ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কমেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, ব্রয়লার মুরগির দামও কমতির দিকে

এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরেছে

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২৬ মে ২০১৮

এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ টাকা কমে প্রতিকেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। রাজধানীর খুচরা বাজারে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ। রমজানের শুরুতে ৪০-৫০ টাকা খরচ করে প্রতিকেজি পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ভোক্তাকে। ধীরে ধীরে কমে আসছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ১০ টাকা কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম কমছে না। চড়া মাছের বাজার। সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমে আসছে। এছাড়া চাল, ডাল, আটা, ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট এবং মিরপুর সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ছুটির দিন বাজার করতে এসে পেঁয়াজের দামে স্বস্তি ছিল ভোক্তাদের। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকায় বাজারে উত্তাপ ছিল না। বাবর রোডের বাসিন্দা নিয়ামত হোসেন বাজার করছিলেন মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটে। নিত্যপণ্যের দাম প্রসঙ্গে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, রমজানের শুরুতে বাজারে যে গুমোট ভাব ছিল সেটা কেটে গেছে। মনে হচ্ছে, নতুন করে আর কোন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম কমে আসায় বাজারে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে এসেছে। বিশেষ করে রমজানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পেঁয়াজের। সেই পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১৫ টাকা দাম কমে গেছে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দামও কমতির দিকে। রোজার শুরুতে বেগুনের দাম যেভাবে বেড়েছিল সেটা এখন আর নেই। বেগুনসহ অধিকাংশ সবজি ৫০-৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, রোজার শুরু থেকে এবার ছোলার বাজার স্থিতিশীল ছিল। বাজারে প্রতিকেজি ছোলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কেজিতে ৫ টাকা কমেছে ছোলার দাম। কাপ্তান বাজারে প্রতিকেজি ছোলা ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া মোটা দানার কাবুলি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা কেজি। ওই বাজারের জামশেদ স্টোরের বিক্রয় কর্মকর্তা কাঞ্চন মিয়া জানান, রোজার শুরুতে ছোলা ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দাম কমেছে। সামনের দিনগুলোতে ছোলার দাম আরও কমবে। তিনি বলেন, ছোলার পাশাপাশি চাল, ডাল, আটা, চিনি, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এছাড়া চিনি কর্পোরেশনের প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। ডাল জাত ও মানভেদে ৫৫-১১০, চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৫৮-৬৬, মোটা চাল ৩৮-৪২ এবং মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৪৮-৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিলিটার সয়াবিন ৮৫-৮৮, পাঁচ লিটার বোতল ৪৮০-৫২০, পামওয়েল লুজ ৭০-৭২ এবং পামওয়েল সুপার ৭৩-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিহালী ডিম ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে, সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে ভোক্তাদের। রোজার আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে দেশী গরু ৪৫০, ভারতীয় গরু ৪২০, মহিষ ৪২০, ভেড়া ৬০০ এবং খাসির মাংসের দাম ৭২০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু বাজারে কোথাও এই দামে মাংস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০-৫০০ এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। ফকিরাপুল বাজারের মাংস বিক্রেতা রিপন জানান, আস্ত গরু ও খাসি যে দামে কেনা হয় তাতে সিটি কর্পোরেশনের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়। তবে সম্ভব, যদি হাটগুলোতে চাঁদাবাজি ও অতিরিক্ত হাসিল আদায় বন্ধ করা যায়। হাসিল ও চাঁদাবাজির কারণে গরুর দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে খুচরা বাজারেও মাংসের দাম বেশি। তবে মাংস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোজা আসলেই সব ধরনের মাংসের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। রাজধানীতে মাংস ব্যবসায়ীদের একটি বড় সিন্ডিকেট চক্র রয়েছে। প্রকৃত মাংস ব্যবসায়ীদের কেউ এ শিল্পের নেতৃত্বে নেই। ফলে স্থানীয় ইজারাদার, মাস্তান এবং সংঘবন্ধ চক্রের হাতে জিম্মি রাজধানীর পশুরহাট খ্যাত গাবতলীর বাজার। এ কারণে মাংসের দাম কমতে পারছে না। আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
×