ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১ জুন ২০১৮

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ বাসার ছাদে অনেকেই বাগান করেন। শহর ঢাকায় ছাদ বাগান বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু সিএনজি অটোরিক্সার ছাদেও কি বাগান হতে পারে? প্রশ্ন শুনে অনেকেই ফিক করে হেসে ফেলবেন। অটোরিক্সারও ছাদ। সেই ছাদে আবার বাগান! হতেই পারে না। আসলে পারে। ইচ্ছে থাকলে হয়। ঢাকার একাধিক অটোরিক্সা চালক এমন বাগান করে দেখিয়েছেন। চলছে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী। মাঝে মধ্যেই দেখা যায়। হুট করে চোখের সামনে চলে আসে। অনেকদিন পর বুধবার বনশ্রী এলাকায় তেমন একটি সিএনজি অটোরিক্সার দেখা মিলল। এইটুকুন বাহন। যাত্রী নামাতে রাস্তার এক পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ওমনি আশপাশ থেকে কৌতূহলী লোকজন প্রায় ছুটে এলেন। না কেউ যাত্রী হতে আসেননি। কাছে থেকে দেখতে চাইছেন বাগানটি। অটোরিক্সার ছাদে মাটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে অল্প পরিসরে কয়েকটি ফুলের গাছ। দিব্যি বেঁচে আছে। ভরপুর প্রাণ। বাগানটি কে করেছেন? কীভাবে পরিচর্যা করা হয়? ইত্যাদি প্রশ্ন খুব প্রাসঙ্গিক। কিন্তু উত্তর পাওয়া হলো না। তার আগেই যাত্রী এসে হাজির। নতুন গন্তব্যের পানে ছুটে চলল সিএনজি অটোরিক্সা। তবে চালকের সঙ্গে কথা না হলেও অনুমান করা যায়Ñ তিনি প্রকৃতিপ্রেমী। সবুজ ভালবাসেন। বৃক্ষহীন বিবর্ণ শহরে তার নিজের জায়গা নেই। গাছ লাগিয়ে ভরিয়ে দেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বলে বসে থাকারও যুক্তি নেই। বৃক্ষ রোপণ করার আহ্বানটি যেন জানিয়ে দিয়ে যান তিনি। ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। রমজানে বরাবরই এ ধরনের অভিযান চালানো হয়। তবে এবার ফলাফল আরও খারাপ। আরও বেশি আতঙ্কিত হওয়ার মতো। ঢাকার নামীদামী খাবারের দোকান। রুচি আভিজাত্য বাইরে থেকে দেখে শেষ করা যায় না। অথচ এসবের ভেতরে ঢুকতেই উল্টো ছবি। পচা গলা মেয়াদোত্তীর্ণ দুর্গন্ধ যুক্ত খাবার খুঁজে বের করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত সোমবার অভিযান চালানো হয় গুলশানের মতো উচ্চবিত্তদের এলাকায়। খুশবু নামের একটি রেস্তরাঁর দুটি শাখায় পাওয়া যায় টেক্সটাইল মিলে ব্যবহার করা হয় এমন রং। জব্দ করা কৌটার গায়েই লেখা ছিল, শিল্প কারখানায় ব্যবহারের জন্য। অথচ রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ বিরিয়ানীকে আকর্ষণীয় দেখাতে এই রঙের ব্যবহার করছিল। মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর রং ব্যবহারের কারণে দুটি শাখাই সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরির দায়ে ‘কস্তুরি’ নামের আরেকটি রেস্তরাঁকে জরিমানা করা হয় ৭৫ হাজার টাকা। বুধবার অভিযান চালানো হয় ‘রস’ নামের একটি মিষ্টির দোকানে। বেশ নাম আছে রসের। অথচ ডেমরায় তাদের একটি কারখানায় ঢুকে হতবাক হয়ে যান বিএসটিআইর ভ্রাম্যমাণ আদালত। মিষ্টিতে তেলাপোকা মরে পড়ে থাকতে দেখেন তারা। মশা মাছিরও অভাব ছিল না। অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরির কারণে রসকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। রাজধানীর কাপ্তানবাজারে বিভিন্ন মাংসের দোকানে অভিযান চালিয়েও হতাশ হয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এখানে নানা অনিয়মের দায়ে ১৩ ব্যবসায়ীকে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সুপারশপও বাদ যায়নি। স্বপ্ন ও আগোরাকে জরিমানা করা হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ টাকা। এর পর আর আতঙ্কিত না হয়ে উপায় আছে! রমজানে বদলে গেছে প্রতিদিনের জীবন। শিল্পকলা একাডেমিতে এখন আর আগের মতো নাটক হয় না। হচ্ছে না। তবে একেবারে বসে থাকতে নারাজ থিয়েটারকর্মীরা। বিভিন্ন দল নাটক মঞ্চায়নের চেষ্টা করছে। এ ধারবাহিকতায় বুধবার জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন।’ ঢাকা পদাতিকের নতুন নাটক। ৩৮ তম প্রযোজনা। নাটকটির এদিন ছিল তৃতীয় মঞ্চায়ন। এতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা মহান বিপ্লবী মাস্টার দা সূর্যসেনের প্রহসনের বিচার ও অন্যায় হত্যাকা-ের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। অনিবার্য চরিত্র হয়ে এসেছেন প্রীতিলতা। কল্পনা দত্ত, অম্বিকারায়, নির্মলসেনকে পাওয়া যায়। বিচারের দিকটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে যেহেতু, একাধিক উকিল চরিত্রের দেখা মেলে। আর সব মিলিয়ে ৪০টি চরিত্র। অভিনয় করেন নাদের চৌধুরী, মাহবুবা হক কুমকুম, আব্দুল্লাহ রানা, হাসনা হেনা শিল্পী, মাহাবুবুর রহমান টনি, সাবিহা জামান, শ্যামল হাসান, কাজী আমিনুর, ফিরোজ হোসাইন, আক্তার হোসেন প্রমুখ। নাটকের রচয়িতা ও নির্দেশক মাসুম আজিজ। দর্শক খুব বেশি ছিলেন না। তাতে কী, নাটক নাটকের মতোই এগিয়ে গেছে। উপস্থিত দর্শক গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন।’
×