ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদ্যুত উৎপাদনে সর্বোচ্চ রেকর্ড ১০৮২৫ মেও

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৮ মে ২০১৮

বিদ্যুত উৎপাদনে সর্বোচ্চ রেকর্ড ১০৮২৫ মেও

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত উৎপাদনে শনিবারের রেকর্ড ভেঙ্গেছে রবিবারই। রবিবার রাত নয়টায় দেশের বিদ্যুত উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮২৫ মেগাওয়াট। যা এযাবৎকালের মধ্যে সব থেকে বেশি বিদ্যুত উৎপাদন। আর শনিবার দেশের বিদ্যুত উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৬৯৯ মেগাওয়াট। রবিবার বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি দুপুরে এবং রাতে পৃথক দুই খুদে বার্তায় বিদ্যুত উৎপানের এই তথ্য জানায়। গত মার্চে দেশে বিদ্যুত উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। ২০ মার্চ দেশের বিদ্যুত উৎপাদন প্রথমবার ১০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করে। ওই দিন ১০ হাজার ৮৪ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়। এরপর আরও এক দফায় সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ১০ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছিল। তবে এবারের রেকর্ডে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে এক ধাপে ৬৭৮ মেগাওয়াট। এরমধ্যে ভারত থেকে অবশ্য ৬০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হয়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের মধ্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা দিয়ে ৪৮২ মেগাওয়াট আর কুমিল্লা দিয়ে ১২৪ মেগাওয়াট বাংলাদেশে এসেছে। সর্বোচ্চ উৎপাদনের খবরে দেশের বিতরণ কোম্পানির কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারা চাহিদা মাফিক বিদ্যুত পেয়েছেন। রাজধানীর বিদ্যুত বিতরণকারী ডেসকো এবং ডিপিডিসি উভয় কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বলছে তারা যা চাহিদা তাই বিদ্যুত পাচ্ছে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে বিতরণ ত্রুটির কারণে সমস্যা হচ্ছে। ডেসকোর একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তাদের চাহিদা ছিল ৮৮২ মেগাওয়াট আর পুরোটাই সরবরাহ করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি। খুলনা-বরিশালের বিদ্যুত বিতরণকারী কোম্পানি ওয়েস্টজোনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র বলছে শনিবার সন্ধ্যায় তাদের চাহিদা ছিল ৫৫৬ মেগাওয়াট। যার পুরোটা সরবরাহ করা হয়েছে। একই দিন আরইবিও তাদের চাহিদার পুরোটা সরবরাহ পেয়েছে বলে আরইবি সূত্র জানায়। উৎপাদন বৃদ্ধির রহস্য হিসেবে পিডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, গত এক মাসে অন্তত ৬০০ মেগাওয়াট নতুন তেল চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। এরমধ্যে সামিট পাওয়ার এর গাজীপুরের কড্ডায় একটি ৩০০ মেগাওয়াট, বাংলা ট্রাকের আরও ৩০০ মেগাওয়াট কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। বাংলাট্রাক ২০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র দাউদকান্দি এবং ১০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র যশোরে স্থাপন করেছে। ওই কর্মকর্তা বলছেন এগ্রিকো পাওয়ারের আরও একটি ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছে। কেরানিগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও এ ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসবে বলে জানান তিনি। পিডিবির ওয়েব পেজে বলা হচ্ছে গত বছরের ১৮ নবেম্বর দেশে বিদ্যুত উৎপাদন ওই বছরের সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল নয় হাজার ১১ মেগাওয়াট। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ এর ৩০ জুন ৭ হাজার ৪৮৫ মেগাওয়াট সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পিডিবি বলছে, তেলচালিত নতুন কেন্দ্র উৎপাদনে আসায় গত কয়েকদিন ধরেই একটু একটু করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়। সরকার গ্রীষ্মের বিদ্যুত সঙ্কট সামাল দিতে স্বল্পমেয়াদী তেলচালিত বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ শুরু করে। গতবছর শেষ ভাগে এসে নতুন করে তিন হাজার মেগাওয়াট ও তেলচালিত বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। সকল সরকারী কোম্পানিকে তেলচালিত নতুন কেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারী উদ্যোক্তাদেরও তেলচালিত কেন্দ্র নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়। বর্তমানে দেশের স্থাপিত সব বিদ্যুতকেন্দ্রর মোট উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ হাজর ৫৫৩ মেগাওয়াট। যদিও এবার গ্যাসচালিত বিদ্যুত কেন্দ্রর জন্য পিডিবি এর আগেই পেট্রোবাংলার কাছে এক হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা দেয়। কিন্তু পেট্রোবাংলা এখন গড়ে ৯৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে। এলএনজির সরবরাহ শুরু হলে আরও বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
×