ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের আহ্বান স্কুল শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২৭ মে ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের আহ্বান স্কুল শিক্ষার্থীদের

যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সাসের হাইস্কুলে সম্প্রতি একটি বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা শুক্রবার অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন। এ হামলায় তাদের বেশকিছু সহপাঠী নিহত হন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় গ্রামীণ এলাকার সান্তা ফি হাইস্কুলের ছাত্র দিমিত্রি পাগোর্টিজ একটি শর্টগান ও একটি রাইফেল দিয়ে বিদ্যালয়টির ভেতরে গুলি চালালে আট শিক্ষার্থীসহ ১০জন নিহত ও অন্তত ১৩ জন আহত হন। খবর এএফপি ও দ্য গার্ডিয়ানের। নিহতদের মধ্যে পাকিস্তানী শিক্ষার্থী সাবিকাহ শেখকে (১৭) গত বুধবার করাচীতে দাফন করা হয়েছে। এছাড়া গত শুক্রবার টেক্সাসে শিক্ষক সিনথিয়া তিসডালে (৬৪), দুই শিক্ষার্থী- ক্রিস্টানিয়ান রিয়ালি গ্রাসিয়া (১৫) ও ক্রিস্টোফার স্টোনির (১৭) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। স্কুলটিতে ১৮ মে’র ট্র্যাজিডির পর এক দল শিক্ষার্থী দেশটিতে ব্যাপকভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার বন্ধে অন্য অনেক বিষয় সংস্কারের পাশাপাশি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছেন। সান্তা ফি হাইস্কুলের শিক্ষার্থী মেগান ম্যাকগুইরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাস্তবতা হলো, আমরা যদি কিছু না করি, অন্য একটি শহরে কাল আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ তারা মানসিক স্বাস্থ্য ও স্কুলের নিরাপত্তা পুনর্গঠনের পাশাপাশি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চান। স্কুলটির আরেক ছাত্র ব্রি বাটলার বলেন, ‘আমরা পিছু হটব না। এটি কেবল এক সপ্তাহের বিষয় নয়।’ গত ১৮ মে শুক্রবার সকালে হিউস্টনের ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বের সান্তা ফি হাইস্কুলটিতে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। হামলাকারী সন্দেহে তখন ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী দিমিত্রিকে গ্রেফতার করা হয়। দিমিত্রি শর্টগান ও রিভলবার দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। বাবার লাইসেন্স করা এসব আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সে হামলা চালিয়েছিল বলে কর্মকর্তারা জানান। দেশটির স্কুলে ধারাবাহিকভাবে গুলিবর্ষণে রক্তপাতের তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো স্কুলটি। গত ফেব্রুয়ারিতে ফ্লোরিডার একটি হাই¯ু‹লে বন্দুকধারীর হামলায় ১৭ শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনার পর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়। এরপর হ্যারিস কাউন্টির শেরিফ এডওয়ার্ড গঞ্জালেস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সন্দেহভাজন একজনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে এবং অপর আরেকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’ সান্তা ফি ¯ু‹লে গুলির শব্দ শোনার পর ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তখন টেলিভিশন লাইভে সারিবদ্ধ হয়ে ¯ু‹ল ভবন থেকে শিক্ষার্থীদের বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। লেইলা বাটলার নামের একজন শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বলেন, সকাল পৌনে ৮টায় ¯ু‹লের ‘ফায়ার এ্যালার্ম’ বেজে ওঠে। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলির শব্দ শোনার কথা জানালে অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের পাশে গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, তিনটি গুলির শব্দ শোনার পর তিনি একটি গাছে উঠে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। পরে আরও চারটি গুলি হলে তারা কয়েকজন লাফিয়ে ¯ু‹লের বেড়া ডিঙ্গিয়ে আরেকজনের বাড়িতে গিয়ে পড়েন। ডাকোটা শ্রাডার নামের আরেক শিক্ষার্থী ফক্স ২৬ টিভিকে জানান, তার ১৭ বছরের মেয়েবন্ধু ফোনে তাকে আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। ‘আমার বন্ধু আহত হয়েছে। তার পায়ে গুলি লেগেছে।’ ¯ু‹লে এই প্রাণহানিকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের জানান, ¯ু‹লগুলো নিরাপদ রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে তার প্রশাসন সব কিছু করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
×