ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নন্দনতত্ত্বের জগতকে ঐশ্বর্যম-িত করেছেন শিল্পী লুৎফুল হক

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১ জুন ২০১৮

নন্দনতত্ত্বের জগতকে ঐশ্বর্যম-িত করেছেন শিল্পী লুৎফুল হক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুধু একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা নন, জীবনযুদ্ধের এক লড়াকু সৈনিক শিল্পী সৈয়দ লুৎফুল হক। কারণ, ছবি আঁকার পাশাপাশি এই শিল্পী শিল্পকলাবিষয়ক অনেক বই লিখেছেন। এভাবেই নন্দনতত্ত্বের জগতকে ঐশ্বর্যম-িত করেছেন তিনি। কাজ করেছেন সাংবাদিকতা, শিল্প-নির্দেশনাসহ নানা বিষয়ে। এভাবেই শিল্পী ও শিল্পকলাবিষয়ক সৈয়দ লুৎফুল হককে মূল্যায়ন করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রখ্যাত সাংবাদিক কামাল লোহানী। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো ‘শিল্পকলা সাহিত্যে শিল্পী সৈয়দ লুৎফুল হক’ শীর্ষক আলোচনা। সদ্য প্রয়াত বরেণ্য কবি বেলাল চৌধুরীকে নিবেদিত এ অনুষ্ঠানে আয়োজন করে গণমাধ্যম সংস্থা ঘাসফুল। আলোচনা ও কবিতাপাঠে সজ্জিত আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন কামাল লোমাল লোহানী। অতিথি হিসেবে কথনে অংশ নেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন শিল্পী মনিরুল ইসলাম, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি ও চিত্রসমালোচক রবিউল হুসাইন, অধ্যাপক মাসুদা এম. চৌধুরী, কবি হাসান হাফিজ, প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসাইন প্রমুখ। সৈয়দ লুৎফুল হকের বর্ণিল জীবন নিয়ে রচিত প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রাবন্ধিক বিলু কবীর। স্বাগত বক্তৃতা করেন ঘাসফুলের উপদেষ্টা আতা সরকার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবিন ফারুক মাহমুদ। কবি বেলাল চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এক মিনিটের সেই নীরবতা শেষে মিলনায়তনে ভেসে বেড়ায় কবিতার দোলায়িত ছন্দের শিল্পীত উচ্চারণ। কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী রাবিয়া সুলতানা পান্না। এরপর কবিকে নিবেদিত ‘অসাম্প্রদায়িক অন্তরঙ্গ সুহৃদ কবি বেলাল চৌধুরী’ শীর্ষক স্বরচিত কবিতাপাঠ করেন কবি মীনা মাশারাফী। সমরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, সৈয়দ লুৎফুল হক অনেক গুণের অধিকারী। তিনি যে এত কিছু করতেন তা আমার জানা ছিল না। তার এসব কর্মকা- আমায় মুগ্ধ করেছে। গুণী এ মানুষটি এত প্রচারবিমুখ যে, তার কথা জানতে আমাদের দেরি হয়ে গেছে। তার মতো একজন মানুষ যে আমাদের মাঝে আছে, এটা আমাদের শিল্পী সমাজের সৌভাগ্য। প্রত্যাশা করি নানা ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখবেন। রবিউল হুসাইন বলেন, শিল্পী ও লেখক এই দুই পরিচয়কে একসঙ্গে ধারণ করেছেন সৈয়দ লুৎফুল হক। সাধারণত শিল্পচর্চা যারা করেন, তারা তেমনভাবে লেখালেখি করেন না বা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হন না। সেই ক্ষেত্রে লুৎফুল হক আঁকাআঁকির পাশাপাশি সমানতালে চালিয়ে গেছেন লেখালেখি। এই শিল্পীর মধ্যে একটি গবেষণাধর্মী মন আছে। সেই সুবাদে তিনি শিল্পকলাবিষয়ক দশটি বইসহ ১৫টি গ্রন্থ লিখেছেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য লুৎফুল হক রচিত বইগুলো সম্পদ হয়ে থাকবে। কারণ, শিল্পকলার নানা বিষয়ে তিনি গবেষণাধর্মী অনেক তথ্য যুক্ত করেছেন এসব গ্রন্থে। এছাড়াও আশার আলো ছড়িয়ে তিনি বাংলা বর্ণমালার গ্রেডিং নিয়েও কাজ করছেন। ‘সৈয়দ লুৎফুল হক সম্পাদক’ শীর্ষক বিলু কবীর বলেন, সমাজে কিছু কিছু আছেন নিজে আলোকিত, কিন্তু সব সময় অবস্থানটি নেন আড়ালে। এই ক্ষেত্রে তার চারিত্র্য বাতির মতো। চারদিকে ছড়িয়ে দেয়া আলোর আবডালে থাকা সেই সম্পদ মানুষটিকে অনুধাবন করা যায়, কিন্তু চাক্ষুষ করা যায় না। সৈয়দ লুৎফুল হক বহুরৈখিক মেধা ও সংস্কৃতিবান মানুষ। তিনি একাধারে চিত্রকর, সাংবাদিক, গবেষক-লেখক, প্রচ্ছদশিল্পী, ইলাস্ট্রেটর, কবি, সমালোচক এবং সর্বোপরি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। লুৎফুল হকের বহুমাত্রিক মেধার তথ্য জানিয়ে বলেন, তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে, সুন্দরী, কসাই, দুই পয়সার আলতা, সূর্যদীঘল বাড়ি, সখিনার যুদ্ধ, আগমন, শুভদা’র মতো ১৪টি নন্দিত চলচ্চিত্রের শিল্পনির্দেশক। বাংলা একাডেমির দেয়াল, বিটিভি ভবন, বিমানবন্দর, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় শোভা পাচ্ছে তার নির্মিত দারুশিল্প ও মোজাইকের ম্যুরাল। অফিসার্স ক্লাবে ঈদমেলা ॥ রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ঈদমেলা। ক্লাব ঢাকার মহিলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মেলাটির সূচনা হয় বৃহস্পতিবার। এদিন সকালে ক্লাব মিলনায়তনে মেলার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। নারীদের নির্মিত পোশাক, গহনা থেকে শুরু করে গৃহসজ্জার নানা সামগ্রী ঠাঁই পেয়েছে মেলায়। শনিবার পর্যন্ত চলবে এই মেলা।
×