ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে ঘরে ফেরা

পহেলা জুন থেকে পাওয়া যাবে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২৫ মে ২০১৮

পহেলা জুন থেকে পাওয়া যাবে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী এক জুন থেকে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হচ্ছে। ৬ জুন পর্যন্ত টানা ছয়দিন টিকেট বিক্রি করা হবে। বৃহস্পতিবার রেল ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। যদিও ঈদ প্রস্তুতি সভায় দুই জুন থেকে টিকেট বিক্রির প্রস্তাব করা হয়েছিল। পরবর্তীতে রেলমন্ত্রী একদিন আগে থেকে টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে রেলওয়ের ঈদ প্রস্তুতির বিস্তারিত তুলে ধরেন। মন্ত্রী জানান, প্রথম দিন ১ জুন বিক্রি হবে ১০ জুনের টিকেট, ২ জুন বিক্রি হবে ১১ জুনের টিকিট, ১২ জুনের টিকেট ৩ জুন, ১৩ জুনের টিকেট ৪ জুন, ১৪ জুনের টিকেট ৫ জুন এবং ১৫ জুনের টিকেট ৬ জুন বিক্রি হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি চলবে। প্রতি যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকেট ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। অগ্রিম টিকেট বিক্রির জন্য ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা রাখা হবে। মহিলাদের জন্য থাকবে পৃথক দুটি কাউন্টার। মন্ত্রী জানান, ঢাকায় ফেরার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১০ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত। ১৯ জুনের টিকেট বিক্রি হবে ১০ জুন, ২০ জুনের টিকেট ১১ জুন, ২১ জুনের টিকেট ১২ জুন, ২২ জুনের টিকেট ১৩ জুন, ২৩ জুনের টিকেট ১৪ জুন ও ২৪ জুনের টিকেট বিক্রি হবে ১৫ জুন পর্যন্ত। রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় অগ্রিম টিকেট বিক্রি হবে। এবার ঈদে টিকেট কালোবাজারি রোধে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মন্ত্রী বলেন, যে কোন মূল্যে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ করা হবে। রেলমন্ত্রী বলেন, টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে সব বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র‌্যাবের সহযোগিতায় টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। ট্রেনে যাতে যাত্রীরা নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, রেলে যে যাত্রী আসা যাওয়া করে, তারচেয়েও বেশি যাত্রী আসা-যাওয়ার সুযোগ করে দেব। ট্রেন প্রতিদিন দুই লাখ ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করে। ঈদ উপলক্ষে দুই লাখ ৭৫ হাজারের ওপর যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিন লাখও যেতে পারেন বলেও জানান মন্ত্রী। টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করা যাত্রীদের বিষয়ে করণীয় জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলে আসা-যাওয়া মানুষ বেশি পছন্দ করেন। যাত্রীরা স্বেচ্ছায় ছাদে ওঠে। ছাদে ওঠা আমরা কোনও অবস্থাতেই মেনে নিই না। কর্তব্যরতদের বলেছি, ছাদে যারা উঠবে তাদের নামিয়ে দিয়ে ভেতরে বসে ভ্রমণের জন্য ব্যবস্থা নিতে। বেআইনী কাজ আমরা অনুমোদন করতে পারি না। আমাদের দায়িত্ব হলো ভদ্রভাবে তাদের নিবৃত করা। ঈদের সময় কৃত্রিম সঙ্কট হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, রেলের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি (শুক্রবারসহ) বাতিল করা হয়েছে। নাশকতা নৈরাজ্য আমরা কামনা করি না। যেখানে নাশকতা যেখানে দুর্নীতি, সেখানে আমাদের বাহিনী প্রস্তুুত আছে। এর বাইরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন থাকবে। রেলমন্ত্রী জানান, ঈদ উপলক্ষে সর্বমোট ১ হাজার ৪০৫টি কোচ (বিদ্যমান-১২২১+সপ আউট-টার্ন-১৮৪) চলাচল করবে। সর্বমোট ২২৯টি লোকোমোটিভ ব্যবহার করা হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া কোনও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে না। ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করবে না বলেও জানান মন্ত্রী। ১১ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সকল আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন ॥ ঈদ উপলক্ষে সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করছে মন্ত্রণালয়। ট্রেনগুলো হলো-দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল : ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, চাঁদপুর স্পেশাল-১ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, চাঁদপুর স্পেশাল-২ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, রাজশাহী স্পেশাল : রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী, পার্বতীপুর স্পেশাল : পার্বতীপুর-ঢাকা-পার্বতীপুর, সকল স্পেশাল ট্রেন ঈদের পূর্বে ১৩-১৪-১৫ জুন তিনদিন এবং ঈদের পরে ১৮ জুন হতে ২৪ জুন ৭ দিন চলাচল করবে। এছাড়াও শোলাকিয়া স্পেশাল-১ : ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার, শোলাকিয়া স্পেশাল-২ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ঈদের দিন চলাচল করবে। সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, মহাপরিচাল মোঃ আমজাদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×