মস্তিষ্ক : এ্যালবার্ট আইনস্টাইনকে মানব ইতিহাসের একজন অন্যতম সফল বিজ্ঞানী হিসেবে মান্য করা হয়। তাই এত বড় একজন জ্ঞানীর মস্তিষ্ক সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি বা বাধা ধরা থাকাটা অসমীচীন নয়। তবে সেটা যদি তার বা তার পরিবারের সদস্যদের অনুমতি সাপেক্ষে করা হতো তাহলে সেটা মঙ্গলজনক হতো।
আইনস্টাইন মৃত্যুর পূর্বে তার দেহকে পুড়িয়ে ফেলার জন্য বলে গিয়েছিলেন এবং সেই সঙ্গে তার দেহের ছাইগুলোকে গোপনে ছড়িয়ে দিতে বলেছিলেন যাতে কেউ সহজে তার সমাধিস্থলের খোঁজ না পায়। কিন্তু ১৯৫৫ সালে আইনস্টাইন মারা যাওয়ার পর ডাক পাওয়া চিকিৎসক থমাস হার্ভে আইনস্টাইনের পরিবারের সদস্যদের অনুমতি ছাড়াই তার মস্তিষ্ক অপসারণ করে ফেলেন এবং নিজে সংরক্ষণে যাতে করে তিনি এই মহাবিজ্ঞানীর মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করতে পারেন।
এক প্রতিবেদকের জানার আগ পর্যন্ত চিকিৎসক থমাস হার্ভে একটি বিয়ার কুলারের ভেতরে প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক রেখে দিয়েছিলেন।
স্কি লিফট : ২০১২ সালের বসন্তের কোন একদিন চেক প্রজাতন্ত্রের এক রিসোর্ট থেকে একটি স্কি লিফট চুরি হয়ে যায়! আর সেই চুরি তদন্তে তাৎক্ষণিক ডাক পায় চেক পুলিশ। চোর শুধু যে স্কি লিফটই চুরি করেছে তা নয়, বরং স্কি লিফটের ৩টি স্টিল কলাম এবং সাপোর্টিং অবকাঠামোর সঙ্গে অর্ধ-মাইলের বেশি স্টিলের তারও চুরি করে নিয়ে যায়।
কুকুরের মল : কুকুর, বিড়াল কিংবা আদরের পোষা প্রাণী চুরি হওয়ার ঘটনা শুধুমাত্র সিনেমায় নয় বাস্তবেও অনেক হয়েছে। কিন্তু কখনও কি ভেবেছেন চোর আপনার পোষ্য প্রাণীর মল ও চুরি করতে পারে? না ভেবে থাকলে আর ভাবতে হবে না, কারণ এমন ঘটনা ইতোমধ্যে ঘটে গেছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের দে ময়েন শহরে এক বাড়িতে গ্যারেজ ভাঙ্গার চেষ্টা চালানো হয় ট্র্যাক চুরির উদ্দেশ্যে। কিন্তু চুরি করতে ব্যর্থ হয়ে চোর শেষ পর্যন্ত সেই বাড়ির মালিকের কুকুরের এক ব্যাগ মল সঙ্গে করে নিয়ে যান। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ১ ডলার।
সমুদ্র সৈকত : সমুদ্র সৈকত থেকে বালু চুরি করা যে কোন সমুদ্র সৈকতের জন্যই একটি সমস্যা। কিন্তু জ্যামাইকার কোরাল স্প্রিং রিসোর্টের ঘটনা ছিল গুরুতর। ২০০৮ সালে চোররা বিক্রির জন্য এই সৈকত থেকে প্রায় ৫০০ ট্রাক ভর্তি করে বালু নিয়ে গিয়েছিল।
ছোট বাড়ি : ২০১৫ সালে ওয়াশিংটনের ক্রিস হ্যাম্পেল নামের এক মহিলা লেক সংলগ্ন তার ছোট বাড়ির গেট কাঁটা অবস্থায় দেখতে পান। ক্রিস হ্যাম্পেল ধারণা করেন, এটা কোন সিঁদকাটা চোরের কাজ। কিন্তু তিনি তখনও জানতেন না এর আসল পরিস্থিতি কি।
চোর ১০ ফিট বাই ২০ ফিট আকৃতির পুরো বাড়িটি ফাউন্ডেশন থেকে আলাদা করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ১০ মাইল দূরে চুরি হওয়া বাড়িটির সন্ধান পায়।
