ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে ক্রেতা সামলাতে হিমশিম ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২ জুন ২০১৮

 কেরানীগঞ্জে ক্রেতা সামলাতে হিমশিম ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব সংবাদাদাতা, কেরানীগঞ্জ, ১ জুন ॥ ঈদকে সামনে রেখে কেরানীগঞ্জের তৈরি পোশাক মার্কেটগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা ভিড় করছেন এসব মার্কেটে। ঈদ ঘিরে কেরানীগঞ্জে তৈরি পোশাক পাইকারি বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়েছে আরও এক মাস আগে থেকে। ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন গত বছরের চেয়ে এ বছর ঈদ বেচা-কেনা ভাল চলছে। কেরানীগঞ্জে তৈরি পোশাক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ স্বাধীন বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ঈদ বাজার একটু আগেই শুরু হয়েছে অন্য বছরগুলোতে শব-ই-বরাতের পর ঈদ বাজার শুরু হতো। আগামী ২০-২৫ রোজা পর্যন্ত পাইকারি বেচাকেনা চলবে। ঢাকার অভিজাত মার্কেটসহ সারাদেশে শপিংমল ও বিপণি বিতানগুলোতে ইতোমধ্যে শোভা পেতে শুরু করেছে এখানকার তৈরি পোশাক। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে তৈরি পোশাক বোঝাই ভ্যান গাড়ি এমনকি নদীপথে নৌকা পর্যন্ত জটের সৃষ্টি হয়েছে। ক্রেতাদের ভিড় প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা ছাড়াও গ্রামগঞ্জে ফেরি করে পোশাক বিক্রি করছেন, তারাও এসব মার্কেটে ভিড় জমাচ্ছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জিন্স প্যান্ট, পায়জামা, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রি পিস, বেবী স্যুট ও সালোয়ার কামিজের দাম কম টেকসই এবং দেখতে সুন্দর। মফস্বলের পাইকাররা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত। এই মার্কেটে ১টি জিন্সের প্যান্ট মূল্য ৪শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকা। ১টি পাঞ্জাবি ২শ’ ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা। ১টি ফতুয়া ১শ’ ৫০ টাকা থেকে ৪শ’ ৫০ টাকা। বেবি স্কার্ট ও থ্রি পিস সালোয়ার-কামিজ ৩শ’ টাকা থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকায় পাইকারি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে হাজী করিম মার্কেটের আল-রুমী গার্মেন্টস এর মালিক মোঃ রাজ্জাক বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো জিন্সপ্যান্ট এখানে তৈরি হয়। ১০ সহস্র্রাধিক কারখানা ও বিক্রয় কেন্দ্র এখানে গড়ে উঠেছে। লাইলী গার্মেন্ট এর স্বত্বাধিকারী মোঃ রিপন তালুকদার বলেন, এ বছর ব্যবসা আগের বছরের চেয়ে ভাল হবে। পাইকারদের চাপ এ বছর বেশি। পূর্ব আগানগরের বিক্রমপুর প্লাজার লাকী গার্মেন্টস এর মালিক মিজানুর রহমান বলেন, বেবি সেট থেকে শুরু করে ছোটদের সকল প্রকার অত্যাধুনিক পোশাক এখানে তৈরি হয়। মূল্য ১শ’ ২০ টাকা থেকে ৯শ’ টাকা প্রকারভেদে। জেনারেল ট্রেডিং এর মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, এ বছর সবচেয়ে বেশি থ্রি পিস ও সালোয়ার তৈরি করছি দাম ৯শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। তবে কাপড় চীনের এ বিষয়ে পূর্ব আগানগরের বি+প্লাস প্রিন্ট শাড়ির স্বত্বাধিকারী হাজী আবুল কাশেম বলেন, এ বছর ঈদে শাড়ির চাহিদা অনেক। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুত ঘাটতির কারণে উৎপাদন হচ্ছে কম। তিনি আরও বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ব্যবসা ভাল হবে। ১৫-২০ রোজা পর্যন্ত পাইকারি বেচা-কেনা হবে। যশোর স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, স্মার্ট লুক আনতে জিন্স প্যান্টের জুড়ি মেলা ভার। ছেলে কিংবা মেয়েদের শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কোর্তা, টপস, টিশার্টের সঙ্গে দারুণ মানায় ফ্যাশনেবল জিন্স। কম যায় না গ্যাবার্ডিনও, গর্জিয়াস লুক আনে। ছোট বড় সবার কাছেই সমান জনপ্রিয় আরামদায়ক জিন্স-গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। আর তাই এবারের ঈদ বাজারেও তারুণ্যের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নানান কাট ও ডিজাইনের জিন্স-গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। দিন ঘনাচ্ছে বর্ণিল ঈদ উৎসবের। ফলে জমে উঠেছে যশোরের ঈদ বাজার। ঈদকে সামনে রেখে হরেক রঙ ও রকমারি ডিজাইনের জিন্স গ্যাবার্ডিনের পসরা সাজিয়েছে যশোরের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস। দেশী বিদেশী বিভিন্ন ব্রান্ডের জিন্স-গ্যাবার্ডিনের বাহারি কালেকশন দিয়ে সাজানো হয়েছে ফ্যাশন হাউসের গ্যালারি। তরুণদের পাশাপাশি সব বয়সী মানুষ ফ্যাশনেবল জিন্স-গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট কিনছেন। এবারকার ঈদ বাজারের হালহকিকত জানার জন্য গত কয়েক দিন শহরের বিভিন্ন মার্কেটপাড়া ঘুরে এমন দৃশ্যই নজরে পড়েছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্ট্রেইট রেগুলার ফিট, স্লিম-ফিট, ন্যারো-ফিট, সেমি ন্যারো-ফিট, নন স্টিচ, স্টিচসহ নানা ধরনের জিন্সের প্যান্ট কালেকশনে রয়েছে। পাশাপাশি কালেকশনে রয়েছে হরেক রঙের মেনজ টুইল, ক্যাজুয়াল ও ফরমাল গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। শহরের মুজিব সড়কের রঙ ফ্যাশন ব্যাংক, চরকা, ক্যালেক্টরেট মার্কেটের আদিত্ব্য ফ্যাশন, সাদ্দাম এক্সপোর্ট, খান গার্মেন্টস, ডি আর এক্সপোর্ট প্যান্ট হাউস, সিটি প্লাজার জিন্স বাজারসহ বেশ কয়েকটি দোকানে দেশী বিদেশী রকমারি ব্রান্ডের জিন্স ও গ্যাবার্ডিনের দারুণ সব কালেকশন রয়েছে। এসব পোশাকের দোকানে রকি, ডেনিম, ফিসকো, টি-ফোর্থ, রক্স, ফক্স, ডিওএ, ডিজেল, ডোপিকসহ বেশ কয়টি নামীদামী ব্রান্ডের জিন্সের প্যান্ট মিলছে। দাম ৫০০ থেকে শুরু করে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। ডি আর এক্সপোর্ট প্যান্ট হাউসের স্বত্বাধিকারী আলাল হোসেন জানান, প্যান্টের ভেতর এবারও জিন্সের কদর বেশি। গরমে আরামদায়ক হওয়ায় গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট অনেকে কিনছেন। তবে বিক্রির পরিমাণ এখনও তুলনামূলক কম। আর কয়েকটা দিন গেলে বেচাবিক্রির পরিমাণ বাড়বে। এ মার্কেটটির আদিত্ব্য ফ্যাশন থেকে জিন্সের প্যান্ট কিনছিলেন সরকারী মাইকেল মধুসূদন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আলামিন খান বাদল। আলাপচারিতায় বলেন, জিন্সের প্যান্ট বেশ আরামদায়ক। শীত, বর্ষা, গরম সব ঋতুতে এটি স্বস্তিদায়ক পোশাক। এছাড়া শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টিশার্টের সঙ্গে দারুণ মানায় জিন্স প্যান্ট। এ জন্য একটি জিন্সের প্যান্ট কিনলাম। আদিত্ব্য ফ্যাশনের জ্যেষ্ঠ বিক্রয়কর্মী মঈনুল হাসান মুকুল বলেন, বেশির ভাগ তরুণরা জিন্সের প্যান্ট পছন্দ করেন। দেশী বিদেশী সব ধরনের জিন্স আমাদের কালেকশনে রয়েছে। তবে বিদেশী ব্রান্ডের কদর সবচে বেশি। বেশির ভাগ ক্রেতারা বিদেশী জিন্সের প্যান্ট কিনতে চান। বেচাকেনার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত বাজার সেভাবে না জমলেও বেচাকেনা খারাপ না। তবে কয়েক দিনের মধ্যে চাকরিজীবীরা বেতন বোনাস হাতে পাবেন। তখন বেচাকেনা জমে উঠবে।
×