ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এক সপ্তাহে ৫২ জন

র‌্যাব-পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে আরও ১০ মাদক কারবারি নিহত

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৫ মে ২০১৮

র‌্যাব-পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে আরও ১০ মাদক কারবারি নিহত

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আরও ১০ মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে অন্তত ৫২ জন মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই মাদক কারবারি বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তৃপক্ষের দাবি। সারাদেশে মাদক কারবারি, সরবরাহকারী, মাদকসেবীসহ ১৪ হাজার জনের তালিকা তৈরি করেছে সরকারের ৪টি গোয়েন্দা সংস্থা। চার গোয়েন্দা সংস্থার তালিকাতে যারা ‘কমন’ তাদের ‘শর্ট লিস্ট’ এর আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শর্ট লিস্ট তালিকায় গডফাদার বা শীর্ষ শ্রেণীর রয়েছে প্রায় ২শ’ মাদক ব্যবসায়ী। রাজধানী ঢাকাতে খুব শীঘ্রই মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা অনুযায়ী সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে এবং মাদকের কারবারে যুক্ত সে সংসদ সদস্য, সরকারী কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা বা সাংবাদিক যেই হোক না কেন কেউ ছাড় পাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে, গত ৩ মে র‌্যাবের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদর দফতরে জঙ্গীবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তার বক্তৃতায় বলেছেন, ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে র‌্যাব যেভাবে অভিযান চালিয়ে সাফল্য অর্জন করেছে, এখন মাদকের বিরুদ্ধেও সেভাবে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে মাদকের ছোবল থেকে দূরে থাকতে পারে, ব্যাপকভাবে সে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত ৪ মে র‌্যাব মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা শুরু করলেও ১৭ মে থেকে র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশও মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা শুরু করে দেশব্যাপী। মাদকবিরোধী অভিযানের পর থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ৫২ মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদকের কারবারে যুক্ত সংসদ সদস্য, সরকারী কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা বা সাংবাদিক- যেই হোক না কেন কেউ ছাড় পাবে না। বৃহস্পতিবার ফার্মগেটে ঢাকা মহানগরে মাদকবিরোধী অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা অনুযায়ী দেশের সব মাদক ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের সঙ্গে যেই যুক্ত হোক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরতে গিয়ে মাদকাসক্ত কন্যা ঐশী রহমানের হাতে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান খুন হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের জন্য কী ঘটে, তা আপনারা দেখেছেন। সুতরাং আপনার সন্তান, ভাই, প্রতিবেশী- কে কি করছে লক্ষ্য করুন। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশকে তথ্য দেয়ার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একই অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের’ তালিকা প্রস্তুত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে। কতজনের তালিকা করা হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্ভুল তালিকা যাতে প্রস্তুত হয়, আমরা সেজন্য যাচাই-বাছাই করছি। দুই-একদিনের মধ্যে তা চূড়ান্ত হবে। ঢাকা মহানগরের জনগণের সহযোগিতায় আমরা জঙ্গীবিরোধী অভিযানে সফল হয়েছি। মাদকের এই ভয়াবহতা থেকেও আমরা সফল হতে পারব বলে পুলিশ কমিশনারের দাবি। নিহত আরও ১০ জন ॥ সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে দেশের সাত জেলায় বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে আরও অন্তত ১০ জন গুলিতে নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ফেনীতে দুইজন, কুমিল্লায় দুইজন এবং নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া একজন করে মোট ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে। এছাড়া মাগুরায় দুইজন এবং সাতক্ষীরা ও কক্সবাজারে একজন করে মোট চারজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ। ঘটনাস্থলে মাদক থাকায় ওই তিনজনও মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল বলে তারা সন্দেহ করছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে কথিত এসব বন্দুকযুদ্ধ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের দাবি। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছে। ফেনীতে নিহত দুই জন ॥ ফেনীর ফুলগাজীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সাহমিত হোসেন শামীম (২৫) ও মজনু মিয়া মনির (২৩) নামে দুইজন নিহত হয়েছন। ফুলগাজী থানার ওসি মোঃ হুমায়ুন কবীর গণমাধ্যমকে বলছেন, বুধবার মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলা আনন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামে মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির সময় ওই দুইজন নিহত হয়। