গত ২৩ মে দৈনিক জনকণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় ‘ময়মনসিংহ মেডিক্যালে নিম্নমানের খাবার, চিকিৎসা সরঞ্জাম’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ডাঃ মোঃ ওয়ায়েজ উদ্দীন ফরাজী। তার স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘প্রকাশিত সংবাদটি মনগড়া, উদ্দেশ্যমূলক, বিভ্রান্তিকর। হাসপাতালে ব্যবসা নির্ভর একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচণায় এই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে যা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়। সংবাদে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে হাসপাতাল পরিচালক এক আদেশে সার্ভিস চার্জ আদায় করছেন। হাসপাতালে সেবা প্রদানে কোন ধরনের সার্ভিস চার্জ নেই। আছে ইউজার ফি। বর্তমান পরিচালক যোগদানের অনেক আগেই গত ২০০১ সাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই ইউজার ফি আদায় হয়ে আসছে। তবে আগে আদায় করা ইউজার ফি বিভাগীয় প্রধান ও হাসপাতাল পরিচালকের যৌথ হিসেবে জমা হতো। বর্তমান পরিচালক যোগদানের পর থেকে এই ইউজার ফি প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় সাধনের জন্য হাসপাতাল পরিচালকের হিসেবে জমা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত হারে এই ফি নেয়া হচ্ছে। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির নিয়মিত সভায় কমিটি প্রধান বিরোধী দলের নেতা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য বেগম রওশন এরশাদ মহোদয়ের অনুমোদনক্রমে রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে আদায় করা ইউজার ফি দিয়ে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি তাৎক্ষণিক মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ, ওয়ানস্টপে নিয়োগ দেয়া চিকিৎসক, মাস্টাররোল কর্মচারীদের বেতন পরিশোধসহ জরুরী স্বাস্থ্যসেবায় খরচ করা হচ্ছে। যা নিয়মিত অডিটের মাধ্যমে অনুমোদিত এসব খরচের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রকশিত সংবাদে সার্ভিস চার্জের নামে গত ২ বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার যে তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কাল্পনিক। ইউজার ফিয়ের টাকা রসিদের মাধ্যমেই আদায় করা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার সুযোগ নেই। হাসপাতালের জরুরী স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজন মিটিয়ে আদায় করা বাকি টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হচ্ছে। সেবার মান বাড়ায় রোগীর চাপও বাড়ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বহুগুণ বেড়েছে। গত ২০১-১৩ অর্থবছরে ইউজার ফি থেকে রাজস্ব আয় ছিল মাত্র সাড়ে ৩ কোটি। বর্তমান পরিচালক যোগদানের পর গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই রাজস্ব আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কোটি টাকার ওপরে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এই আয় ১২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাহলে প্রকাশিত সংবাদের প্রায় ১৫ কোটি হাতিয়ে নেয়ার তথ্যটি কতখানি সত্য-প্রশ্ন রাখছি। পথ্যের মান অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে রেকর্ড ভাল। হাসপাতালের প্রতিটি নির্মাণ ব্যয়ে স্বচ্ছতা রয়েছে। কোন ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ নেই।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, হাসপাতালে সেবার মান অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল। কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার ফলেই এসব সম্ভব হয়েছে। সর্বশেষ দেশে সরকারী হাসপাতালের মধ্যে প্রথম ময়মনসিংহ মেডিক্যালে জরুরী বিভাগে বহুল প্রত্যাশিত ২৪ ঘণ্টার ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সর্বশেষ দেশে সরকারী হাসপাতালের মধ্যে প্রথম ময়মনসিংহ মেডিক্যালে জরুরী বিভাগে বহুল প্রত্যাশিত ২৪ ঘণ্টার ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এর দৃশ্যমান সাফল্য দেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের সবকটি সরকারী হাসপাতালে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর নির্দেশনা দিয়েছে। অচিরেই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতে ক্যাথল্যাব, কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস মেশিন, রেডিওলজি বিভাগে সিটিস্ক্যান ও এমআরআই মেশিন স্থাপন হচ্ছে নিশ্চিত জেনে স্বার্থান্বেষী একটি মহল অপপ্রচারসহ নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: