ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জিতে রোমাঞ্চিত সিমোনা হ্যালেপ

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১১ জুন ২০১৮

  ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জিতে রোমাঞ্চিত সিমোনা হ্যালেপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমবার ২০১৪ সালে উঠেছিলেন ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে। কিন্তু সেবার দুরন্ত মারিয়া শারাপোভার কাছে হেরে শিরোপা জেতা হয়নি। এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে উঠেছিলেন ফাইনালে। তবে এবারও হতাশ হতে হয়েছিল ক্যারোলিন ওজনিয়াকির কাছে পরাজিত হয়ে। গত বছর রোল্যাঁ গ্যাঁরোতে ফাইনালে পেয়েছিলেন অবাছাই জেলেনা অস্টাপেঙ্কোকে। তবু শিরোপা জেতা হয়নি তার। কিন্তু অবশেষে চতুর্থবারের চেষ্টায় গ্র্যান্ডস্লাম চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছেন ২৬ বছর বয়সী রোমানিয়ার টেনিস তারকা সিমোনা হ্যালেপ। ফাইনালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ নম্বর বাছাই স্লোয়ান স্টিফেন্সকে ৩-৬, ৬-৪, ৬-১ সেটে পরাজিত করেন। পরে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে এ রোমান তরুণী জানিয়েছেন শেষ গেমটির সময় তার মনে হচ্ছিল নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বসেরা এ তারকা অবশ্য জানিয়েছেন গত বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন জিততে না পারাটাই ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় কষ্ট তার। একবার না পারিলে দেখ শতবার। হয়তো ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্যটা কাদামাটির কোর্টেই আসবে তা আগেই নির্ধারিত ছিল। কারণ ২০১০ সালে এই রোল্যাঁ গ্যাঁরোতেই বালিকা বিভাগে শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। এরপর ২০১৪ সালে এবং গত বছর মহিলা এককের ফাইনালে ওঠেন তিনি। কিন্তু দুইবারই ব্যর্থ হন। এর মধ্যে গত বছর ব্যর্থতাটাকে ভুলতে পারেন না কোনভাবেই। তখন বিশ্বের ৪ নম্বর র‌্যাঙ্কিংধারী ছিলেন তিনি, আর প্রতিপক্ষ অস্টাপেঙ্কো ছিলেন অবাছাই। এরপরও তিন সেটের লড়াইয়ে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছিলেন। তবে বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম হাতে তোলার গৌরব অর্জনের সুযোগ এসেছিল। এবার ওজনিয়াকির কাছে হেরে যান। যদিও বিশ্বের এক নম্বর হয়ে গেছেন ততোদিনে। এবার রোল্যাঁ গ্যাঁরোতে বছরের টানা দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম আসরের ফাইনালে উঠলেন তিনি, সবাই সন্দিহান ছিলেন হয়তো আবারও শিরোপাটাকে ছুঁতে পারবেন না। কারণ গত বছর ইউএস ওপেন জেতা মার্কিন কৃষ্ণ তারকা স্টিফেন্স দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। প্রতিপক্ষ হিসেবে তিনি সহজ হবেন না সেটা বোঝা গেছে খেলা শুরুর পরেও। প্রথম সেটেই সিমোনা ৩-৬ ব্যবধানে আত্মসমর্পন করেন। এরপরও হয়তো অতীত পরিসংখ্যান মাথায় রেখেই ধের্যহারা হননি সিমোনা। সর্বশেষ চারবারের মোকাবেলায় স্টিফেন্সের কাছে তিনি হারেননি একবারও। সবমিলিয়ে ৭ বারের মুখোমুখিতে ৫-২ ব্যবধানে স্টিফেন্সের ওপর লিড তার। যদিও ২৫ বছর বয়সী স্টিফেন্স ইনজুরি থেকে ফেরার পর থেকেই দারুণ ফর্মে আছেন। প্রথম সেট জিতে আরেকটি গ্র্যান্ডস্লাম হাতে তোলার ক্ষেত্রে শুরুটা দুর্দান্তই হয়েছিল তার। কিন্তু নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি পরের দুই সেটে। সিমোনা ম্যাচটিকে একপেশে করে ফেলেন। পরবর্তী দুই সেট জিতে যান ৬-৪, ৬-১ সেটে। সবমিলিয়ে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট। কিন্তু একটা সময় মনে হচ্ছিল স্টিফেন্স শিরোপা জিততে চলেছেন। প্রথম সেট জেতার পর দ্বিতীয় সেটেও তিনি ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বিস্ময়করভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সিমোনা। জিতে গেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম। তিনি এরপর বলেন, ‘শেষ গেমে আমার মনে হচ্ছিল নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। গত বছর হেরে যাওয়া আমার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে কষ্টের। আমি গত বছরের মতো একই জিনিস এবার না করার দিকে সচেষ্ট ছিলাম। এটা আমার স্বপ্ন ছিল এবং প্যারিসে এটা করতে পারা আমার জন্য বিশেষ কিছু। যখন আমি দ্বিতীয় সেটে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে একটি গেম জিতলাম, তখন আমি ম্যাচ উপভোগ করার দিকে মনোযোগী হয়েছি স্নায়ু শিথিল করে।’ ম্যাচ শেষে ফিলিপ চারটিয়ার কোর্টে উপস্থিত দর্শকরা দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন সাবেক তারকা মারিয়া বুয়েনোকে। ৭টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী ব্রাজিলিয়ান এ তারকা শুক্রবার ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
×