ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুষ্ঠানে ফখরুল

এটা মাদকবিরোধী অভিযান নয়- এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ২৯ মে ২০১৮

এটা মাদকবিরোধী অভিযান নয়- এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে প্রতিদিন যেভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে এটা কল্পনা করা যায় না। ’৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও এ ধরনের হত্যাকা- ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমীগর। তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মুক্ত করতে আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া আন্দোলন সফল হয় না। জনগণকে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ গ্রেফতারকৃত সব রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে স্বেচ্ছাসেবক দল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, আজকে রক্তাক্ত হয়ে গেছে বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছিলাম, তখন রক্ত ঝরিয়েছে। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির পর যখন আন্দোলন করেছিলাম, তখনও রক্ত ঝরিয়েছে। এবার যে রক্ত ঝরছে তা সত্যিকার অর্থে ইতোপূর্বে আর কখনও ঝরেনি। একটা সভ্য দেশে বিনা বিচারে ভয়ঙ্করভাবে মানুষ হত্যা করা হবে, এটা কল্পনা করা যায় না। চলমান মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কে মাদকদ্রব্য সেবন করে বা কে মাদকের ব্যবসা করে সেটা আমাদের প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের হত্যা করা হচ্ছে তাদের বিচার করা হচ্ছে না কেন। তিনি বলেন, কক্সবাজারের একজন কমিশনারকে হত্যা করা হয়েছে। তিনবার তিনি কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। হাজারো মানুষ সেখানে জানাজায় অংশ নিয়েছেন। সবাই বলছে নিরপরাধ একজনকে হত্যা করা হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও দেবেন। এর মাধ্যমে বোঝা যায় এটা শুধু মাদকবিরোধী অভিযান নয়। এতে কোন ষড়যন্ত্র আছে। একটার পর একটা ষড়যন্ত্র করেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে আছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ঘরে যারা মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, যারা মাদক সম্রাট নামে পরিচিত, তাদের গায়ে একটা ফুলের টোকাও দিচ্ছেন না। কাদের ইঙ্গিতে বিনা বিচারে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। কারা এই তালিকা তৈরি করেছে? বাংলাদেশে আগাম কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে কিনা এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এটাকে মাদকবিরোধী অভিযান বললে ভুল হবে। এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। তিনি আরও বলেন, ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যে, আসন্ন নির্বাচনে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন শেখ হাসিনা। এই খবর যদি সত্য হয় তাহলে কি এই দেশ স্বাধীন আছে? তাহলে কি দেশকে অঙ্গরাজ্য বানাতে চায় সরকার? চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে আছে। তাদের কোন ভিত্তি নেই। তার প্রমাণ খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশে করে বলেন, আপনারা যদি এতই জনপ্রিয় হয়ে থাকেন, তাহলে খালেদা জিয়াকে বের করে নির্বাচন করেন। দেখা যাক কে জনপ্রিয়? আমরা কখনও বলিনি যে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিতে হবে। বলেছি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে। যেখানে সবাই ভোট দিতে পারবেন। গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে উল্লেখ করেন। খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক। নির্বাচন অবশ্যই দিতে হবে। সেটা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে এবং জনগণের ভোটের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক ফোরাম-ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ। এদিকে দলীয় নেতা ওয়াহিদুল আলমের মৃত্যুতে জানাজায় অংশ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একজন বড় মাপের রাজনীতিবিদকে হারালাম। দুপুরে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা পূর্ব বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিষ্ঠা থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন ওয়াহিদুল আলম। তিনি এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। জাতীয় সংসদে তিনি হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে বড় মাপের রাজনীতিবিদকে হারালাম।
×