ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দিন

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ১০ জুন ২০১৮

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দিন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কানাডায় জি-সেভেন সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের নিজদেশে ফেরাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বাংলাদেশ-মিয়ানমার চুক্তির বাস্তবায়নসহ চারদফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শনিবার জি-সেভেন সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজ, ওয়েবসাইটের। এর আগে শনিবার জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনস্থলে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় কুইবেকের লা মালবের লে মানোর রিশেলো হোটেলে পৌঁছলে ট্রুডো তাকে স্বাগত জানান। এ সময় দুই প্রধানমন্ত্রী কুশল বিনিময় করেন এবং আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে অংশ নেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে কুইবেকে পৌঁছেন শেখ হাসিনা। কুইবেক সিটির জিন লিসএজ বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান কানাডায় বাংলাদেশের হাই কমিশনার মিজানুর রহমান ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক জনাথন সুভে। পরে সন্ধ্যায় জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতাদের সম্মানে কানাডার গবর্নর জেনারেল জুলি পায়াতের দেয়া নৈশভোজে অংশ নেন তিনি। বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সম্মানে এই নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, এই অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন জুয়ান ফুক, হাইতির প্রেসিডেন্ট ও ক্যারাবিয়ান কমিউনিটির চেয়ারপার্সন জোভেনাশ মইসসহ অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। কেব্যাকে হোটেল শ্যাতো ফঁতেনেক-এ অবস্থান করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব অর্থনীতির সাত পরাশক্তির জোট জি-সেভেনের সম্মেলনের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনার জন্য জোটের বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশকে আলাদা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একেই বলা হয় জি-সেভেন আউটরিচ মিটিং। এবার এই সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধান ও কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কানাডা সরকার। শেখ হাসিনা বৃহ¯পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে রওনা হয়ে দুবাই ও টরন্টোতে যাত্রাবিরতির পর কুইবেকে পৌঁছেন। জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জি টোয়েন্টি জোটের বর্তমান সভাপতি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট; ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ার হাইতির প্রেসিডেন্ট; জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী; কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট; মার্শাল আইল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট; নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী; আফ্রিকান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ার রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট; সেনেগালের প্রেসিডেন্ট; সেসেলসের প্রেসিডেন্ট; দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট; ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী; আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের এমডি; অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সেক্রেটারি জেনারেল; জাতিসংঘ মহাসচিব এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন। এ সময় কুশল বিনিময় করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে ২০১৬ সালে জাপানে এবং ২০০১ সালে ইতালিতে জি সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দেন। কানাডা ছাড়া জি সেভেনের বাকি ছয় সদস্য দেশ হল ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। এবারের আউটরিচ সম্মেলনে সমুদ্রকে দূষণ থেকে রক্ষা করা এবং উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিকূলতা মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় খুঁজতে আলোচনা হবে। সফরের তৃতীয় দিন রবিবার সকালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকের পর টরন্টো যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। টরন্টো থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সোমবার সকালে কানাডার মিয়ানমার বিষয়ক দূত বব রে, কানাডার সাসকাচোয়ান প্রদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী জেরেমি হ্যারিসন এবং কমার্শিয়াল কো-অপারেশন অব কানাডার প্রেসিডেন্ট মার্টিন জাবলোকি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। কানাডার স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে টরন্টো থেকে দেশের পথে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। দুবাইয়ে যাত্রাবিরতি করে মঙ্গলবার রাতে তার ঢাকা পৌঁছার কথা রয়েছে।
×