ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টার্গেট বাস্তবায়নযোগ্য ॥ যারা নির্বোধ ও যাদের দেশপ্রেম নেই তারা বাজেটকে ভুয়া বলছেন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৯ জুন ২০১৮

টার্গেট বাস্তবায়নযোগ্য ॥ যারা নির্বোধ ও যাদের দেশপ্রেম নেই তারা বাজেটকে ভুয়া বলছেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দরিদ্র অনাহারি থেকে বাংলাদেশ এখন উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, দেশে এখন কোন অভাব নেই, মঙ্গা উজার হয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। এটিই টানা দশটি বাজেটের বড় সাফল্য। তিনি বলেন, যারা নির্বোধ ও যাদের দেশপ্রেম নেই, তারাই বাজেটকে ভুয়া বলছেন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা যা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য বলে মনে করি। শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে কম বিনিয়োগ ও রাজস্ব আদায় সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। এটাও এই সরকারের কৃতিত্ব। সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমাদের সম্পদ ব্যবহার এত ভাল যে, অল্প বিনিয়োগে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬ এবং আগামী অর্থবছরে অল্প বিনিয়োগেও সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হবো। তবে অর্থমন্ত্রী এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য সরকারের বিকেন্দ্রীকরণে গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী না হলে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য স্থানীয় সরকারে বিবর্তন আনতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই বিবর্তন এক সময় হবে এবং ততদিন তিনি বেঁচে থাকবেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা বলছেন, এটি গরিব মারার বাজেট কিংবা ভুয়া বাজেট, তারা অর্থহীন কথাবার্তা বলছেন। শুধু তাই নয়, যারা দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তন স্বীকার করে না, তারা মিথ্যা বলছেন। তিনি বলেন, যারা নির্বোধ ও যাদের দেশপ্রেম নেই, তারাই বাজেটকে ভুয়া বলে। ভুয়া বাজেট বলে কিছু নেই। বাজেট যখন দেই, সেটা ভেবেই দেই। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা যা নির্ধারণ করেছি, তা বাস্তবায়নযোগ্য বলে মনে করি। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিটি বাজেটই নির্বাচনী বাজেট। আমি একটি দলের সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সে হিসেবে আমার বাজেট নির্বাচনী বাজেটই হবে। আমি এমন বাজেট দেই যেটা মানুষ পছন্দ করবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ আগে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করতেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে ওই সময় বিদেশ যেতে হতো ভিক্ষে করতে। কারণ সেসময় বাজেটের তিনগুণ টাকা বিদেশী সহায়তা প্রয়োজন হতো আমাদের। আর এখন, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে সম্মান দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, ৭০ শতাংশ থেকে দারিদ্র্যের হার এখন মাত্র ২২ শতাংশ। তাহলে দারিদ্র্য কমেনি? এটা কি অর্জন নয়?। তাহলে এটি গরিব মারার বাজেট কীভাবে হয়? সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে ভ্যাট থাকছে না, ব্যাংকি কমিশন করবে নতুন সরকার ॥ অনলাইন কেনাকাটায় কোন ভ্যাট থাকছে না। এটার ছাপার ভুল বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তবে গুগল ও ইউটিউবে কর বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাংকিং কমিশনের কাগজপত্র তৈরি করা আছে। আগামী বছর নতুন সরকার এসে এ সংক্রান্ত বাকি কাজ এগিয়ে নিবেন। তিনি বলেন, পরবর্তী সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেয়া হবে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয় ব্যাংক কমিশন গঠনের ব্যাপারে। এর আগে ব্যাংক কমিশন করার কথা তিনি একাধিকবার বলেছেন। বাজেটের পরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। বিষয়টি তুলে ধরলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক সংস্কারে কোন কমিশন করছি না। সব কাগজপত্র তৈরি করছিলাম। এটা পরবর্তী সরকারের কাছে দিয়ে যাব। তারা এটা করবে। সঞ্চয়পত্র নিয়ে বাজেটে কোন বক্তব্য না থাকার ব্যাখ্যায় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি (সঞ্চয়পত্রে) যে মুনাফা পাওয়া যায় সেটা নিয়ে সভা দিয়েছিলাম, সভা করতে পারিনি। সবশেষ ২০১৫ সালের ১০ মে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদ হার গড়ে ২ শতাংশ কমানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেনি। