ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাকিল আহমেদ

ওয়েস্টার্ন পোশাকে ঈদ

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ৮ জুন ২০১৮

ওয়েস্টার্ন পোশাকে ঈদ

ফ্যাশন এমন একটি বিষয় যা কোন ভৌগোলিক সীমা রেখায় বা সময় দিয়ে আটকানো যায় না। স্যাটেলাইটের এই যুগে তাই তো আমাদের দেশের ফ্যাশনেও ফিরে এসেছে পাশ্চাত্যের হাওয়া। দেশীয় পোশাকে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া ফ্যাশনে এনেছে অভিনবত্ব। দেশীয় পোশাকের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কিছুটা বিবর্তিত হয়ে পাশ্চাত্যের পোশাক এখন তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউস তরুণদের জন্য রাখছে আলাদা সেল। ফ্যাশন নিয়ত পরিবর্তনশীল। বাঙালী মেয়েদের শাড়ি থেকে শুরু করে হালের ওয়েস্টার্ন পোশাক পর্যন্ত বিবর্তনের ধারা চলমান। পার্টি, জমকালো কোন অনুষ্ঠান কিংবা নিজ বাড়িতেও এ বিবর্তন লক্ষণীয়। নিত্যনতুন ফ্যাশন যেমন আসে, তেমনি পুরনো ফ্যাশনগুলোও আসে ঘুরেফিরে। আমাদের দেশে ওয়েস্টার্ন পোশাকের ফ্যাশন শুরু হয়েছে অনেক দিন আগেই। কিন্তু এখনও এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ এর বৈচিত্র্য। একই পোশাকে নতুন নতুন ডিজাইন ও কাটিং থাকছে। ফ্যাশন হাউসগুলো পশ্চিমা এসব পোশাকে করছেন নানা ধরনের নিরীক্ষা। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে ফিউশনধর্মী পোশাক। অনেক পোশাকে থাকছে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ছাপ। বর্তমানে এসব ওয়েস্টার্ন ড্রেসের মধ্যে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছে টি-শার্ট, নানা ডিজাইনের টপস, স্কার্ট, ফ্যাশনেবল জিন্স, লং কুর্তা, লং স্কাট, ম্যাক্সিড্রেস ইত্যাদি। মেয়েদের আধুনিক পোশাক তৈরিতে পাশ্চাত্য ফ্যাশনের চল শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। তখন থেকেই তরুণীদের পছন্দ আর জনপ্রিয়তা দু’দিকেই এগিয়েছে এ পাশ্চাত্য ঢঙের পোশাকগুলো। সময়ের সঙ্গে এ পোশাকগুলোতে যুক্ত হয়েছে প্রাচ্যের স্টাইল। বর্তমানে ওয়েস্টার্ন এ পোশাকগুলোর কাপড় ও বুননে দেয়া হচ্ছে দেশীয় আমেজ। বর্তমান ট্রেন্ডে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক থেকে শুরু করে ওয়েস্টার্ন পোশাকও আছে তরুণীদের পছন্দের তালিকায়। যারা ফ্যাশন-সচেতন, তাদের কাছে দেশীয় পোশাক যেমন পছন্দের, একই সঙ্গে তারা পছন্দ করেন ওয়েস্টার্ন পোশাক। