ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ১০ ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১০ জুন ২০১৮

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ১০ ব্যবস্থা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, ৯ জুন ॥ আসন্ন ঈদে দেশের অন্যতম যানজটপ্রবণ মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল যানজটমুক্ত রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। অতীতের সব ঈদযাত্রা থেকে এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘœ করতে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ক তিনটি সেক্টরে ভাগ করে ১০ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে ফোর লেনের নির্মাণ কাজের খোঁড়াখুঁড়ি ও খানা খন্দক নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন অনেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের যানজটপ্রবণ মহাসড়কের মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অন্যতম। এই মহাসড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ২৬টি জেলার ৮ থেকে ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। বছরের প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি যানজট লেগে থাকে সড়কটিতে। কোন কোন দিন যানজট দিন ও রাত গড়িয়ে যায়। এতে সাধারণ যাত্রী ও চালকদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ফোর লেনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে সড়কটিতে মানুষের দুর্ভোগ অনেকাংশে বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ধেরুয়া রেলক্রসিং যানজট সৃষ্টির অন্যতম একটি পয়েন্ট। যমুনা রেল সংযোগ সড়ক দিয়ে কমপক্ষে ১২টি ট্রেন চলাচল করে। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ধেরুয়া রেল ক্রসিংয়ে প্রতিদিন ২৪ বার বেরিয়ার ফেলতে হয়। এখানে সৃষ্ট যানজট কোন কোন সময় দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে ঈদের সময় এই দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। এই দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে ঈদের সময় মহাসড়কটিতে যানজটমুক্ত রাখতে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে মহাসড়কে ফোর লেনের নির্মাণ কাজের খোঁড়াখুঁড়ি ও খানাখন্দক নিয়ে শঙ্কা রয়েছে অনেকের মধ্যে। বৃষ্টি নামলেই গতি কমে যায় গাড়ির চাকার শুরু হয় যানজট। শনিবার সকাল ১১টায় মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাসে গিয়ে দেখা গেছে আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য উভয় পাশে মাটি গর্ত করা হয়েছে। অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে যানবাহন। নির্মাণ কাজে কর্তব্যরত প্রকৌশলী পাপ্পি বলেন, ঈদযাত্রার জন্য যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য আমরা নজর রাখছি। আন্ডারপাসের গর্ত খুব শীঘ্রই ভরে ফেলা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে মির্জাপুর অংশের যানজটপ্রবণ এলাকা মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে জামুর্কী পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার মহাসড়ককে দুইটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এতে ক্যাডেট কলেজ থেকে ধেরুয়া রেল গেট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে গোড়াই হাইওয়ে পুলিশ এবং ধেরুয়া থেকে জামুর্কী পর্য়ন্ত দায়িত্ব পালন করবে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের নির্দেশ মোতাবেক মির্জাপুর থানার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছে যানজটমুক্ত রাখতে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে। মির্জাপুর অংশে ১৭ টি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আইন -শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলে একটি সমন্বয় সভাও হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদের সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে কমপক্ষে ১০ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে ওসি মিজানুল হক জানিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল পেট্রোলিং, স্ট্রাইকিং ফোর্স, হোন্ডা মোবাইল, ফিক্সড ডিউটি, লিং রোডে বাঁশকল স্থাপন, রেকার ব্যবস্থা, ঈদের তিনদিন আগে ট্রাক লড়ি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করতে না দেয়া, আরিচা রোডের কালামপুর থেকে বালিয়া-উয়ার্শী-মির্জাপুর নতুন রাস্তাটি টাঙ্গাইল অভিমুখে সচল রাখা ও ফোর লেন নির্মাণ কাজে নিয়োজিতদের জরুরী মুহূর্তে প্রস্তুত রাখা। এছাড়া একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করবেন বলে মির্জাপুরের ইউএনও ইসরাত সাদমীন জানিয়েছেন। অন্যদিকে দুর্ঘটনা বা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরাও সতর্ক দৃষ্টিতে থাকবে বলে তিনি জানান। গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি একেএম কাউসার বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে এবং সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর রেলব্রিজ থেকে করটিয়া পাইপাস এলাকা পর্যন্ত মির্জাপুর হাইওয়ে পুলিশ প্রস্তুত থাকবে। এবারের ঈদে যানজট হবেনা বলে তিনি জানান।
×