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার দুই-তিন বছর পর পর পর্যালোচনা করার কথা জানিয়ে মুহিত বলেন, এবার একটু দেরি হয়েছে, পরের মাসে রিভিউ হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ভার্চুয়াল বিজনেস যেমন ইউটিউব, ফেসবুক এগুলোর ওপর ট্যাক্স ধার্য করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কিন্তু অনলাইন বিজনেস আমরা আলাদা করেছি, এটার ওপর ভ্যাট বসাইনি। তিনি বলেন, বর্তমানে ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয় যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পণ্য বা সেবার পরিসরকে আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ভার্চুয়াল বিজনেস নামে একটি সেবার সংজ্ঞা সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পাশে আছে। এরপরও আগামী বাজেটে প্রয়োজনে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হবে। বৈদেশিক ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা অনেক ভাল। ঋণ এনে তা বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এর ফলে কর্মসংস্থান বাড়বে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ঋণ করে ঘি খাইনি। ঋণের টাকা উৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করা হয়েছে। অর্থসচিব বলেন, সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতির রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলো এগিয়ে নেয়া হবে। সরকারী চাকুরেদের বেতন ভাড়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আর কত সুবিধা চান সরকারী চাকুরেরা? তিনি বলেন, সরকারী চাকুরেদের যেসব সুযোগ-সুবিধা বর্তমান সরকার দিয়েছে এর আগে তারা জীবনে তা চোখেও দেখিনি। বেতন ৪০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বল্প সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গরিব মারার বাজেট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী রেগে বলেন, আপনাদের দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনের প্রশ্ন একেবারে অমূলক। একেবারে বাস্তবতা বিবর্জিত। সেই কারণে একটু ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম। আই অ্যাম ভেরি স্যরি ফর দ্যাট। এর আগে অর্থমন্ত্রী মন্তব্য করেন, দেশের উন্নয়ন চিত্র তথা পরিবর্তনের কথা স্বীকার করেন না সাংবাদিকরা। প্রস্তাবিত বাজেটকে গরিব মারার বাজেট উল্লেখ করে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বাড়ছে না। যিনি বলছেন দারিদ্র্য বাড়ছে, তিনি মিথ্যাবাদী। দেশে বৈষম্যও বাড়েনি। আপনারা এমন সব প্রশ্ন করছেন যে, আমার পক্ষে এগুলো সম্পর্কে বলতেও লজ্জা লাগে। আপনারা সাংবাদিক-শিক্ষিত লোক, কিন্তু দেশের পরিবর্তন স্বীকার করেন না। এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন সাড়ে ২২ শতাংশ লোক দরিদ্র। সাত বছর আগেও এ দেশে ৩০ শতাংশ লোক দরিদ্র ছিল। এখন তা ২২ শতাংশে কমে এসেছে। তবুও মানুষ কীভাবে বলে দরিদ্রতা বাড়ছে? চূড়ান্ত দরিদ্র মানুষ আগে ছিল ১৮ শতাংশ। সেটা এখন ১১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। কোন মুখে আপনারা বলেন এটা গরিব মারার বাজেট। অর্থসচিব বলেন, সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতির রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলো এগিয়ে নেয়া হবে। তিনি বলেন, সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতির বাস্তবায়ন নিয়ে এখন আলোচনা শুরু হলো। এই আলোচনা চলতে থাকবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এজন্য পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করার পাশাপাশি একটি পৃথক অফিস নেয়ার প্রয়োজন হবে। এসব কাজ আগামী