ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ বছরে পা মুশফিকের

প্রকাশিত: ০৭:১২, ২৭ মে ২০১৮

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ বছরে পা মুশফিকের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যে কোন ধরনের ক্রিকেট হিসাব করলেই ২০০৫ সালে ক্রিকেট দুনিয়ায় পা দেন মুশফিকুর রহীম। সেই হিসাবে সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়েই ১৪ বছরে পা দিয়েছেন মুশফিক। তবে নির্ধারিতভাবে শনিবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের ১৩ বছর পূর্তি হয়েছে। আজ থেকে ১৪ বছরে পা রেখেছেন মুশফিক। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতেই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেন মুশফিক। একই বছর ২৬ মে প্রথম টেস্ট খেলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারেরই প্রথম টেস্ট খেলতে নামেন মুশফিক। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ান। এরপর থেকে চলতে থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০০৬ সালে ওয়ানডে ও টি২০ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। পথ চলতে চলতে, দেখতে দেখতে ১৩ বছর হয়ে গেছে। আজ থেকে ১৪ বছর শুরু। দীর্ঘ এ ক্যারিয়ারে জাতীয় দলকে অনেক কিছুই দিয়েছেন মুশফিক। পেয়েছেনও। মুশফিক তাই শনিবার দিনটিকে বিশেষভাবেই উল্লেখ করলেন। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘বিশ্বাসই করতে পারছি না আমি ১৩ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি...। ওহ! সময় কিভাবে চলে যায়। এই দিনটি সব সময়ই আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, আমি কতটা ভাগ্যবান জাতীয় দলের জার্সি পরতে পেরে। সব কিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। সর্বশক্তিমান আল্লাহ রমজান মাসে আমাদের সব দোয়া কবুল করেন...। তাই দয়া করে সবাই আমার জন্য প্রার্থনা করবেন। সবাইকে ভালোবাসা।’ লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যখন টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মুশফিকের, তখন মাত্র ১৭ বছর বয়স। সেদিন একজন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবেই লর্ডসের মাঠে অভিষেক হয় উইকেটরক্ষক মুশফিকের। মাঝে তাই দলে থিতু হতে কিছুটা সময় লেগেছে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ থেকেই দলে নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠেন মুশফিক। এখন দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক। ১৩ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে ৬০টি টেস্ট, ১৮৪টি ওয়ানডে ও ৬৮টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। টেস্টে তার রান ৩৬৩৬, ওয়ানডেতে ৪৭১৮ ও টি২০তে ১০১২। দেশকে ৩৪টি টেস্ট, ৩৭টি ওয়ানডে ও ২৩টি টি২০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক। টেস্টে দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়কও তিনি। মুশফিকের অধীনেই অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো দেশকে টেস্ট হারায় বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারে নানা কীর্তিতে ভাস্বর হয়েছেন মুশফিক। ২০১৩ সালে দেশের পক্ষে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন মুশফিক। টেস্ট ও ওয়ানডেতে মোট ৫টি করে সেঞ্চুরি তার। ফিফটির সংখ্যা টেস্টে ১৯টি, ওয়ানডেতে ২৮টি ও টি২০তে ৪টি। মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে সবচেয়ে পরিশ্রমী ক্রিকেটার হিসেবেও নিজেকে চিনিয়েছেন মুশফিক। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দেখেছেন অনেক উত্থান-পতন। তবে ভেঙ্গে পড়েননি কখনও। আর তার এই লেগে থাকাই তাকে করেছে আরও অভিজ্ঞ। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরের সবচেয়ে বড় চমকের নাম ছিল মুশফিক। নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে অপরাজিত ১১৫ রানের এক ইনিংস দিয়েই চমকে দেয়ার শুরু হয়। বগুড়ার স্থানীয় একটি ক্রীড়াচক্রে ক্রিকেটে হাতেখড়ি। পরে বিকেএসপিতে ভর্তি হন। ২০০৬ সালে জিম্বাবুইয়ে সফর দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু হয় তার। এই সিরিজেই মুশফিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন এবং ২০০৭ এর বিশ্বকাপে নিজের নাম স্থায়ী করেন। একই বছর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ৮০ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন মুশফিক। ২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়ে যান। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন শুরু করেন মুশফিক। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে নিজেদের সেরা সাফল্য দেখায় এবং রানার্সআপ হয়। প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। মুশফিক ৮ম উইকেট রক্ষক যিনি টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন এবং ৯ম ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে ৬ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। ২০১৪ সালের শেষদিকে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় মুশফিককে। ২০১৭ সালে টেস্ট অধিনাকত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। তবে তার অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ দল পাচ্ছে সাফল্য। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছেন মুশফিকও। দেখতে দেখতে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১৪ বছরে পা রাখেন মুশফিক।
×