ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিদ্ধিরগঞ্জে তীব্র যানজট

বেতন দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৫ মে ২০১৮

বেতন দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে প্যাপিলন নিট কম্পোজিট লিঃ নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শ্রমিকরা সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার নারায়ণগঞ্জ-আদমজী ইপিজেড-ডেমরা সড়কে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এতে এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। যানজটে আটকে পড়ে রোজাদারসহ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। খবর পেয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও থানা পুলিশ এসেও সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে পারেনি। পরে শ্রমিক নেতারা দুপুর ১২টায় এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে ও বেতন পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে রাস্তা থেকে ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার এমএস টাওয়ারে অবস্থিত প্যাপিলন নিট কম্পোজিট লিঃ এর ইউনিট-২ ও একই স্থানের ইকবাল গ্রুপে ইউনিট-১ এ মোট ৪শ’ ৮০ শ্রমিক কাজ করছে। তাদের গত এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। মঙ্গলবার ওই কারখানার ইউনিট-১ এর ২শ’ ৮০ জন শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল। পরে মালিকপক্ষ বৃহস্পতিবার বেতন দেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা সকালে কারখানার সামনে এসে দেখতে পান মালিকপক্ষ কারখানাটি তালা লাগিয়ে চলে গেছেন। ফলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা সকাল ৯টায় সিদ্ধিরগঞ্জ পুল বাসস্ট্যান্ডে এসে অবরোধ সৃষ্টি করে। অবরোধে ইউনিট-২ এর শ্রমিকদের সঙ্গে ইউনিট-১ এর শ্রমিকরাও যোগ দেয়। এ সময় বেতন পরিশোধের দাবিতে তারা মালিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও থানার উর্ধতন কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা এসে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরানোতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কয়েক দফায় রাস্তা থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হলেও আবারও তারা রাস্তায় এসে অবরোধ করে রাখে। এতে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। অবরোধের কারণে এ সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টায় শ্রমিক নেতারা এসে শ্রমিকদের বুঝিয়েÑশুনিয়ে ও বেতন পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। পরে শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।নারী শ্রমিক সীমা আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বেতন চাইতে গেলে মালিকপক্ষের লোক ফ্লোর ইনচার্জ সাইফুল আমাকে মারধর করেন। শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের ও কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বকেয়া বেতন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন না দিয়ে ফ্যাক্টরি তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। ফলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা সকাল ৯টা থেকে রাস্তায় অবস্থান করছি। শিল্পাঞ্চল পুলিশ-৪, নারায়ণগঞ্জ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মতিউর রহমান জানান, শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। আবার মার্চ মাসের বেতন এখনও কিছু কিছু বাকি রয়েছে বলে শ্রমিকরা আমাদেরকে জানায়। বৃহস্পতিবার বেতন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন না দিয়ে ফ্যাক্টরি তালা দিয়ে চলে যান। শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকে আন্দোলন করছে। কিছুক্ষণ পর পর তাদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু আবারও তারা সড়কে এসে অবস্থান নেয়। এভাবে তাদেরকে তিনবার রাস্তা থেকে সরানো হয়েছিল। দুপুর ১২টায় শ্রমিকরা তাদের নেতাদের সঙ্গে বিকেএমই’র অফিসে বিষয়টি জানানোর জন্য চলে যায়। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
×