ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জলবায়ু পরিবর্তন

উদ্বাস্তুদের সুরক্ষায় আইনী কাঠামো দাবি

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১ জুন ২০১৮

উদ্বাস্তুদের সুরক্ষায় আইনী কাঠামো দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্বাস্তুদের বসবাস, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এই সকল মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষায় একটি পূর্ণাঙ্গ আইনী কাঠামো তৈরি করতে হবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএল-আরডি) আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: ভূমি থেকে প্রান্তিক মানুষের উচ্ছেদ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ বিষয়ে জোর দাবি জানান। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিতাড়িত এসব মানুষেরা তাদের ছেড়ে আসা স্থানে যে সকল সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচীর আওতায় ছিল তারা যেন নতুন স্থানে সে সুবিধাগুলো পেতে পারে তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অতীব জরুরী। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)র চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. খলীকুজ্জামান আহমদ। প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)র সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. হামিদুল হক প্রমুখ। জলবায়ু পরির্তনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভূমি, কৃষি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জীবন যাপনের উপর কি ধরনের প্রভাব পড়ছে সেগুলো খতিয়ে দেখার উদ্দেশে বেসরকারী সংগঠন এএলআরডি সম্প্রতি ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, জীবন-জীবিকা এবং স্থানান্তর’ বিষয়ে এক গবেষণা পরিচালনা করেছে। দেশের উপকূলীয় ২টি এলাকায় যেমন- সাতক্ষীরা-সাতক্ষীরা পৌর এলাকা ও পৌর এলাকার বাইরে, খুলনা-সিটি কর্পোরেশন এলাকা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া এলাকা এবং নোয়াখালী সুবর্ণচর এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, বাধ্য হয়েই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আদি বসতি ছেড়ে স্থানচ্যুতির শিকার হয়। সুবর্ণচরের মোট নমুনার ৯০ শতাংশ মানুষ হাতিয়া থেকে অভিগমন করে এখানে এসেছে। উপকূল এলাকার লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অবকাঠামোর ক্ষতি, জমির ক্ষতি, আয়ের উৎসের ক্ষতি এবং বসতবাড়ির ক্ষতির কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে অভিগমন করে। এদের অধিকাংশই ভূমিহীন মানুষ। অভিগমনের ফলে তাদের পেশার পরিবর্তন ঘটেছে, আয়ের পরিবর্তন ঘটেছে উল্লেখযোগ্য হারে। একই সঙ্গে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা হ্রাস পেয়েছে সমান হারে। আগে ৩ শতাংশ নারী গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে কাজ করত কিন্তু অভিগমনের পর ৭ শতাংশ নারী শহরের বাসাবাড়িতে ঝি-এর কাজ করছে। গ্রামে আগে রিক্সা-ভ্যান চালনায় ৪ শতাংশ থেকে অভিগমন পরবর্তীতে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার আগে গৃহিণী ৩১ শতাংশ ছিল অভিগমনের পর তা ২৩ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ গৃহিণীরাও বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক কাজে যুক্ত হয়েছে। অভিগমন পরবর্তী সময়ে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
×