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণী থেকে শুরু করে এক্সিকিউটিভ লেভেলের নারী-পুরুষেরাও আজকাল ওয়েস্টার্ন পোশাক পরছেন। গরমে স্বস্তির জন্য বর্তমান সময়ে ওয়েস্টার্ন পোশাকে এসেছে নানা বৈচিত্র্য। ওয়েস্টার্ন পোশাকে আপনার ফ্যাশন কেমন হবে তা নির্ভর করে ড্রেসকোডের ওপর। যেমন- অফিসিয়াল লুকে শার্ট-প্যান্ট থাকলে তার সঙ্গে মানিয়ে জুতা পরতে পারেন। পার্টি বা দৈনন্দিন পোশাক হিসেবে অনেকেই পছন্দ করেন ফ্যাশনেবল টপস বা কুর্তা। টপসের দৈর্ঘ্য আগের তুলনায় বেড়েছে। দেশীয় উপাদানের সঙ্গে ওয়েস্টার্ন কাট যুক্ত হয়েছে। আগে শর্ট টপসের প্রচলন বেশি থাকলেও এখন হাঁটু সমান বা তার থেকে লম্বা টপসের প্রচলন বেশি দেখা যায়। ওয়েস্টার্ন ড্রেস দুই ধরনের হয়। ক্যাজুয়াল ও ফর্মাল। ক্যাজুয়াল ড্রেস আর ফর্মাল ড্রেসের সাজ অবশ্যই ভিন্ন ধরনের হবে। ফরমাল প্যান্ট-শার্ট পরলে সাজগোজ হবে একদমই সীমিত। হাল্কা মেকআপের সঙ্গে হাল্কা অর্নামেন্টস। ক্যাজুয়াল প্যান্টের সঙ্গে ফতুয়া বা টপস পরলে কানে বড় দুল ও হাতে মোটা চুড়ি পরতে পারেন। ক্যাজুয়াল শার্টের সঙ্গে বড় মালা ভাল লাগবে। এ ধরনের ড্রেসে ছোট গহনা ভাল লাগবে না। সবচেয়ে মানানসই হলো মাটির গহনা। প্যান্টের সঙ্গে টি-শার্ট পরলে কানে ও গলার গহনানির্ভর করে টি-শার্টের গলার ধরনের ওপর। হাই নেক টি-শার্টে গলা আড়ালে থাকে বলে গহনা পরা যায় না। লো নেক টি-শার্টে গলায় লকেট পরতে পারেন। কিন্তু টি-শার্টে অনেক কাজ করা থাকলে গলায় কিছু না পরাই ভাল। এর সঙ্গে টিপ পরতে পারেন কালার দিয়ে। তবে ড্রেসের রঙের সঙ্গে মানানসই টিপ পরা উচিত। ফরমাল ড্রেস রাতে পরলে প্যান্ট-শার্টের ক্ষেত্রে চুল খোলা রাখাটাই বাঞ্ছনীয়। এখন যেহেতু গরম, তাই টি-শার্ট বা টপসের সঙ্গে মানিয়ে পরতে পারেন টাইস বা লেগিন্স। অথবা অন্য ধরনের জিন্স প্যান্টের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন ভিন্ন ডিজাইনের জুতাও। ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সঙ্গে ফুল কোনভাবেই যায় না। ফরমাল বা ক্যাজুয়াল ড্রেস যাই হোক না কেন, ড্রেসের ধরনের পাশাপাশি মেকআপ হতে হবে দিন-রাতের ওপর নির্ভর করে। স্কার্ট এখন আর পশ্চিমা পোশাকের তালিকায় নেই। দেশীয় কাপড় আর ডিজাইনে ঘরে-বাইরে সব জায়গায় পরার উপযুক্ত করে তৈরি হচ্ছে স্কার্ট। পাশ্চাত্যের ড্রেস পরার আগে মনে রাখতে হবে এটা আমাদের রুচি, সংস্কৃতি ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য ও দৃষ্টিনন্দন কি না। সেই সঙ্গে ড্রেসটা তাকে মানাচ্ছে কি না। আপনার পছন্দের ওয়েস্টার্ন পোশাক কিনতে যেতে পারেন ইজি, এক্সট্যাসি, ক্যাটস আই, আলফোসি, ট্রেন্জ, ইয়ালো, জেন্টাল পার্ক, লা রিভ, ইনফিনিটি, সেইলর, তামিমস লাইফস্টাইলসসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে। তুলনামূলক কম দামে কিনতে চাইলে যেতে পারেন নিউমার্কেট, ধানম-ি হকার্স, বঙ্গবাজার কিংবা মিরপুরে।
×