ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আরিফ হোসাইন হিয়া

কর্মনাশা জলজট

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৩১ মে ২০১৮

কর্মনাশা জলজট

বাংলাদেশের প্রধান দুই নগরী হলো ঢাকা এবং চট্টগ্রাম। এখানে সবচেয়ে বেশি মানুষের বসবাস। আমরা লক্ষ্য করলেই দেখতে পায় এই প্রধান দুই মহানগরীতে অল্প বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে নানা দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীদের। একদিন বৃষ্টি হলেই তিন চার দিন পর্যন্ত পানি জমে থাকছে। গলি থেকে রাজপথ অধিকাংশই তলিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে। অনেক সড়কে জমে থাকা পানির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। নগরের অধিকাংশ মানুষ তাদের কর্মস্থল যেমন অফিস, আদালত, ব্যাংক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি জায়গায় সঠিক সময়ে যেতে পারে না। সবমিলিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নগরবাসী। ঢাকানগরীর মৌচাক, মালিবাগ, আরামবাগ, শান্তিনগর এলাকার সড়কগুলোতে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। ইট, খোয়া উঠে মাটি বেরিয়ে পড়া এসব সড়ক গ্রামের মেঠো পথ ধারণ করে। একই চিত্র মিরপুর, মোহাম্মপুর, পুরান ঢাকার লালবাগ, জুরাইন, খিলগাঁও, বাড্ডা, কুড়িল, কাকলী, মহাখালী ইত্যাদি এলাকার অনেক সড়কই এমন অবস্থা বিরাজ করে। অপরদিকে অল্প বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রাম নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র খাতুনগঞ্জে পুরো এলাকা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। রাস্তাঘাট ভরা থেকে শুরু করে যানযটের মতো নানা সমস্যার শিকার হতে হয়। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা বিবিসির এক সাক্ষাতে বলেন, চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হলেও বছরে বছরে জলাবদ্ধতার প্রকোপ বাড়ছে যা ব্যবসাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ফি বছরে দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়ররা এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের আশ্বাস দিলেও তার খুব একটা পরিবর্তন হয় না। রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলো প্রতিবছর শ’কোটি টাকা খরচ করছে। মূলত নর্দমা নির্মাণ ও মেরামত, খাল, কালভার্ট ও পরিষ্কারের কাজে এই টাকা ব্যয় করা হয় কিন্তু পরের বছরে আবার একই অবস্থা বিরাজ করে। এখানে অন্যতম একটি লক্ষণীয় বিষয় হলো নগরবাসীর সচেতনার অভাব। একতরফাভাবে শুধু সরকারকে দায়ী করা যাবে না। সরকারের সুষ্ঠু উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও নাগরকি সচেতনতার অভাবে এটি অনেক সময় হয়ে উঠেনা। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য নগরবাসীর অনেক দায়Ñদায়িত্ব রয়েছে। শ’কোটি টাকা খরচ করলেই যে এই সমস্যার সমাধান হবে এমনটা নয় যদি না নাগরিক সচেতনতার অভাব দূর হয়। ওয়াসা কর্মকর্তারা দাবি করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু ড্রেনেজ সিস্টেম অকেজো হয়ে পড়ায় বৃষ্টির পানিতে সহজেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নয়ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় কিন্তু কোন অবস্থায় এটি রোধ করা যাচ্ছে না। কেননা নগরবাসীরা যেখানে-সেখানে ও ড্রেনেজ লাইনগুলোতে বর্জ্য আর্বজনা ফেলা বন্ধ করছে না। যদি নগরবাসী একটু সচেতন হয়ে এই বর্জ্য পর্দাথগুলো ফেলা বন্ধ করে তাহলে সহজেই এই জলাবদ্ধতা দূর করা যাবে এবং দুর্ভোগ অনেকটায় কমে আসবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আমাদের সকলের উচিত হবে সরকারকে সাহায্য করার পাশাপাশি একজন সচেতন নাগরিকের ভূমিকা পালন করা। তাহলেই দেখা যাবে যে, জলাবদ্ধতার সীমাহীন দুর্ভোগ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যাবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী থেকে
×