ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাবসি পাইপ লাইনে সমস্যায় এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়নি

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৭ মে ২০১৮

সাবসি পাইপ লাইনে সমস্যায় এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুই দফা পিছিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি সরবরাহের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ জুন। শনিবার থেকে এলএনজি সরবরাহর কথা ছিল। তবে সাবসি পাইপ লাইনে (সাগরের তলদেশে নির্মিত পাইপ লাইন) সমস্যার কারণে এলএনজি সরবরাহ শুরু করা যায়নি। জ¦ালানি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ত্রুটি সারিয়ে তুলতে আরও ১২ দিনের মতো সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছে এক্সিলারেট এনার্জি। সাগর উত্তাল থাকায় কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে এক্সিলারেটের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। তবে জ¦ালানি বিভাগ মনে করছে আগামী ১২ জুনের মধ্যে অবশ্যই সব ত্রুটি সারিয়ে এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। জ¦ালানি বিভাগের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় পাইপ লাইনের কাজ করা জটিল হচ্ছে। সাবসি পাইপ লাইনের নির্মাণ কাজ এক্সিলারেট এনার্জির দায়িত্বে। জাহাজ থেকে যে পাইপ লাইনটি সাগরের তলদেশের পাইপ লাইনের সঙ্গে যুক্ত হবে। সেখানেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে এক্সিলারেট এনার্জির ডুবুরিরা কাজ করছেন। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় ঠিক মতো কাজ করতে পারছে না। গত ২৪ এপ্রিল এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টার্মিনালটি কাতার থেকে এলএনজি নিয়ে বাংলাদেশে আসে। এরপর ১০ মে প্রথম দফায় এলএনজি সরবরাহের দিন ঠিক করা হলেও শেষে তা ঠিক রাখা সম্ভব হয়নি। এরপর ২৫ অথবা ২৬ মে দ্বিতীয় দফায় আরও একবার এলএনজি সরবরাহের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও সরবরাহ শুরু করতে পারেনি এক্সিলারেট এনার্জি। মহেশখালী জিটিসিএল-এর স্টেশন থেকে ৯১ কিলোমিটার পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় জাতীয় গ্যাস গ্রিডে যোগ হবে। টার্মিনালটি প্রতিদিন ৪৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। ১৫ বছর ধরে চুক্তির আওতায় রিগ্যাসিফিকেশন চার্জ নেবে এক্সিলারেট এনার্জি। সাগরে ভাসমান টার্মিনালের অবস্থান থেকে সাড়ে চার কিলোমিটারের সাবসি পাইপ লাইন দিয়ে এই গ্যাস জিটিসিএল এর স্টেশনে আসবে। মূল সমস্যাটি এই সাড়ে চার কিলোমিটার পাইপ লাইনে বলে জানা গেছে। এলএনজি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, সাড়ে চার কিলোমিটার পাইপ লাইনের মধ্যে দুটো ফ্রেঞ্জ (জোড়া) রয়েছে। পাইপ লাইনটিতে এক হাজার ১ হাজার পিএসআই চাপে গ্যাস সরবরাহ করতে গেলে কোন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যখনই দেড় হাজার পিএসআই চাপে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে তখন একটি ফ্রেঞ্জ থেকে গ্যাস বাইরে বের হয়ে আসছে। গত ৫ থেকে ৬ দিন ধরে ফ্রেঞ্জ টাইট করার চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু সাগর বেশ উত্তাল এক ঘণ্টার বেশি পানির নিচে গিয়ে ডুবুরি দল কাজ করতে পারছে না। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে উপরে পাইপ লাইন করলেও এ ধরনের সমস্যা স্যাস সঞ্চালন করে দেখা হয়। অন্যদিকে এই পাইপলাইনটি সাগরের তলদেশে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে তিনি আশা করেন জুনের প্রথম সপ্তাহেই এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। প্রতিদিন দুই হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে পেট্রোবাংলা। কিন্তু চাহিদা এর চেয়ে অন্তত এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বেশি। দেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বৃদ্ধির বিপরীতে গ্যাসের সঙ্কট দূর করতে সরকার এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিকভাবে কাতার এবং ওমান থেকে এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ৩২টি কোম্পানির কাছ থেকে এলএনজি আমদানি করা হবে। এক্সিলারেট দেশে প্রথম এলএনজি টার্মিনাল এলেও বছরেরর শেষ নাগাদ সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল আসবে। তখন দৈনিক এলএনজি সরবরাহ এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
×