ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দাউদকান্দিতে গোমতীর ভাঙ্গন ॥ বসতবাড়ি ও গাছপালা বিলীন

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ২৬ মে ২০১৮

দাউদকান্দিতে গোমতীর ভাঙ্গন ॥ বসতবাড়ি ও গাছপালা বিলীন

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি, ২৫ মে ॥ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানে ফুলে উঠেছে গোমতীর পানি। আর এই পানির প্রবল স্রোতধারা নামতে শুরু করায় দাউদকান্দি, খোসকান্দি, লক্ষীপুরসহ গোমতী নদীর তীরবর্তী বাড়ি ভাঙ্গতে শুরু করেছে। প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই কোন পদক্ষেপ। গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে এখানকার চিত্র পরিবর্তন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ভয়াবহতায় কয়েক শ’ বসতবাড়ি ও গাছ গাছালি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে রয়েছে নদী পাড়ের আরও অনেক বসতবাড়ি, কবরস্থান, বিদ্যুতের খুঁটি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ভাঙ্গন রোধ করতে না পারলে যে কোন সময় গোমতী বেড়িবাঁধসহ দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলার কয়েকটি গ্রাম বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামের কর্নেল আব্দুল জাব্বারের বাড়ির আমীর হোসেন, কালা মিয়া, রমজান ভান্ডারী, মতিন ড্রাইভার ও মাওলানা আমীর হোসেন বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। সংবাদকর্মীদের দেখে নারী পুরুষসহ ছেলে বুড়ো এগিয়ে এসে বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবত নদী ভাঙ্গনে আমরা আতঙ্কে আছি। বসতঘর ছেড়ে ছেলে মেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন যাপন করছি , আপনারা ছাড়া কোন স্যার এ পর্যন্ত এখানে আসেনি। দিনরাত সবসময়ই আতঙ্কে আছি আমরা। বিগত মৌসুমে গ্রামবাসী মিলে বালির বস্তা ও বাঁশ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে কিছুটা রক্ষা হলেও এবছর বর্ষার শুরুতেই টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে ভাঙ্গন থামানো যাচ্ছে না। তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া মোল্লা বাড়ি এলাকায় এক কিলোমিটার ও দাউদকান্দির খোসকান্দি, চান্দের চর হয়ে লক্ষীপুর চকের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গোমতী নদীর তীরবর্তী হরিপুর বাজার, দুলারামপুর, আসমানিয়া, নারান্দিয়া, জিয়ারকান্দি, সোলাকান্দি, লালপুর, মৌলুভীখালপার, নুরপুর সংলগ্ন অংশে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের লোকজন। ভাঙ্গন রোধ করা না হলে কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। ভাঙ্গনের শিকার লক্ষীপুর গ্রামের মোবারক ও আমীর হোসেন বলেন, গত দশ বছরে আমাদের আবাদি জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে তৈরি করা বাড়িও আজ তিন দিনে গিলে খাচ্ছে রাক্ষুসে গোমতী। এখন আমাদের পথে বসা ছাড়া উপায় নেই। একই গ্রামের মতিন ড্রাইভার বলেন, নদী ভাঙ্গনের ফলে বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়লে কয়েকবার পল্লী বিদ্যুত অফিসে জানালেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। এখন খুঁটির গোড়ার মাটি না থাকায় জমিনের ওপর পড়ে রয়েছে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুত সমিতি-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙ্গন এলাকায় আমাদের কয়েকটি খুঁটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নতুন লাইন নির্মাণের কাজ চলছে।
×