ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ শুরু রবিবার

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২ জুন ২০১৮

সিরিজ শুরু রবিবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাঝখানে আর একদিন বাকি। আজকের দিনটি গেলেই বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ শুরু হয়ে যাবে। রবিবার প্রথম টি২০ দিয়ে সিরিজ শুরু হবে। প্রথম টি২০ ম্যাচের পর মঙ্গলবার দ্বিতীয় ও বৃহস্পতিবার তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচগুলো দেরাদুনের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে। বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় ম্যাচগুলো শুরু হবে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান পরস্পরের বিপক্ষে কোন টি২০ সিরিজ খেলবে। এর আগে দুই দলের মধ্যকার কোন টি২০ সিরিজ হয়নি। একবার মাত্র ওয়ানডে সিরিজ হয়েছে। সেটি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত দুই দলের মধ্যকার একটি মাত্র টি২০ ম্যাচ হয়। ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের সেই ম্যাচটিতে জিতে বাংলাদেশ। আর দুই দলের মধ্যকার হওয়া ৫ ওয়ানডের মধ্যে বাংলাদেশ ৩টি ও আফগানিস্তান ২টি ম্যাচ জিতে। এবার নতুন স্টেডিয়ামে দুই দল প্রথমবারের মতো টি২০ সিরিজে লড়াই করবে। দেরাদুন স্টেডিয়ামটি নতুনভাবে করা হয়েছে। যেহেতু আফগানিস্তানে গিয়ে কোন দল খেলবে না। তাই দেরাদুন স্টেডিয়ামটি আফগানিস্তানের ‘হোম ভেন্যু’ করা হয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যাদের ‘এ্যাওয়ে’ সিরিজ থাকবে, তারা দেরাদুনে গিয়ে খেলবে। এ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ যেমন অভ্যস্ত নয়, আফগানিস্তানও তেমন নয়। আফগানরা এ স্টেডিয়ামে শুধু অনুশীলনই করেছে। কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও মঙ্গলবার দেরাদুন গিয়ে বুধবার থেকেই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। কন্ডিশন সম্পর্কে আফগানরা আগে থেকে জানলেও বাংলাদেশ কয়েকদিনে তা জেনে গেছে। প্রচ- গরম আবহাওয়া। উইকেট পেসনির্ভর হতে পারে। তা জেনে গেছে বাংলাদেশও। সেভাবে দলও পরিকল্পনা করে এগিয়ে চলেছে। আজ শেষদিনের অনুশীলন শেষে আগামীকাল থেকে সিরিজের মিশনে নেমে যাবে বাংলাদেশ। সিরিজে বাংলাদেশ দলই শক্তিশালী। ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ কোর্টনি ওয়ালশ যেমন বলেছেন, ‘আমরা এখনও শক্তিশালী দল।’ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও সিরিজ জয়ের আশার কথাই শুনিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমাদের টার্গেট ওটা (সিরিজ জেতা) থাকবে। আমরা চেষ্টা করব ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলার। প্রথম ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা ভাল শুরু করতে পারি, তাহলে মোমেন্টামটা আমাদের দিকে থাকবে। তখন দুই ম্যাচ আমাদের জন্য খুব সহজ হয়ে যাবে।’ অবশ্য বাংলাদেশ যতই শক্তিশালী দল হোক, আফগানিস্তান টি২০তে দুর্বার দল। আর তাইতো র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে আফগানিস্তান। যদিও টি২০তে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কোন কাজে দেয় না। স্বল্প ওভারের ম্যাচটিতে যে দল দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, ভাল খেলতে পারে; জয় তাদেরই হয়। সাকিব যেমন বলেছেন, ‘আসলে টি২০তে ফেবারিট বা অ-ফেবারিট এ ধরনের কোন তকমা থাকে না। যে কোন দল যে কোন সময় যে কাউকে হারাতে পারে।’ দলের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম বলেছেন, ‘প্রতিটি সিরিজে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ থাকে। চেষ্টা থাকবে সর্বশেষ যেটা করেছিলাম, সেটা যেন ধরে রাখতে পারি। গত সিরিজে (নিদাহাস ট্রফিতে) শেষ বাধাটা (ফাইনাল) পেরোতে পারেনি। এবার চেষ্টা থাকবে সেটা যেন জয় করতে পারি। এটা দলীয় খেলা। টি২০তে আমরা কম জিতি। এবার চেষ্টা থাকবে ভাল করার।’ অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেছেন, সিরিজ জেতাই একমাত্র লক্ষ্য। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই সিরিজ জেতা। আমাদের ওয়ান এ্যান্ড অনলি টার্গেট।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘র‌্যাঙ্কিংয়ে ওরা আট নম্বর, আমরা দশ নম্বর। আমি চ্যালেঞ্জটা যেভাবে দেখি, প্রতিটি টি২০ ম্যাচ আমরা যখন খেলি, ওটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। কিছুদিন আগেও আমাদের সামনে প্রশ্নবোধক একটা চিহ্ন ছিল। এখন ওটা আমাদের সামনে থেকে সরে গেছে। ডে বাই ডে আমরা ইমপ্রুভ করছি। এই সিরিজটি আরও একটা সুযোগ, প্রতিটি ম্যাচ জেতার। এই সিরিজটা জিততে পারলে পরবর্তী সব সিরিজের জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি হবে।’ তবে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ দল একটু সমস্যায় পড়েছে। দলের সেরা পেসার মুস্তাফিজুর রহমান যে পায়ের চোটে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েছেন। তবে মুস্তাফিজকে নিয়ে এখন আর দল ভাবতে রাজি নয়। নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত হচ্ছেন ক্রিকেটাররা। আফগানিস্তানের স্পিনাররা ভাল। বিশেষ করে রশিদ খান ও মুজিব জাদরান দুর্দান্ত। এছাড়া ব্যাটিং কিংবা পেস আক্রমণে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকছে। ব্যাটিংয়ে তামিম, সৌম্য, সাব্বির, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক, সাকিব, লিটনদের মতো ব্যাটসম্যানরা আছেন। পেস আক্রমণে অভিজ্ঞ রুবেলের সঙ্গে আবু জায়েদ রাহী, আরিফুল হকও রয়েছেন। যোগ দিয়েছেন আবুল হাসান রাজুও। মুস্তাফিজ না থাকলেও শেষ পর্যন্ত সমস্যা হওয়ার কথা না। স্পিন আক্রমণে যে এক সাকিবই যথেষ্ট। রবিবার বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার শুরু হতে যাওয়া সিরিজেই তা বোঝা যাবে।
×