ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় ঈদ বাজার

সব পথ গিয়ে মিলেছে হকার্স মার্কেটে

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ১০ জুন ২০১৮

সব পথ গিয়ে মিলেছে হকার্স মার্কেটে

সমুদ্র হক ॥ এখন আর কোন রাখ ঢাক নেই। সকল পথ মিলেছে বগুড়ার হকার্স মাকেটে। কি নেই সেখানে! আধুনিক মার্কেটগুলোতে যে পোশাক আছে তার প্রায় সবই আছে। যে মার্কেটে দিন কয়েক আগেও এত ভিড় ছিল না সেই মার্কেটে এখন প্রবেশ করাই কঠিন। বিত্তবান, মধ্যবিত্ত, স্বল্প আয়ের মানুষদের ভিড়ে ঠাসা। দোকানীদের একদ- ফুরসত নেই। ঈদের কেনাকাটা এখন একেবারে শেষের বেলা। কার কি বাদ পড়ল সেই হিসাব প্রায় প্রতিটি পরিবারে। উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের কয়েক সেট করে পোশাক। তাও মন ভরছে না। স্বজন পরিচিতজনের কাছে নতুন ডিজাইনের কোন পোশাকের কথা শুনলেই ভোঁ দৌড়। তা শো রুম হোক, নিউমার্কেট হোক আধুনিক মার্কেট হোক বা হকার্স মার্কেট হোক। যারা এতকাল হকার্স মার্কেটের কথা শুনলেই নাম সিটকাতো তারাও এখন সেই হকার্স মার্কেটমুখী। কেউ আভিজাত্যের ঠুনকো বড়াইয়ে মুখ না দেখিয়ে বোরকা পরে ঢুকছেন এই মার্কেটে। বগুড়া নগরীর কেন্দ্রস্থল সাতমাথা থেকে পশ্চিমের দিকে স্টেশন রোডের ধারে হকার্স মার্কেটের অবস্থান। নিকট অতীতে ছিল উন্মুক্ত। নাম ছিল নিক্সন মার্কেট। প্রবীণদের মুখে এখনও নিক্সন মার্কেটের পরিচিতি। শুরুতে দোকান ছিল উন্মুক্ত। তারপর ঝুপড়ি ঘর থেকে বর্তমানে ইট সিমেন্টের অবকাঠামোয় ঘিঞ্জি মার্কেট। এই হকার্স মার্কেটে এখন সকলেই ছুটছে। থ্রিপিস, টুপিস, কামিজ, শাড়ি, পাঞ্জাবি, জিনসের প্যান্ট, শিশুদের পোশাক, এমব্রয়ডারি, চুমকি কারচুপির কাজের পোশাকসহ বাহারি সকল পোশাকই মেলে এই মার্কেটে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো লেহেঙ্গা, মাশাককালি এবং পদ্মাবতী নামের পোশাকও ডিসপ্লে করা হয়েছে। দামে সাশ্রয়ী। দোকানী আজিজুর রহমান বললেন ‘ভাই অবহেলা করবেন না। ভোরে যখন গাইট ভাঙ্গা হয় তখন দেখবেন বড় দোকানের কত মালিক গাইটের পোশাক কিনে নিয়ে যায়। লন্ড্রিতে দিয়ে ধোলাই ও ক্যালেন্ডার করে প্যাকেটে এমনভাবে ভরবে যে ধাঁধা লেগে যাবে। এই পোশাক আবার শোরুমের ডলের গায়ে পরিয়ে রাখবে।’ তার কথা যে অমূলক নয় তা বোঝা গেল হকার্স মার্কেটকে ঘিরে গড়ে উঠেছে লন্ড্রি ও ফিটিং ব্যবসা। আরেক মহাজন বললেন, আধুনিক মার্কেটের বড় দোকানীরা ঢাকায় যে জায়গা থেকে পোশাক কেনে হকার্স মার্কেটের দোকানীরাও একই জায়গা থেকে কাপড় কেনে। কেউ ব্রান্ডের লোগো এঁটে নেয় কেউ ফাঁকা রাখে। বগুড়া হকার্স মার্কেটে নানা রঙের নানা বৈচিত্র্যের পোশাক মিলছে। দাম সাধ্যের মধ্যে। নিচে এক শ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা দামের মধ্যে। অনেকেই বলাবলি করে, হকার্স মার্কেটে পোশাকের দাম এত বেশি কেন হবে। তারাই যখন মার্কেট যাচাই করতে যায় তখন দেখে হকার্স মার্কেটে যার দাম হাঁকা হচ্ছে দুই হাজার টাকা আধুনিক মার্কেটে তার দাম পাঁচ হাজার টাকা। কখনও তারও বেশি। তখন তড়িঘড়ি ছোট হকার্স মার্কেটের দিকে। দেরিতে গেলে যদি সব হাতছাড়া হয়ে যায়। এই ভাবনায় ঈদের কেনাকাটার বেলা শেষে সকল পথ মিলে গিয়েছে বগুড়ার হকার্স মার্কেটে।
×