ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জমে উঠেছে চট্টগ্রামে ঈদের বাজার

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৭ মে ২০১৮

জমে উঠেছে চট্টগ্রামে ঈদের বাজার

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে ঈদের পোশাকের কেনাকাটা জমে উঠেছে টেরিবাজার ও সেন্ট্রাল প্লাজা কেন্দ্রিক থান কাপড়ের সেরা কালেকশন সেন্টারগুলোতে। তবে বুটিকস হাউসের পোশাকে কুটিরশিল্পের নৈপুণ্য। আর এসব কুটিরশিল্পে তৈরি পোশাক কালেকশনে ব্যস্ত তরুণীরা। টিনেজদের এসব কালেকশনের যোগান দিতে শুধু ভারত, থাইল্যান্ডই নয়, দেশের আনাচে কানাচে থাকা ঐতিহ্যবাহী নিপুণ ঘরগুলোর তৈরি পোশাক নিয়ে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। বিভিন্ন শপিংমলের ডিসপ্লেতে পছন্দসই পোশাক পাওয়া না গেলে ইন্ডিভিজুয়্যাল শো রুমগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে পছন্দের পোশাকের জন্য। রমজানের প্রথম ধাপ প্রায় শেষ। থান কাপড়ে তৈরি পোশাকের অর্ডার নেওয়াও প্রায় শেষ করে দিয়েছেন টেইলারিং শপগুলোতে। মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে রঙের যেমন ছোঁয়া থাকতে হবে বর্তমান ফ্যাশনের আলোকে তেমনি ডিজাইন ও কাটিংয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ না হলে পোশাকের আগ্রহ কমে যায়। স্প্রিং-এ পার্ল বসানো, এমব্রয়ডারি ব্লক, চুমকিসহ বিভিন্ন মোটিভে পোশাক তৈরির ছোঁয়া ধরে রাখতে কারিগররাও টিনেজদের টার্গেট করেই পোশাক তৈরিতে সারা বছর ব্যস্ত সময় কাটিয়ে তৈরি পোশাকের সমাহারগুলো তুলে ধরেছেন ডিসপ্লের মাধ্যমে। পোশাকে কটন, সিল্ক, মসলিন, লিলেন কটন, এন্ডি সিল্ক ও এন্ডি কটন কাপড়ে এবারের তরুণীদের আকর্ষণ কাড়তে ডিজাইনাররা তৈরি করেছেন হরেক রকমের ফ্যাশনেবল পোশাক। কাটিং ও ডিজাইনে এসেছে নতুনত্ব। কিন্তু বুটিকস হাউসগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠলেও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে আগের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে গেছে বলে চট্টগ্রামে ক্রেতা সাধারণের অভিমত। কটন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিন কাপড়ে হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, মেশিন এমব্রয়ডারি ও ব্লক প্রিন্টের শাড়িতে গৃহিণীদের মাতোয়ারা করতে বিক্রেতাদের টার্গেট থাকবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। তরুণ সমাজের মধ্যে এবার টি-শার্ট, পলো টি-শার্ট, ক্যাজুয়্যাল টি-শার্ট, ফরমাল টি-শার্ট, ফতুয়া ও পাঞ্জাবী কমন আইটেমে পরিণত হয়েছে। মেয়েদের থ্রী পিসের ন্যায় এবার ছেলেদের পাঞ্জাবি তৈরিতে নকশি ও ছাপানো গলার পাঞ্জাবির কাট পিস থান কাপড়ের আস্তানা হিসেবে খ্যাত টেরী বাজারে মিলছে। শিশুরাও পাঞ্জাবির সঙ্গে তাদের চাহিদা মেটাতে অভিভাবকদের নজরে দিয়ে বিচরণ করছে মার্কেটগুলোতে। নগরীর বিভিন্ন শপিংমলগুলোর মধ্যে আমিন সেন্টার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, আফমী প্লাজা, মতি টাওয়ার, সানমার ওশান সিটি, টেরী বাজারের শাড়ি ও থ্রী পিসের কালেকশন সেন্টার পরশমনি, ফেমাসসহ বিভিন্ন একক শো রুম। এছাড়াও ক্যাটস আই, সৃষ্টি, অঞ্জনস, ওয়ান ম্যান, সালসাবিলসহ নামিদামি বেশকিছু ডিসপ্লেতে এবার তরুণদের জন্য ভাল কালেকশন রেখেছে। আড়ংয়ের ফতুয়া ও পাঞ্জাবি কালেকশনে তরুণদের অবস্থান একধাপ এগিয়ে। প্রতিবছরই ঈদে নতুন চমক নিয়ে হাল ফ্যাশনের ডিজাইনের পোশাক নামে ভারতীয় ছবি ও আইটেম গার্লদের নামকে কেন্দ্র করে। আর বাঙালী পরিবারের মেয়েরা ঝুঁকে