ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় কীর্তি শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৩০ মে ২০১৮

শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় কীর্তি শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন

২৫ মে শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যৌথ উদ্যোগে উদ্বোধন করা হলো শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন। সঙ্গে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন। বাংলাদেশ-ভারতের এই এক অভাবনীয় শিক্ষা, ঐতিহ্য আর সাংস্কৃতিক সাফল্য যেখানে বাংলা ভাষার মর্যাদা আরও উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছে যায়। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত আরও মজবুত হয়, শিক্ষা কার্যক্রমেও আসে এক যুগান্তকারী সংযোজন। রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন শুধুমাত্র নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীল ক্ষেত্রই নয়, মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে জ্ঞানার্জনেরও এক অনবদ্য পীঠস্থান। শান্তিনিকেতনে বিশ্বকবির নিজ হাতে গড়া বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং আবহমান বাঙালীর চিরায়ত চেতনার এক পুণ্যস্থান। নিজের জীবনে শিক্ষা কার্যক্রম যতই ইউরোপীয় সভ্যতার আধুনিক বলয়ে গড় উঠুক না কেন কবি কখনই তাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। ফলে যথার্থ জ্ঞান চর্চার মুক্ত পরিবেশ তৈরির আদর্শিক বোধ থেকে তিনি প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষাকে আধুনিক বিশ্বজনীনতার অপার সম্ভাবনায় একীভূত করে নতুন এক অন্যরকম বিদ্যাপীঠ তৈরির তাগিদ অনুভব করলেন। আর সেখান থেকেই নতুন এক শিক্ষা কার্যক্রমের যাত্রা শুরু । সেখানে যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্যের সঙ্গে সমন্বিত হলো বিশ্ব পরিসরের সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, তার সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যুক্ত হলো শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশের বিস্তৃত কর্মযোগ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা সম্প্রসারণে যে সুদূরপ্রসারী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছেন শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’ নির্মাণ তারই একটি মহতী উদ্যোগ। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তার নিরলস কর্মপ্রক্রিয়া দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সেখানে তিনি আধুনিক বাংলাদেশের দক্ষ স্থপতি। ভারতীয় রুপীতে প্রায়ই ২৫ কোটি অর্থ ব্যয় করে এই অত্যাধুনিক দ্বিতল ভবনটি নির্মিত হয়। ভবনটির অন্যতম আকর্ষণ মিলনায়তন, জাদুঘর এবং গ্রন্থাগার। যাতে শিক্ষার্থীরা শুধু জ্ঞানার্জনই করবে না আপন ঐতিহ্যিক মূল্যবোধের সঙ্গেও পরিচিত হবে। জ্ঞান চর্চাকে শৈল্পিক সুষমায় অভিষিক্ত করতে গেলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালিয়ে নেয়াও বিশেষ দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আর তাই শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষার বিদ্যাপীঠই নয়, শিল্প-সংস্কৃতিরও নিয়মিত চর্চাকেন্দ্র। ফলে রবীন্দ্রনাথ সৃষ্ট এই বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আদলেই