বাজেটে শুরু করা হবে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ঋণ করে ঘি খাইনি। ঋণের টাকা উৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করা হয়েছে। বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ঋণ করে আবার তা যথাসময়ে ফেরত দিচ্ছে। ঋণের টাকা দিয়ে সার কিনছে, বিদ্যুত উৎপাদন করছে আর এ কারণে দ্রুত অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, উন্নয়নশীন দেশগুলো ঋণ করে অবকাঠামোর উন্নয়ন করে থাকে। দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে সাংবাদিকদের সমালোচনার মুখে তিনি বলেন, গত দশ বছরে সাড়ে তিন হাজার শাখা খোলা হয়েছে। এখন গ্রামাঞ্চলেও ব্যাংকের শাখা রয়েছে। মানুষ দশ টাকা দিয়ে হিসাব খুলতে পারছেন। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার কমেছে। শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এটা বর্তমান সরকারের বড় অর্জন। তিনি বলেন, এই বাজেটে মহিলাদের প্রসাধনী সামগ্রীর দাম একটু বাড়ানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এতে কোন বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই। মতিয়া চৌধুরী বলেন, এ বছর কৃষিতে ভর্তুকি বাড়ানো হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিতেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আজম বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১৯৮ মার্কিন ডলার। এই মুহূর্তে ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ জমা আছে। প্রতিবছর ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হয়, যা মোটেও ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তিনি আরও বলেন, এ বছর ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় হবে। ১ বিলিয়ন ডিসভার্স করার পরও আমাদের হাতে ৫ বিলিয়ন ডলার জমা থাকবে। প্রতিবছর আমাদের ২ হাজার কোটি টাকা সুদ দিতে হয়, যা খুবই নমিনাল। কর্মসংস্থান সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার এগিয়ে আছে। গত বছর সরকার দেশে ১৩ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। আমরা ১০ লাখ লোককে বিদেশে পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, যারা একসময় গৃহে কাজ করতেন, যাদের কাজের জন্য কোন পারিশ্রমিক দেয়া হতো না, এমন প্রায় ১৩ লাখ মানুষকে কর্মসংস্থানের আওতায় আনা হয়েছে। যে পরিমাণ জনগোষ্ঠী কর্মজীবনে আছেন, তার চেয়ে বেশি জনগোষ্ঠীকে আমরা কর্মসংস্থানের আওতায় আনতে পেরেছি, এটি আমাদের বড় অর্জন। তিনি আরও বলেন, অনেকে এক সময় আমাদের বিশ্বভিক্ষুক হিসেবে দেখতেন। এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে আমরা ছিলাম। ওই পরিস্থিতির মধ্যে এখন আমরা নেই। এক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর (আবুল মাল আবদুল মুহিত) বিশেষ অবদান রয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, একসময় যে পাশ্চাত্য আমাদের তলাবিহীন ঝুড়ি ও হতাশার ঝুড়ি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল, আমাদের অগ্রগতি দেখে তারাই এখন প্রশংসা করছে। জাতিসংঘের মহাসচিব ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল আখ্যা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, এবারের বাজেট অনেক ভাল হয়েছে। এই বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো হবে। শুধু তাই নয়, বাজেটে সরকারী বিনিয়োগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আশা করছি, এর ফলে দেশের বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুত এক জিনিস নয়। জ্বালানি হচ্ছে বিদ্যুত উৎপাদনের প্রথম ধাপ। তাই জ্বালানির চেয়ে বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ ও বরাদ্দ করা হয়। তিনি বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুত সুবিধার আওতায় রয়েছেন। পর্যায়ক্রমে দেশের সবাই বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির বলেন, ব্যাংকগুলোর তারল্য সঙ্কট এখন দূর হয়েছে। এছাড়া বাজেটে কর্পোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। বাজেটে এসব উদ্যোগ থাকায় সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে।
×