পড়ে এসব নামের উপর ভিত্তি করে পোশাকের খোঁজে। সে ফাঁকে অসাধু ব্যবসায়ী ও ডিজাইনাররা নাম বিকিকিনির মধ্য দিয়ে নিজেদের অবস্থান চাঙ্গা করে নেয়। মূলত দেশীয় সাজে, দেশীয় তৈরি পোশাকের প্রতি সচেতন নাগরিকদের নানা বুলি শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় বিভিন্ন শোরুমের ডিসপ্লেতে সাজানো পোশাকের ভিড়ে। এ ব্যাপারে টেরিবাজারের শাড়ি ও থ্রী পিসের এক্সট্রা কালেকশন সেন্টার হিসেবে খ্যাত পরশমনির মালিক মোহাম্মদ ইসমাইল জনণ্ঠকে বলেন, আমরা সামান্য মুনাফায় আমাদের কালেকশন গ্রাহকের হাতে তুলে দিচ্ছি। আধুনিকতা ও ফ্যাশনের কথা চিন্তা করতে গিয়ে কস্টিং বেড়ে গেছে। তবে দাম তুলনামূলকভাবে ততটা নাগালের বাইরে নয়। বগুড়া স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া থেকে জানান, ঈদের এখনও অনেকটা সময় বাকি। তবু তর সইছে না। কেনাকাটার বাদ্য বেজে উঠেছে মার্কেটগুলোতে। প্রায় সকলেরই কথা ঃ আগেভাগে কিনতে হবে। এখনই না সারলে ঈদের আগের উত্তপ্ত মার্কেটে পুড়তে হবে। তাছাড়া আর দিন চারেক পর সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ বেতন ও বোনাস পেলে তার উত্তাপ তাপানুকূল মার্কেটগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। ঈদের কেনাকাটায় এগিয়ে আছে বাড়ির গৃহিণীরা। আরও এ্যাডভান্সড এ কালের তরুণ-তরুণীরা। রমজানের আগেই কেনাকাটা কিছুটা সেরে ফেলেছে। এখন তাদের বাড়তি কেনাকাটা। উভয়েরই মার্কেট যাচাই শুরু হয়েছে। কোন মার্কেটে কোন পোশাকের কেমন দাম তা নখদর্পণে। সেলসম্যানরাও কমে যায় না। ক্রেতা কিনুক আর নাই কিনুক তারা দেখাতেই থাকে। তবে আধুনিক শোরুমগুলোতে এই ঝামেলা নেই। পুতুলের গায়ে তো পোশাক আছেই এর বাইরে নানাভাবে পোশাক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বগুড়া নগরীর বড় মার্কেটগুলোর মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বহুতল রানার মার্কেট, জলেশ^রিতলার ইয়াকুবিয়ার মোড় থেকে পূর্বদিকের কালিবাড়ি ও তার আশপাশে শহীদ আব্দুল জব্বার সড়ক ও রোমেনা আফাজ সড়কের দুই ধারে শো-রুমগুলো বর্ণিল সাজে সেজেছে। নগরীর নিউমার্কেট ও নওয়াববাড়ি মার্কেট তো আছেই। থ্রিপিস, টুপিস, শাড়ি কাপড় ও হাল ফ্যাশনের কমতি নেই। প্রতিবারের মতো এবারও ভারতীয় সিনেমা ও টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় নায়িকাদের পোশাকের নামে মিল রেখে বাহারি পোশাকগুলোর নামকরণ করা হয়েছে। এই পালা শুরু হয়েছে ঢাকা থেকে। যশোর স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, যশোরের মার্কেটের দোকানগুলো বাহারি রঙের পোশাকে সাজানো হলেও ঈদের কেনাকাটা এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। লেহেঙ্গা, থ্রিপিস, জিন্স-টপস, শাড়ি, জামা, জিন্স, পাঞ্জাবি-পাজামায় ঠাসা দোকানের বিক্রেতাদের তাই ব্যস্ততাও বাড়েনি। শনিবার যশোর শহরের এইচএমএম রোড (বড় বাজার) ও মুজিব সড়কের অভিজাত শপিংমল, শো-রুম, সিটি প্লাজা ও জেস টাওয়ারের শো-রুমগুলো ঘুরে এমন চিত্র ভেসে ওঠে। ৯ রোজা পেরিয়ে গেলেও মার্কেটের দোকানগুলোতে ঈদের ছোঁয়া লাগেনি। ক্রেতাহীন অলস সময় পার করছে তারা। তবে ছুটির এই দিন রাতে তরুণ-তরুণীদের আশা-যাওয়া শুরু হয়। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, অধিকাংশ পোশাকই এবার লিনেন ও সুতির কাপড় রাখা হয়েছে। এর বাইরে যে পোশাকগুলো আছে তাও বেশ সাদামাটা, হাল্কা কাপড়ের। এই গরমে ক্রেতাদের পছন্দের দিক বিবেচনায় এমন সব পোশাক তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শো-রুম স্বত্বাধিকারীরা।
×