ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জার্মানিকে রোখার সাধ্য কার?

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ২ জুন ২০১৮

জার্মানিকে রোখার সাধ্য কার?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ দুইযুগ পর বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে শক্তিশালী আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করে চতুর্থ শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় তারা। এবার রাশিয়া বিশ্বকাপেও ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো জার্মানির। বৃহস্পতিবার জার্মানির অভিজ্ঞ কোচ জোয়াকিম লোও প্রতিপক্ষদের সতর্কবার্তা দিয়ে দিলেন। জানিয়ে দিলেন টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হতে মরিয়া তার দল। এ প্রসঙ্গে দেশটির অভিজ্ঞ কোচ জোয়াকিম লো বলেন, ‘জার্মানি ব্যাক টু ব্যাক শিরোপা জিততে ক্ষুধার্ত, যা এর আগে কখনই ছিল না। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড় থেকে আমাদের থামাতে কেবল বিশেষ শক্তির খেলোয়াড়রাই পারবে।’ বিশ্ব ফুটবলের শৈল্পিক দেশ ব্রাজিল। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নও তারা। ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে টানা দুইবার স্বপ্নের বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল সেলেসাওরা। এবার জার্মানি চ্যাম্পিয়ন হলে ৫৬ বছরের মধ্যে প্রথম দল হিসেবে টানা দুইবার শিরোপা জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়বে জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। জার্মানি যে পারবে তার পেছনে কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান রয়েছে। সেগুলো হলো- অভিজ্ঞতা। ফুটবল কিংবা ক্রিকেট যে কোন খেলাতেই অভিজ্ঞতার মূল্য অপরিসীম। বড় বড় ম্যাচে স্নায়ু চাপ ধরে রাখার জন্য অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। এবারের বিশ্বকাপে ৯ জন তারকা খেলোয়াড় জার্মান দলে আছেন যারা খেলেছেন ব্রাজিল বিশ্বকাপও। একই কথা বলতে পারবে না ব্রাজিল, ফ্রান্স বা স্পেনের মতো শক্তিধর দলগুলো। বিশেষ করে দলটির কোচ জোয়াকিম লো দীর্ঘদিন এ দলটির সঙ্গে কাজ করায় ভাল করেই জানেন জিততে হলে কি করতে হবে। অভিজ্ঞতার পাশাপাশি শক্তির গভীরতাও জার্মানি ফেবারিট হওয়ার অন্যতম কারণ। বলা হয়ে থাকে একটা দল কতটা শক্তিশালী তা দেখা হয় তাদের রিজার্ভ বেঞ্চ দেখে। আর এই জায়গায় দারুণ এগিয়ে জার্মানি। প্রায় প্রতিটি পজিশনেই রয়েছে একাধিক তারকা খেলোয়াড়। আর পেশাদারিত্বে কোন আপোসই করে না জার্মানরা। গত আসরের ফাইনাল জয়ের নায়ক মারিও গোটজে নেই ২৭ জনের তালিকাতেও। নেই আন্দ্রে শুরলে, বেনেদিক্ত হাওদিস, ইমরি কানের মতো খেলোয়াড়রাও। মেধাবী ও পারফর্মারদের নিয়েই দল গড়েছেন লো। জশুয়া কিমিচের মতো বেশ কিছু তরুণ ক্ষুধার্ত খেলোয়াড় দলে নিয়েছেন তিনি। আছেন বার্সিলোনার গোলরক্ষক মার্ক টের স্টেগান, তিমো ওয়ার্নার ও লরে সানের মতো পারফর্মারদের। যারা একাই ম্যাচের ফলাফল বদলে দিতে সিদ্ধহস্ত। আর লো তার সাফল্যের সবটুকুই পেয়েছেন এমন সব তরুণ খেলোয়াড়দের দলে নিয়ে। একাই ১৯৮৬’র বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এমন কোন খেলোয়াড় নেই জার্মান দলে। নেই ২০০২ সালের ব্রাজিলের রোনাল্ডোর মতো খেলোয়াড়ও। কিন্তু আছেন একঝাঁক স্বতন্ত্র মেধাবী খেলোয়াড় যারা দলগতভাবে ভীষণ শক্তিশালী। ম্যানুয়েল নয়ার বর্তমান বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক, জেরোমে বোয়েটাংয়ের মতো ডিফেন্ডার আছেন, যারা গত বিশ্বকাপ জয়ে রেখেছেন দারুণ ভূমিকা। আছেন রিয়াল মাদ্রিদের টনি ক্রুস, বর্তমান বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডারই বলা হয় তাকে। আর অবশেষে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে মার্কো রিউসকে পাচ্ছে তারা। সামি খেদেরা, মেসুত ওজিলরা তো পরীক্ষিত সৈনিকই। ইতিহাসও জার্মানদের পক্ষে। জার্মানদের সঙ্গে রয়েছে দারুণ সব অতীত ইতিহাস। ব্রাজিলের পর বিশ্বকাপের আসরে সবচেয়ে বেশি সফল তারাই। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, চারবার রানার্সআপও। তিনবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছে দলটি। আর দারুণ এসব রেকর্ডগুলো মাঠে খেলোয়াড়দের চাপকে অনেকটাই কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে পেনাল্টি কিকে গেলে তো তারাই যেন রাজা। ১৯৭৬ সালের পর মেজর কোন টুর্নামেন্ট টাইব্রেকারে হারেনি তারা। অপরদিকে কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড ১৯৯০ সালের পর টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছে ছয়বার। আগামী ১৪ জুন পর্দা উঠবে রাশিয়া বিশ্বকাপের। টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানির সঙ্গে এবারের আসরে ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো ব্রাজিল, ফ্রান্স, স্পেন এবং আর্জেন্টিনার।
×