ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়লেও রাজস্ব আদায় কমে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৬ মে ২০১৮

  বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়লেও  রাজস্ব আদায়  কমে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ৩ লাখ ৭৬ মেট্রিক টন বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে আমদানি হয়েছে ১৪ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১০ মাসে আমদানি হয়েছিল ১০ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। এসময় বেনাপোলে রাজস্ব আদায় কমেছে। প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। কাস্টম কর্তৃপক্ষ বলছেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কমে গেছে। শুল্কমুক্ত পণ্য ও কম শুল্কযুক্ত পণ্য বেশি আমদানি হওয়ার কারণে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও রাজস্ব আদায় হচ্ছেনা। বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে আমদানি হয়েছে এক লাখ ৪ হাজার ৪৯৩ দশমিক ৬৪ মেট্রিক টন, আগস্টে আমদানি হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ১৩৫ দশমিক ৮৯ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে আমদানি হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৬০৮ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন, নবেম্বর মাসে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৪ দশমিক ৮৭ মেট্রিক টন, ডিসেম্বর মাসে এক লাখ ৩৭ হাজার ৩০৪ দশমিক ৮৪ মেট্রিক টন এবং জানুয়ারি মাসে আমদানি হয়েছে এক লাখ ৬২ হাজার ১১৪ দশমিক ৬১ মেট্রিক টন পণ্য। ফেরুয়ারি মাসে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৪ মেট্রিক টন, মার্চ মাসে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯ দশমিক ৬১ মেট্রিক টন, এপ্রিল মাসে আমদানি করা হয়েছে এক লাখ লাখ ১১ হাজার ৮৯৯ দশমিক ৯১ মেট্রিক টন পণ্য। বেনাপোল সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, কম শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি হলে রাজস্ব কমবে এটা স্বাভাবিক। কাস্টমের জটিলতার কারণে মোটরপার্টসসহ শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কমে গেছে। যে কারণে আমদানি বাড়লেও রাজস্ব কমে যাচ্ছে। যশোরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আল আমিন গ্রুপের পরিচালক আনিসুর রহমান খান হিরু জানান, দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। অথচ এই বন্দরের কোন উন্নয়ন নেই। তার ওপর কাস্টম চলতি বছর থেকে অতিরিক্ত শুল্কহার নির্ধারণ করেছে। যাতে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আবার পণ্য এনে বন্দরে সময় ক্ষেপণেও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। যশোর-বেনাপোল সড়ক ৩৮ কিলোমিটারের পুরোটাই ভাঙ্গা, এতে পণ্য পরিবহনে বেশি টাকা লাগছে ট্রাক ভাড়ায়। সব মিলিয়ে বেনাপোল ব্যবসায়ীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ না থাকায় অনেক ব্যবসায়ী অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন। যেকারণে এখানে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, আমাদের উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যে আমদানি কমে গেছে। কম শুল্কযুক্ত পণ্য বেশি আসছে। এখন খাদ্যপণ্য বেশি আসছে। এতে শুল্ক খুবই কম। চালে মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক। যে কারণে আমদানি বাড়লেও রাজস্ব আদায় কমেছে। এটা আগামী মাসগুলোতে ঠিক হয়ে যাবে।
×