তৈরি করা হয় বাংলাদেশ ভবন। যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য, ঐতিহ্য এবং ইতিহাসকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম সাধক রবীন্দ্রনাথ সব সময় আধুনিক ভাব সম্পদেও নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন। আর সেই কারণে বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘরটি শুরু হয়েছে ওয়ারী বটেশ্বরে প্রাপ্ত ২৫০০ হাজার বছরের পুরনো সভ্যতার নিদর্শন দিয়ে। আর শেষ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত সমস্ত ঐতিহাসিক দলিল ও তথ্য-উপাত্ত সংযোজন করে। যেহেতু রবীন্দ্রনাথের হাতে গড়া বিশ্বভারতীতে ভবনটির অবস্থান সঙ্গত কারণে কবি সম্পর্কিত অনেক জানা-অজানা বিষয় জাদুঘরে সন্নিবেশিত হয়েছে, যা দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধকে জানার পাশাপাশি বিশ্বকবিকেও যথার্থভাবে বুঝতে সহায়তা করবে। এই এক অভাবনীয় কর্মপরিকল্পনা, যা দু’দেশের সম্প্রীতির বন্ধন মজবুতই করবে না সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানেও যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পর্যায়ক্রমিক ধারায় ঐতিহাসিক যোগসাজশকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে সুলতানী আমল থেকে ব্রিটিশ ভারতের যুগপরিক্রমার হরেক নিদর্শন জাদুঘরের শোভা বর্ধন করেছে। পরবর্তীতে ’৪৭-এর দেশ বিভাগ থেকে শুরু করে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন সর্বশেষ ’৭১-এর স্বাধীনতার যুদ্ধের ইতিহাসও ভবনটিতে ঐতিহ্য চর্চায় যুগান্তকারী অবদান রাখবে। ভবনটির সার্বিক তত্ত্বাবধানের নিমিত্তে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় রুপী ১০ কোটির একটি অনুদানও দিয়েছে। ভবনটির উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় যেখানে কবিগুরুর পৈত্রিক জমিদারি ছিল সেখানে তাঁর সাধারণ মানুষের সান্নিধ্যে আসার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। রবীন্দ্রনাথ জীবনের সচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শিলাইদহ, শাহজাদপুর এবং পতিসরে অবস্থান করে শুধু তাঁর সৃজন ভা-ারই পূর্ণ করেননি অবহেলিত এবং পশ্চাৎপদ গ্রাম সমাজকে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করারও আপ্রাণ চেষ্টা করেন। অবিভক্ত বাংলার মূল শিকড় থেকে তুলে আনেন তাঁর সঙ্গীতের সমৃদ্ধ উপাদান। বাউল সুরকে নিজের গানের জগতে সন্নিবেশিত করে যে একাত্মতার বাণী নিবেদন করেন সেটাও ছিল চিরায়ত বাঙালী সত্তার এক অনবদ্য ঝঙ্কার। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি সেও এক ঐতিহাসিক পালাক্রম। রবীন্দ্রনাথের আদর্শিক বোধ আর গভীর চৈতন্যে শিক্ষা কার্যক্রমের যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয় তা যেমন সার্বজনীন একইভাবে বিশ্বপরিসরে জ্ঞানচর্চারও এক অভূতপূর্ব মিলনকুঞ্জ। প্রাচীন ভারতের নৈসর্গিক স্নিগ্ধতায় তপোবন বিদ্যালয়ের যে চিরায়ত নমুনা সেখান থেকে কবির বিদ্যালয় তৈরির প্রাথমিক বোধ জেগে ওঠে। সঙ্গত কারণে ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম’ নামে বিদ্যালয়টি কবির চেতনালব্ধ বোধেরই এক নব আবিষ্কার। শান্তিনিকেতনের বিদ্যাশ্রমের যাত্রা এভাবে শুরু হলেও পরবর্তীতে তা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে বিশ্বজনীনতার অপার সুষমায় গড়ে উঠতে সময় নেয়নি। পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদপুষ্ট এই বিদ্যালয়টি কালক্রমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদায় আসীন হয়। ফলে কলকাতা থেকে দূরে এই বোলপুর অঞ্চলটি ক্রমান্বয়ে দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে। কথিত আছে, মহর্ষি ১৮৬০ সালে বোলপুরের কাছে একটি জমি ক্রয় করেন। তিনি মাঝে মধ্যে বোলপুর আসতেন বলে ‘শান্তিনিকেতন’ নামে একটি গৃহ নির্মাণ করেন। কালক্রমে আশপাশের পুরো জায়গা শান্তিনিকেতন নামে পরিচিতি লাভ করে। এই গৃহে মহর্ষি ধ্যানমগ্ন হয়ে নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করতেন। আর তার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি উপাসনা গৃহ বা ব্রহ্মমন্দির। ১৮৯২ সালে এই মন্দির উদ্বোধন করেন দেবেন্দ্রনাথ নিজেই। পিতৃভক্ত রবীন্দ্রনাথের কাছে এই মন্দির ছিল প্রার্থনা আর বিদ্যাচর্চার এক পবিত্র মিলনকুঞ্জ। যেখানে শুধু দেশীয় ঐতিহ্য আর চিরায়ত সংস্কৃতিরই আবাহন হবে না পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানকেও সমানভাবে সংযুক্ত করা হবে। সেই বোধ থেকেই ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু এবং শেষ অবধি তা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে শান্তিনিকেতনের এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠটি শুধু দর্শনীয়ই নয়, জ্ঞান সাধনারও এক অনুপম চর্চা কেন্দ্র। শান্ত-স্নিগ্ধ প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্মুক্ত স্থানে বিদ্যাচর্চার এমন মিলনসৌধে আরও এক নব সংযোজন ‘বাংলাদেশ ভবন’ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণকে নতুন মাত্রা এনে দিল। এই গৌরব শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের বাংলা ভাষা-ভাষীদের জন্য এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিল। শান্তিনিকেতন আর বিশ্বভারতী মানেই রবীন্দ্র দর্শনে এক পবিত্র তীর্থভূমিতে অবগাহন করা, যা শুধু বাংলা কিংবা ভারতীয় ঐতিহ্যই নয়, বিশ্ব পরিসরে জ্ঞান সাধনারও এক অভাবনীয় চর্চা কেন্দ্র যেখানে কোন মানুষকে শুধু শিক্ষার আলোই বিতরণ করবে না দেশীয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে লালন করে বিশ্বজনীনতার অপার সম্ভাবনাকেও একেবারে কাছে নিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ক্রমবর্ধমান বলয়ে যেভাবে নতুন অভিযাত্রাকে সংযুক্ত করছেন দেশের সীমানায়, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আঙিনায়ও তাঁর প্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবিভক্ত বাংলার সমৃদ্ধ যুগ আমরা পেরিয়ে এসেছি। শুধু তাই নয়, অনেক ঐতিহ্যিক গৌরবও হারাতে বসেছি। আবহমান বাংলার মাটি আর মানুষের মূল শিকড়ের এক সময় যে অবিচ্ছিন্ন মিলনের সুর ঝঙ্কৃত হতো কোন অশুভ ছায়ায় সেখানে আজ বিচ্ছেদের করুণ রাগিণী। এখান থেকে বেরিয়ে আসাটা নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত গতি নির্ণয়ে অত্যন্ত জরুরী এবং একান্ত আবশ্যক। শেখ হাসিনা সেই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়ে সময়ের প্রজন্মের কাছে অবিভক্ত বাংলার মিলন সুর আবারও গ্রথিত করে দিলেন। রাবীন্দ্রিক চেতনাকে সার্বজনীনতায় রূপ দিলেন শুধু নয় বাংলা ও বাঙালীর গৌরবান্বিত ঐতিহ্যকেও জ্ঞানচর্চার অনুষঙ্গ করলেন। এমন মহতী কাজ শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। কবি নিজেই শান্তিনিকেতনের শুদ্ধ পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষাপাঠ্যক্রমের বিষয়বস্তু যেভাবে তৈরি করেছিলেন তা কেবল প্রচলিত শিক্ষা ধারার ভিন্ন মাত্রারই নয় বরং আন্তর্জাতিক বলয়ের জ্ঞান-বিজ্ঞানের মহা সম্মিলনের এক নিভৃত সাধন কুঞ্জও। ফলে জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সৌন্দর্য অবগাহনে আগ্রহী দর্শনার্থীর কাছে এ এক পরম তীর্থস্থান যেখানে বিশ্বকবির সৃষ্টি আর কর্মবৈচিত্র্যের সঙ্গে আধুনিক সম্ভাবনাময় বিদ্যাচর্চার বিকাশমান ধারার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ থাকে। সারাদেশ আর বিশ্ব পরিভ্রমণ করা রবীন্দ্রনাথ অনুধাবন করেছিলেন ঐতিহ্যিক মূল্যবোধ থেকে যেমন চ্যুত হওয়া যাবে না পাশাপাশি বিশ্বের অবাধ আর মুক্ত জ্ঞান চর্চাকেও জীবন ও দেশ গড়ার অপরিহার্য শর্ত হিসেবে সন্নিবেশিত করা সব থেকে বেশি জরুরী। বর্তমানে শান্তিনিকেতনের পুরো প্রাঙ্গণটি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে। যেখানে শান্তিনিকেতন গৃহ, ছাতিমতলা, আ¤্রকুঞ্জ, কলা ভবন, সঙ্গীত ভবন, পাঠ ভবন থেকে শুরু করে আরও প্রয়োজনীয় ভবন আছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন। কবি নিজেই এসব ভবনের স্থপতি। আরও আছে কেন্দ্রীয় পাঠাগার, অতিথি ভবন শান্তিনিকেতন ডাকঘর, গবেষণা কেন্দ্র, পল্লী শিক্ষা ভবন এবং মেলা প্রাঙ্গণের মতো আবশ্যক স্থাপনাগুলো। শৈশব-কৈশোরের নিজের শিক্ষা জীবনের অস্বস্তি আর অসহনীয় বোধ থেকে যে অভিজ্ঞতা তার অন্তরে গাঁথা ছিল সেটা কোনভাবেই সুখকর নয়। তাই নিজের তৈরি করা শিক্ষাঙ্গনকে এতটাই উন্মুক্ত আর সার্বজনীন করেছিলেন যাতে অবাধ জ্ঞানচর্চাকে কোন নির্দিষ্ট আলয়ে আবদ্ধ করতে না হয়। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় পাঠাগার দেশ-বিদেশের জ্ঞান চর্চার এক অভাবনীয় মিলনযজ্ঞ। ‘মেলা প্রাঙ্গণ’ শান্তি নিকেতনের উৎসব আর মেলাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। পিতা মহর্ষির আমল থেকেই এখানে পৌষ মেলার আয়োজন করা হতো। সে কারণে আশপাশে কিছু কুটির ও হস্তশিল্প গড়ে ওঠে যা গ্রামীণ অর্থনীতির সহায়ক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। সময়ের গতিতে এই অর্থনীতি তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় আরও গতিশীল হয়েছে ঠিকই কিন্তু হস্তচালিত শৈল্পিক সম্ভারকে তার নিজের কিছু জায়গা ছেড়ে দিতেও হয় যন্ত্র সভ্যতার কাছে। এখন মেলা প্রাঙ্গণ শুধু পৌষ মেলায় সীমাবদ্ধ নয়, আরও অনেক স্বদেশীয় সমৃদ্ধ বৈভবের মিলনযজ্ঞে নতুন রূপ নিয়েছে। কবি নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনাসৌধের পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ ভবন’ বিশ্বভারতীর প্রাঙ্গণকে যে নতুন মাত্রা দিল সেই অভাবনীয় কর্মোদ্যোগ সময়ের দুর্বার মিছিলে সম্ভাবনার শুভযাত্রাকে কয়েক ধাপ এগিয়ে দেবে। সেই প্রত্যাশায় দুই বাংলার রবীন্দ্রভক্ত, জ্ঞানপিপাসু, আধুনিকও ঐতিহ্যিক ধারার সমন্বয়ক সর্বোপরি অসংখ্য শিক্ষার্থী এবং শুভার্থীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এমন একটি মহান মিলন কেন্দ্র উপহার দেয়ার জন্য শুধু অভিনন্দনই নয়, তার চেয়েও বেশি যুগ ও সময়ের দাবি মেটানোর অগ্রনায়কের মহিমান্বিত মর্যাদায়ও অভিষিক্ত করায়। লেখক : সাংবাদিক
×