ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিপুরা থেকে আরও ৫শ’ মেও বিদ্যুত আমদানির সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৩০ মে ২০১৮

ত্রিপুরা থেকে আরও ৫শ’ মেও বিদ্যুত আমদানির সিদ্ধান্ত

আনোয়ার রোজেন ॥ ত্রিপুরা থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ত্রিপুরার সূর্যমণিনগর হতে কুমিল্লা হয়ে এ বিদ্যুত দেশে আসবে। এ জন্য কুমিল্লায় ৫০০ মেগাওয়াট এইচভিডিসি ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন নির্মাণ করতে হবে। এতে মোট খরচ হবে ১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা। খরচের সিংহভাগ অর্থের জোগান দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ঋণ হিসেবে সংস্থাটির কাছ থেকে পাওয়া যাবে ১ হাজার ১২০ কোটি। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রকল্পটিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছে। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এটিসহ মোট ১৩ প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুত আমদানি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে উৎপাদনের চেয়ে আমদানি লাভজনক বিবেচনায় এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দেশের পূর্বাঞ্চলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতেই এ উদ্যোগ। বর্তমানে ত্রিপুরা থেকে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হচ্ছে। মূলত বর্তমান আমদানি সক্ষমতাকে আরও বাড়াতে নতুন করে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানান, এখন থেকে দুই এবং তিন ফসলি জমি বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরিতে কাজে লাগানো যাবে না। এক ফসলি জমি হলে সেখানে বিদ্যুত কেন্দ্র করা যেতে পারে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশের সবগুলো নদীবন্দর আবার সচল করতে হবে। আমরা যেহেতু ভারত ও নেপালের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছি, তাই নদী বন্দরগুলো সচল থাকলে পরিবহন ব্যয় কমবে এবং সড়ক পথের ওপর চাপ কমবে। তাই ড্রেজিং করে হলেও নদীবন্দরগুলো চালু করতে হবে। ৫ জোনে সড়ক সংস্কারে ৩ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ॥ রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট জেলার সব মহাসড়কের যথাযথ মানোন্নয়ন ও প্রশস্তকরণে ৩ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাঁচটি পৃথক প্রকল্পে এ পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে। আগামী জুলাই থেকে জুন ২০২০ সালের মধ্যে ৫টি জোনের আওতাধীন ৩২ জেলার মহাসড়ক নেটওয়ার্কের মান উন্নয়ন, নিরাপদ, আরামদায়ক, সময় এবং ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এসব জোনের সড়কগুলো বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এ সড়কগুলো প্রশস্ত করে যাতায়াতের উপযোগী করার জন্য এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, এ জন্যে রাজশাহী জোনের ৬ জেলার ১৯টি সড়কের জন্য ৭৬৭ কোটি টাকা, রংপুরে ১০টি সড়ক বিভাগের ২৮টি সড়কের জন্য ৬৫৪ কোটি টাকা, খুলনা জোনের ১০ জেলার ২২টি সড়কের জন্য ৭৫৬ কোটি, চট্টগ্রাম জোনের ১৩টি জেলা মহাসড়কের জন্য ৬৫২ কোটি টাকা এবং সিলেট জোনের চার জেলার ১৩টি সড়কের জন্য ৫৩৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, সৌর বিদ্যুত চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ প্রকল্প, যার খরচ ধরা হয়েছে ৪০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া জামালপুরের নগরবাড়ীতে আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মেল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৬৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্সিং এ্যাসেস টু সার্ভিসেস ( আইডিএ) প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মধুখালী হতে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। মন্ত্রী জানান, ১৩ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৬ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ৬৯ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৭১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৫৯২ কোটি ৩৪ টাকা খরচ করা হবে।
×