ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে প্রতিশ্রুতি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২৮ মে ২০১৮

 পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে প্রতিশ্রুতি

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন, বিষয়টি তিনি পুনরায় স্থির করেছেন বলে দেশটির পক্ষ থেকে রবিবার জানান হয়েছে। এর ফলে ঐতিহাসিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ল। এর আগে এই বৈঠক হবে কি হবে না এ নিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলেছে। এএফপি ও ওয়াশিংটন পোস্ট। ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও উনের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্প কয়েক দিন আগে তা বাতিলের কথা বলেন। ট্রাম্প এও বলেন উত্তর কোরিয়া চাইলে এ বৈঠক হতে পারে। এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে নতুন কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হয়ে। এদিকে বৈঠকের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তি সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন রবিবার বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে এবং কোরিয়া উপদ্বীপ পূর্ণ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে কিম জং উন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত এলাকা পানমুনজোমে দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতা এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো শীর্ষ বৈঠকে বসেন। দুজনকে এসময় বেশ হাসিখুশি ও আন্তরিক মনে হচ্ছিল। দুই কোরিয়ার মধ্যকার সীমান্ত বিশ্বের সবচেয়ে ভারি অস্ত্র ও নিরাপত্তাবাহিনী বেষ্টিত অবস্থায় রয়েছে। এদিকে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন ১২ জুন সিঙ্গাপুরে উনের তার পূর্ব ঘোষিত বৈঠকটি হতে পারে। সার্বিক পরিস্থিতি এখন কোরিয়া উপদ্বীপ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার দিকে বলে মনে করেন ট্রাম্প। তার মতে, এগুলো ‘ভাল লক্ষণ’। তিনি অবশ্য বৃহস্পতিবার ওই বৈঠক না হওয়ার কথা বলেছিলেন। এরপর দুপক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়। মুন জায়ে ইনও এই প্রক্রিয়ায় থাকেন। ট্রাম্প ও উনের মধ্যে প্রস্তাবিত বৈঠকটি যেন হয় সেজন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রচেষ্টা চালান। মুন মনে করেন, সামনাসামনি আলোচনাই যুত্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে তিক্ততা অবসানের সবচেয়ে ভাল উপায়। এর আগে গত বছর ট্রাম্প ও উনের মধ্যে পরস্পর কাদা ছোড়াছুড়ি দেশ দুটিকে প্রায় যুদ্ধের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে উন দেখছেন সরাসরি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিষেধাজ্ঞার বোঝা হালকা করার সহায়ক হবে। এছাড়া শত্রু পরিবেষ্টিত ভৌগোলিক অবস্থানে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে সেটা তার জন্য আরেকটি অর্জন হবে। মুন সাংবাদিকদের বলেন, কোরিয়া উপদ্বীপ পুরোপুরি পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার উন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছেন। এছাড়া সংঘাত অবসান ঘটিয়ে শান্তির সম্ভাবনা তৈরির জন্য একটি দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক আয়োজনে সহযোগিতা করতে তিনি তৈরি আছেন। মুন বলেন, তিনি উনকে একথা বলেছেন যে, উন যদি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন তবে যুক্তরাষ্ট্রও উত্তর কোরিয়ার প্রতি বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে। উন পুরোপুরি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শীঘ্রই প্রস্তুতি পর্যায়ে আলোচনা শুরু হবে। শনিবার অনুষ্ঠিত আন্তঃ কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছেন। দুই কোরিয়ার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও রেডক্রসের কর্মকর্তারা ১ জুন থেকে আলোচনায় বসবেন। উদ্দেশ্য দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে বিচ্ছিন্ন পরিববারগুলোর পুনরেকত্রীকরণ বিষয়ক আলোচনা এগিয়ে নেয়া। ১৯৫০-৫৩ সালের যুদ্ধে অনেক পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে কোরিয়ার দুই অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কথা বলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে অগ্রসর হতে চান। পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ করা খুব কঠিন একটি কাজ।
×