ফাজিতাস : ২০১৭ সালে টেক্সাসের ক্যামেরন কাউন্টি কিশোর সংশোধন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যান যখন প্রায় ৮০০ পাউন্ডের মতো ফাজিতাস বিতরণ করা হয়। কারণ এই খাবারটি কখনই সংশোধন কেন্দ্রে রান্না করা হতো না। এ ঘটনার তদন্তে নেমে জানা যায় যে, ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী ফাজিতাস সরবরাহের শিডিউল পরিবর্তন করে বিগত ৯ বছরে ২ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যমানের ফাজিতাস চুরি করে আসছিলেন। চাকরিচ্যুত হওয়ার পর তদন্তকারী দল তার বাসার ফ্রিজ থেকে কয়েক প্যাকেট ভর্তি ফাজিতাস খুঁজে পান। যদিও সে অধিকাংশই বিক্রি করে দিয়েছিল।
সেতু : ২০১১ সালে পেনসিলভানিয়ার নর্থ বিভার টাউনে একটি ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সেতু কেটে চোররা প্রায় ১ লাখ ডলার মূল্যের ইস্পাত চুরি করে নিয়ে যায়। তবে সেতু চুরির এই ঘটনাই এটাই প্রথম নয়। ২০০৪ সালের দিকে ইউক্রেনের একটি গ্রামে ৩৬ ফুট দীর্ঘ আরেকটি সেতু চুরি হয়েছিল। সেতু চুরির মূল উদ্দেশ্য ছিল এর লোহাগুলোকে বাজারে বিক্রি করা। যার ফলে দুই পাশে কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ট্রেন : ২০০৪ সালে ইউক্রেনে সেতু চুরির ঘটনায় হয়ত চোর মহোদয়গণ সন্তুষ্ট হতে পারেননি। যার কারণে এর এক সপ্তাহ পরপরই তারা একটি ঐতিহাসিক ট্রেন উন্মুক্ত জাদুঘর থেকে চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এক ভাঙ্গারি লোহার ইয়ার্ডে ট্রেনটিকে পাওয়া যায়। তদন্তকারীরা ধারণা করেন, চোররা ট্রেনটি সরানোর জন্য ভুয়া ডকুমেন্ট প্রদান করে এবং পরবর্তীতে একটি ট্রেনে করে সেটিকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
এ্যালিয়েন : শুনে হাসি আসাও স্বাভাবিক আবার চমকে যাওয়াও স্বাভাবিক যে এ্যালিয়েন কীভাবে চুরি করা সম্ভব? এর অস্তিত্ব নিয়েই যেখানে সবাই দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে।
২০১১ সালের দিকে ইংল্যান্ডের মার্গারেট ওয়েলসের বাড়ি থেকে চোরেরা যখন অলঙ্কার ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায় তখন সকলে বিস্মিত হোন এটা জানতে পেরে যে, মার্গারেট ওয়েলসের মেয়ের তৈরি মানব আকৃতির একটি এ্যালিয়েনের মূর্তিও চোররা সঙ্গে নিয়ে গেছে।
এ্যালিয়েনের মূর্তিটি অবশ্য পরবর্তীতে বাড়িতে ফিরেছে। কেননা চোররা মূর্তিটি একটি লেকে ফেলে দেয়ার পর তা উদ্ধার করে তদন্তকারী দল।
হাঙ্গর : কুকুর চুরির কথা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু হাঙ্গর চুরির কথা কে কবে শুনেছে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ২০০৮ সালে ব্রিটেনে। এক ভদ্রলোক শখের বশে তার গ্যারেজে খুলেছিলেন এ্যাকুরিয়াম শপ। সেখানে ৫ ফুট একটি এ্যাকুরিয়ামে ছিল মা হাঙ্গর ও তার কয়েকটি বাচ্চা। একদিন সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখেন চুরি গেছে তার শখের মা হাঙ্গরটি। এ রহস্যের সমাধান হয়নি আজও।
তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট
শীর্ষ সংবাদ: