নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ৪ জুন ॥ রাণীনগরে স্ত্রীর ওপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বামী মানিক শেখ (৩৬)। সৌদি আরবে মানিকের স্ত্রী অন্য একজনকে বিয়ে করেছে এমন গুজব গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে রবিবার গভীর রাতে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গলায় ফাঁস দেয় মানিক শেখ। সোমবার সকালে রাণীনগর থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমনুরা পাওয়েল এলাকার মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে মানিক শেখ গত প্রায় ১৭ বছর আগে রাণীনগর উপজেলার চকাদিন এলাকায় এসে লেপ, তোষক, বালিশ তৈরি করে ব্যবসা করে আসছিল। রাণীনগরে ব্যবসা করার এক পর্যায় চকাদিন গ্রামের বাছেদ আলীর মেয়ে দিলরুবাকে বিয়ে করে মানিক শেখ। তাদের সংসার জীবনে জন্ম নেয় তিন ছেলে। হতদরিদ্র ও অসচ্ছল সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আনতে গত দুই বছর আগে স্ত্রী দিলরুবাকে সৌদি আরবে পাঠায়। স্ত্রীর পাঠানো টাকায় জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করে তিন ছেলেকে নিয়ে বেশ সুখেই বসবাস করে আসছিল মানিক। এ অবস্থায় গত প্রায় তিন/চার মাস আগে থেকে স্বামী মানিক তার স্ত্রী দিলরুবাকে বিদেশ থেকে বাড়িতে আসার চাপ দিতে থাকে। কিন্তু কিছু কাগজপত্রের জটিলতার কারণে আসতে পারছে না জানালে এবং বিভিন্ন লোকজনের উস্কানিমূলক কথায় স্ত্রীর প্রতি নানা রকম সন্দেহ সৃষ্টি হয় মানিকের। গত ৩/৪ দিন আগে মানিক নিজেই বন্ধু-বান্ধবদের কাছে মন্তব্য করে যে, তার স্ত্রী দিলরুবা সৌদিতে যাওয়ার পর হয়তো অন্য কাউকে বিয়ে করেছে। এই সন্দেহের জের ধরে রবিবার গভীর রাতে স্ত্রী দিলরুবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার কথা বলে মানিক। মানিকের কথায় আশঙ্কা দেখা দিলে সৌদি আরব থেকে দিলরুবা তার মাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানায়। এ সময় শাাশুড়ি দ্রুত মানিকের বাড়িতে পৌঁছে জানালা দিয়ে মানিকের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। স্থানীয় লোকজন ডেকে তুলে টিনের চালা কেটে ঘরে প্রবেশ করে লাশটি নামায় তারা। খবর পেয়ে সোমবার সকালে রাণীনগর থানা পুুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপার মানিকের শাশুড়ি নাজিরা বিবি জানান, গত ২/৩ দিন আগে থেকে আমার জামাই একে-ওকে বলছে আমার মেয়ে নাকি সৌদিতে বিয়ে করেছে। এটা নিয়ে আমার সঙ্গে জামাইয়ের প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। রবিবার রাতে সৌদি থেকে মেয়ে ফোন করে বলছে, তোমার জামাই গলায় দড়ি দিচ্ছে! এমন কথা শুনে আমি দ্রুত জামাইয়ের বাড়িতে পৌঁছে জানালা দিয়ে জামাইয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই।