ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগ পরিবেশ খুব ভাল বলেই সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২৯ মে ২০১৮

বিনিয়োগ পরিবেশ খুব ভাল বলেই সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে ॥ মুহিত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশে বর্তমানে বিনিয়োগের পরিবেশ খুব ভাল বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর এ কারণেই দেশে প্রথমবারের মতো সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে। তিনি বলেন, কালো টাকা বিনিয়োগ করতে দেয়ার কোন ইচ্ছা সরকারের নেই। তবে কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি দেশে সফল হয়নি। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট’ আয়োজিত ‘স্বপ্ন পূরণের বাজেট প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির রূপরেখা’ শীর্ষক প্রাক বাজেট আলোচনায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রীর সহোদর বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. এ কে এ আব্দুল মোমেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাঈদি সাত্তার, সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম ও সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডাঃ মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল প্রমুখ। আগামী বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসছে কি না কিংবা বিনিয়োগে আনার কোন পদক্ষেপ থাকছে কি না, তা আলোচকদের মধ্যে কয়েকজন জানতে চান। এর উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, কালো টাকার জন্য কোন রকমের ব্যবস্থা করার কোন ইচ্ছা আমার নেই। কালো টাকা সাদা করা অল অয়েজ আ ব্যারিয়ার, এ্যান্ড ইট হ্যাজ নেভার সাকসিডেড। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কালো টাকার প্রভাব নিয়ে আলোচনা বহু পুরনো। অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে বিভিন্ন সময়ে সুযোগ দিলেও তাতেও তেমন সফলতা আসেনি। এই সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অপ্রদর্শিত ১৩ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা বৈধ করা হয় বলে সংসদে গত বছর জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে মুহিত বলেন, ব্যাংক কেলেঙ্কারি ইজ এ্যা ভেরি সিরিয়াস ম্যাটার এবং ব্যাংকিং সেক্টরে অনেক ধরনের গোলামাল আছে। ঋণ কেলেঙ্কারিতে ধুঁকতে থাকা ব্যাংকগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি একীভূত হবে বলে আশা করছিলেন মুহিত। কিন্তু তা না হওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১১ সাল থেকে দক্ষজনবল তৈরিতে ব্যবস্থা করা হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আম্ব্রেলা প্রজেক্ট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বেশকিছু সংখ্যক দক্ষকর্মী তৈরি হচ্ছে। বাজেটের আকারের বিষয়ে তিনি বলেন, উচ্চাভিলাসী নয়, লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। সে পরিমাণে এখনও যেতে পারিনি। বাজেটের আকার না বাড়ালে আমরা জনগণকে সার্ভিস দেব কিভাবে। তাই আসন্ন বাজেটের আকার ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়ন ৭৪ টু ৮৪ হবে। বাস্তবায়ন অনুযায়ী আগামী বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা একটু বেশি। তবে এ বছরের বাজেট বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরে অনেক ধরনের গোলমাল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মূল প্রবন্ধে আয়কর বাড়ানো, সরকারের রিজার্ভ ফান্ডের বিপরীতে সভারেইন বন্ড চালু, সম্পদের অপচয় বন্ধ করা, ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির প্রতিকার, বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করা, এপ্রিল মাসের মধ্যেই বাজেটের টাকা বিলিবণ্টনের সুপারিশ করা হয়।
×