ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ শিরোপায় চোখ ফুটবলারদের

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২৭ মে ২০১৮

সাফ শিরোপায় চোখ ফুটবলারদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়ান গেমস ফুটবল, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে সামনে রেখে শনিবার থেকে সাভারের বিকেএসপিতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্প। যদিও নতুন ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে দলের দায়িত্ব নেবার কথা রয়েছে জুনের প্রথম সপ্তাহে। তবে তাকে ছাড়াই শুরু হয়েছে ক্যাম্প। আপাতত তাই ক্যাম্পের দায়িত্বে সহকারী স্থানীয় কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি। যিনি এর আগের হেড কোচ এ্যান্ড্রু অর্ডেরও সহকারী ছিলেন। শনিবার দুপুরে বাফুফে ভবনে এসে ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপুর কাছে রিপোর্ট করেন ৩৪ ফুটবলার। দশ ফুটবলার ছিলেন অনুপস্থিত। এর মধ্যে সাতজন গেছেন লন্ডনে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলতে। দুজন পরীক্ষার কারণে এবং একজন চোটের কারণে হাজির হতে পারেননি। জাফর ইকবাল অনার্স এবং তৌহিদুল আলম সবুজ মাস্টার্স পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত, মনসুর আমীন ইনজুরির জন্য সিলেট থেকে আসতে পারেননি। হেমন্তও রহমত বিকেএসপিতে আছেন। এদিন ন্যাশনাল টিমস কমিটির সঙ্গে সাক্ষাত করে রিপোর্ট করা খেলোয়াড়রা। সবাইকে আগামী চার মাস একসঙ্গে থাকা একসঙ্গে খেলার জন্য এবং তাদের সমস্ত মনোযোগ দিয়ে খেলার জন্য অনুরোধ করে কমিটি। বার বার খেলোয়াড়দের দেশের জন্য খেলার কথা বলতে হচ্ছে। তাহলে কি জাতীয় দলে ডাক পাওয়া এই খেলোয়াড়দের কমিটমেন্টের অভাব? কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদের জবাব, ‘তারা জাতীয় দলের খেলোয়াড়। তারা যেহেতু দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। যে কোন জাতীয় খেলা খেলতে গেলে জাতীয় দলের সঙ্গে দেশের কথাই বলতে হয় সে জন্যই বলেছি।’ ক্যাম্প শুরুর আগে নতন কোচ কি নির্দেশনা দিয়েছেন রক্সিকে? রক্সির উত্তর, ‘একজন কোচ চলে যায় আবার কোচ আসে। একেক জনের ফিলোসফি একেক রকম। যেহেতু ফুটবল এবং আমাদের টার্গেট হলো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। সরাসরি তার সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়নি। তবে ট্রেনিংয়ের একটা শিডিউল আমার কাছে আছে। এ্যান্ড্রুর সঙ্গে যে কাজগুলি আমরা করেছিলাম। ট্রেনিংয়ের আগে যে শুরু করতে হয়, মানসিকভাবে তারা যে একটা গ্যাপে ছিল, সেই জায়গা থেকে তাদের তৈরি করার জন্য যে ধরনের ট্রেনিং সেটা নিয়েই ইনশাল্লাহ ট্রেনিং শুরু করব।’ রক্সি আরও জানান, বিকেএসপিতে প্রতিদিন সকাল-বিকেল দুই বেলা অনুশীলন হবে। প্রথম সপ্তাহে ৫ দিন। তার পরের সপ্তাহে ৫ দিন। তারপর আস্তে আস্তে ৬-৭ দিন এভাবে বাড়তে থাকবে। দুদিন করে রিকভারি। তারপর একদিন রিকভারি। ঈদের আগে এভাবেই চলবে। একদিকে সাফ অন্যদিকে এশিয়ান গেমস দুই দল একসঙ্গে অনুশীলন করবে অ-২৩ এবং জাতীয় দল। এটি বাফুফের আরও বেশি ভালো হবে বলে ধারণা বাফুফের। বাংলাদেশের ফুটবল যেখানে পিছিয়েছে, সেখানে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে সাফের অন্য দলগুলো। বাস্তবতার নিরিখে সাফে বাংলাদেশের ফাইনাল খেলা কতটা সম্ভব? ‘আমরা খুব আগিয়েই আছি। কারণ এর মধ্যে আমাদের দীর্ঘদিন ক্যাম্প হয়েছে। দেশের বাইরে থাইল্যান্ড ও কাতারে গিয়ে আমরা ক্যাম্প করেছি, অনেক প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছি। অফিসিয়াল ম্যাচও খেলেছি। এর মধ্যে আমাদের বিভিন্ন খেলার কারণে গত একমাস বিরতি দেয়া হয়েছে। আমরা পিছিয়ে নেই।’ নাবিলের যুক্তি খ-ানোর চেষ্টা। জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরুর আগেই সাত ফুটবলার গেছেন লন্ডনে তিনটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। ফলে তারা দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি। এ বিষয়ে নাবিলের আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা, ‘এটি তাদের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম। কারো আগে থেকে নির্ধারিত প্রোগ্রামে আমরা ব্যাঘাত ঘটাতে চাইনি। এখন আমাদের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মেইনলি চলবে এ্যাসেসমেন্ট এবং ফিটনেস, হেড কোচ এখনও এখানে এসে যোগ দেয়নি। তারা তাদের ব্যক্তিগত প্রোগ্রাম শেষ করে ফ্রি মনে ক্যাম্পে যোগ দিক। দেশের স্বার্থেই সেভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ জানা গেছেÑসাফের আগে জাতীয় দলের প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। জুলাই মাসের শেষ নাগাদ এ বিষয়ে জানা যাবে। ডিফেন্ডার মামুন মিয়া বলেন, ‘আমরা বিগত দুইট সাফে ভাল ফল করতে পারিনি। এবার দেশের মাটিতে খেলা। এখানে আমরা ভাল কিছু উপহার দিতে চাই দেশকে। যেহেতু আমাদের যেটা টার্গেট সেটা পূরণ করতে পারছি না। সে কারণে আমাদেরকে উজ্জীবিত করতেই বার বার দেশের জন্য খেল কথাটা বলা হচ্ছে।’ সাফের আগে বাংলাদেশ দলের করণীয় সম্পর্কে মামুন বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগ পর্যন্ত ক্যাম্প কন্টিনিউ করতে হবে। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো ফ্রেন্ডলি ম্যাচগুলো বেশি বেশি খেলতে হবে। বিশেষ করে দুর্বল দল থেকে আমাদের থেকে যারা বেশি শক্তিধর তাদের সঙ্গে খেললে আমাদের জন্য ভালো হয়।’ এন্ড্রু অর্ডের অধীনে তিন মাসের ট্রেনিং। এখন নতুন কোচের অধীনে প্রস্তুতি নিতে হবে। নতুন কোচের নতুন থিওরিতে কোন সমস্যায় হবে না? মামুনের যুক্তি, ‘একটা কোচের তত্ত্বাবধানে আমরা যখন থাকি তখন তার যে থিওরি তার যে স্ট্র্যাটেজি ঐখানে আমাদের সেটাই মেনে চলতে হবে। তবে সেটাতে কোন সমস্যা হয় না আমাদের। কারণ খেলা কিন্তু ফুটবলই।’ সবশেষে মামুন বলেন, ‘এবার আমাদের হোম গ্রাউন্ডে টুর্নামেন্ট হবে। সেই আলোকে বলবÑ বাংলাদেশই এবার ফেবারিট চ্যাম্পিয়নশিপে।’
×