ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিমিয়ার হকি লীগের সুপার ফাইভ, নিলয়ের হ্যাটট্রিকে মেরিনার ইয়াংসের বড় জয়, আবাহনী ৩-২ মোহামেডান

মোহামেডানকে হারিয়ে প্রতিশোধ আবাহনীর

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৫ জুন ২০১৮

মোহামেডানকে হারিয়ে প্রতিশোধ আবাহনীর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জমে উঠেছে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লীগের সুপার ফাইভ পর্ব। সোমবারের খেলায় বড় জয় কুড়িয়ে নিয়েছে ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব। ঢাকার গুলিস্তানের মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় ৯-১ গোলে তারা বিধ্বস্ত করে এ্যাজাক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে। অপর উত্তেজনাকর এবং হাইভোল্টেজ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেড ৩-২ গোলে হারায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে। এই জয়ে প্রতিশোধটা কড়ায়-গ-ায় নিল আবাহনী। কেননা এই লীগের প্রথম পর্বে তারা ১-২ গোলে হেরেছিল মোহামেডানের কাছে। চলতি লীগে অপরাজিত থাকার গৌরব হারাল মোহামেডান। নিজেদের চতুর্দশ ম্যাচে এটা আবাহনীর দ্বাদশ জয় (সুপার লীগের ৩ ম্যাচের প্রতিটিতেই জয়)। পয়েন্ট ৩৬ (সুপার লীগে পয়েন্ট ৯)। পক্ষান্তরে ত্রয়োদশ ম্যাচে এটা মোহামেডানের প্রথম হার (সুপার লীগে ২ ম্যাচে ১ হার)। তাদের পয়েন্টও ৩৬ (সুপার লীগে পয়েন্ট ৩)। এদিকে মেরিনারেরও পয়েন্ট ৩৬ (১৩ ম্যাচে)। ৬ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় সর্বাধিক পাঁচবারের লীগ শিরোপাধারী আবাহনী। কৃষ্ণ কুমারের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্ত থেকে রোমান সরকারের বাড়িয়ে দেয়া বলে সংযোগ করে বিপক্ষ দলের পোস্টে ঠেলে দেন তাজউদ্দিন (১-০)। ১২ মিনিটে সমতা আনে চারবারের লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। বল নিয়ে আবাহনীর সার্কেলে ঢুকে ডান প্রান্ত থেকে রিভার্স হিটে গোলরক্ষক আবু সাঈদ নিপ্পনকে পরাস্ত করেন গুরজিন্দর সিং (১-১)। ২১ মিনিটে আবাহনীর আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন মোহামেডানের খালেদ মাহমুদ রাকিন। ২৪ মিনিটে প্রথম পিসি আদায় করে নেয় মাহবুব হারুনের শিষ্যরা। কৃষ্ণর পুশ স্টপ করেন সারোয়ার। আশরাফুল ইসলামের ড্রাগ ফ্লিক ফিরে আসলেও রিভার্স হিটে লক্ষ্যভেদ করেন রোমান সরকার (২-১)। আবারও এগিয়ে যায় আবাহনী। প্রথমার্ধে এই স্কোরলাইনেই বিরতিতে যায় দু’দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পিসি পায় মোহামেডান। তবে গোল করতে ব্যর্থ হয়। পরের মিনিটেই আবারও পিসি পায় তারা। এবার শমসের সিংয়ের পুশ স্টপ করেন পিন্টু। চমৎকার জোরালো রিভার্স হিটে গোল করেন গুরজিন্দর সিং (২-২)। আবারও সমতায় ফেরে সাদা-কালোরা। চাপে পড়ে যায় আবাহনী। ৪৩ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে মোহামেডানের গুরজিন্দরের রিভার্স হিট পোস্টের খুব কাছে দাঁড়িয়ে থাকা অজিত কুমার সংযোগ করতে পারলেই নিশ্চিত গোল হতো। কিন্তু সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ৪৮ মিনিটে মোহামেডানের শামশের সিং-পিন্টু-জিমির কম্বিনেশন মিস হয়। পরের মুহূর্তেই আবারও পিসি। এবারও ব্যর্থ হয় সাদা-কালোরা। ৫১ মিনিটে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে টার্ফে। হকিস্টিক উঁচিয়ে এগিয়ে যান মোহামেডানের জিমি, ক্ষেপে যান আবাহনীর গোলরক্ষক নিপ্পন-ও। তিনিও একই ভঙ্গি করেন। সতীর্থরা উভয়কেই আটকান। কিন্তু এবার বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন বাকিরাও। ফলে বন্ধ থাকে ম্যাচ প্রায় ১০ মিনিটের মতো। উত্তেজনা প্রশমিত হলে আবারও খেলা শুরুর কয়েক মিনিট পরেই আচমকা গোল করে বসে আবাহনী। বক্সের ভেতর রিভার্স হিটে চমৎকার গোল করে আবারও আবাহনীকে এগিয়ে দেন রোমান (৩-২)। গোল খেয়ে সেটা শোধের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেও সফলকাম হতে পারেনি মোহামেডান। শেষ মুহূর্তে পিসি পেয়েও গোল করতে না পারলে জয়ের উল্লাসে ফেটে পড়ে আবাহনী। লীগের প্রথম পর্বে মেরিনার ৬-০ গোলে হারিয়েছিল এ্যাজাক্সকে। নিজেদের ত্রয়োদশ ম্যাচে এটা মেরিনারের দ্বাদশ জয় (সুপার ফাইভে দ্বিতীয় ম্যাচে দ্বিতীয় জয়)। পয়েন্ট ৩৬ (সুপার ফাইভে ৬ পয়েন্ট)। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা এ্যাজাক্সের সপ্তম হার (সুপার ফাইভে তৃতীয় ম্যাচে তৃতীয় হার)। পয়েন্ট ১৯ (সুপার ফাইভে এখনও পয়েন্টশূন্য)। খেলার প্রথমার্ধে ৫-০ গোলে এগিয়েছিল বিজয়ী দল। পুরো ম্যাচে মেরিনার পিসি পায় ৫টি, এ্যাজাক্স পায় ১টি। খেলার সপ্তম মিনিটেই গোলের হালখাতা খোলে লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মেরিনার। মিসরীয় ফরোয়ার্ড আহমেদ মোহসেনের ফিল্ড গোলে এগিয়ে যায় মেরিনার (১-০)। দুই মিনিট পরেই হাসান যুবায়ের নিলয় ফিল্ড গোল করে দ্বিগুণ করেন ব্যবধান (২-০)। ১৩ মিনিটে রেজাউল করিম বাবু ফিল্ড গোল করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-০। ২৯ মিনিটে ভারতের পরমপ্রীত সিং ফিল্ড গোল করেন (৪-০)। পুস্কর খিসা মিমো একক প্রচেষ্টায বক্সে ঢুকে চমৎকার হিটে গোল করলে ব্যবধান আরও বাড়ায় মেরিনার (৫-০)। বিরতির পরেও গোলবন্যা অব্যাহত রাখে মেরিনার। ৪৬ মিনিটে আবারও গোল করেন নিলয় (৬-০)। ৬১ মিনিটে এ্যাজাক্সের হৃদয় আনাস একটি গোল করলে ব্যবধান কিছুটা কমে (১-৬)। এরপর ৬৩, ৬৭ ও ৬৯ মিনিটে যথাক্রমে মেরিনারের নাঈম উদ্দিন, নিলয় এবং আজিজুল ইসলাম ফিল্ড গোল করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৯-১। হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় নিলয়ের। যদিও ম্যাচের ৩১ মিনিটে একটি পেনাল্টি স্ট্রোক মিস না করলে গোলসংখ্যা আরও বাড়তে তার। গত ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।
×