও কানাডার নেতাদের মধ্যে তুমুল তর্ক-বিতর্কের পর শনিবার সমঝোতা হয়। পারস্পরিক সুবিধাভিত্তিক বাণিজ্যের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে আট পৃষ্ঠার যৌথ বিবৃতি ঘোষণা করে সাত দেশ। সংরক্ষণবাদ নীতি মোকাবেলা এবং বাণিজ্য বাধা দূর করার ব্যাপারে বিবৃতিতে অঙ্গীকার করা হয়। ট্রাম্পও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর সেতুবন্ধন রচনা করা গেলো না। সম্মেলন শেষ হতে না হতেই ওই বিবৃতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তার দাবি, অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ‘বিপুল শুল্ক’ আরোপ করছে। জি সেভেন সম্মেলন শেষ হওয়ার পর একটি সংবাদ সম্মেলন করেন ট্রুডো। সম্মেলনে তিনি বলেন, স্টিল ও এ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে ট্রাম্প যে নিজ দেশের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের যুক্তি দেখিয়েছেন তা ‘অপমানজনক’। ট্রুডো বলেন, ‘এটা আফসোসের বিষয়। তবে করতে হবে। আমরা ১ জুলাই থেকে স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিচ্ছি।’ শনিবার আগাম কানাডা ছাড়েন ট্রাম্প। ১২ জুন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক করতে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথেই একটি টুইট করে জি সেভেনের সমঝোতামূলক বিবৃতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, অটো মোবাইলের ওপর শুল্ক আরোপের জন্য তার দেশের কর্মকর্তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদেরকে জি সেভেনের যৌথ বিবৃতি অনুসরণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ‘সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া মিথ্যা বক্তব্যকে’ কেন্দ্র করে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ট্রাম্প। টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জি সেভেন সম্মেলনে নম্র-ভদ্র আচরণ করেছেন। আমি সেখান থেকে চলে আসার পর যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সেখানে তিনি বলেছেন ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ অপমানজনক’ এবং তাকে ‘দমিয়ে রাখা যাবে না’। তিনি খুব অসৎ ও দুর্বল। ডেইরি খাতে তার আরোপিত ২৭০ শতাংশ শুল্কের জবাবেই আমাদের শুল্ক।
×