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে বলে ওসির দাবি। ফুলগাজী থানার ওসি বলেন, চোরাকারবারিরা মাদকের চালান নিয়ে ভারত সীমান্ত দিয়ে দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামে প্রবেশ করেছে খবর পেয়ে পুলিশ রাতে সেখানে অভিযানে যায়। জামুয়া রাস্তার মাথায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শামীম ও মনির গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি। ওসি বলছেন, এই অভিযানে পুলিশের আট সদস্য আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড কার্তুজ, ৭০০ ইয়াবা ও দুই শতাধিক বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। তবে শামীমের পরিবার বলছে, পুলিশ বুধবার দুপুরে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। পুলিশ আমাদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় রাতে ওকে গুলি করে হত্যা করেছে। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন নিহত মজনু মিয়া মনিরের বোন রেজিনা বেগম। তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে এসে একদল লোক বুধবার রাতে ফেনী শহরের বড় মসজিদ এলাকায় মনিরের বোনের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে না পারায় ভোর রাতে পুলিশ মনিরকে গুলি করে মেরেছে। ওসি হুমায়ুন কবীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ কাউকে বাড়ি থেকে তুলে আনেনি। টাকা চাওয়ার কোন ঘটনাও ঘটেনি। মাদকের টাকায় তাদের পরিবার চালাত বলে স্বজনরা এসব মনগড়া অভিযোগ করেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ফেনীতে পুলিশ ও র‌্যাবের এই কথিত বন্দুকযুদ্ধে গত নয় দিনে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে আইনশৃঙ্খল বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। কুমিল্লা ॥ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বাবুল ওরফে লম্বা বাবুল (৩৫) এবং সদর দক্ষিণে রাজিব (২৬) নামের দুইজন নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ১টার দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগর সলাকান্দা নতুন রাস্তার মাথায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এবং রাত সোয়া ২টায় সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা সংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন ট্রাংক রোডের গোয়ালমথন এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের দাবি। নিহত বাবুল চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বৈদ্দেরখিল গ্রামের হাফেজ আহাম্মদের ছেলে। আর রাজিব সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি সংলগ্ন চাঙ্গিনী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। দুজনেই থানার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী এবং বাবুলের বিরুদ্ধে মাদক আইনের ৫টি এবং রাজিবের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবুল ফয়সল বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর এলাকার রামরায় এলাকা থেকে বাবুলকে তারা গ্রেফতার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পরে তাকে নিয়ে মাদক উদ্ধারে আমানগর এলাকায় যায়। আমানগর নতুন রাস্তার মাথার মন্তাজের বাগানে অভিযানকালে বাবুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির মধ্যে মাদক ব্যবসায়ী বাবুল গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি। তিনি বলছেন, এই অভিযানে থানার এসআই মোজাহের, কনস্টেবল মিজান ও ফরিদ আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি এবং ২০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। আর সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোঃ নজরুল ইসলাম বলেছেন, মাদকের চালান আসার খবরে রাত সোয়া ২টার দিকে তারা গোয়ালমথন এলাকায় অভিযানে যান। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা একটি প্রাইভেটকারে মাদকদ্রব্য নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ী রাজিব ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশও তখন গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় রাজিব। কুমিল্লা মেডিক্যালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবকে মৃত ঘোষণা করেন বলে ওসি জানান। তিনি বলছেন, ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজসহ একটি এলজি, ৫০ বোতল ফেনসিডিল এবং ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। এ অভিযানে তিনি নিজে এবং এসআই শামসুদ্দিন ও এসআই অঞ্জন কুমার নাথ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসির নজরুলের দাবি। মাগুরা ॥ মাগুরা শহরতলীর পারনান্দুয়ারী হাউজিং প্রজেক্ট এলাকা থেকে বুধবার রাতে আইয়ুব শেখ ও মিজানুর রহমান কালু নামে দুইজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) সার্কেল ছয়েরউদ্দিন বলছেন, মাদক চোরাকারবারিদের দুইপক্ষের গোলাগুলিতে ওই দুইজন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। আইয়ুব শেখের নামে হত্যা ও মাদক অইনে ২১টি এবং কালুর বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। আইয়ুব শহরতলীর নীজনান্দুয়ালী এলাকার জব্বার শেখের ছেলে। আর কালু শহরের ভায়না টিটিডিসি পাড়া এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে। সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, রাত দেড়টার দিকে হাউজিং প্রজেক্ট এলাকায় গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুইজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তাদের মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গ্রাম হেরোইন, তিনটি রাইফেলের গুলি ও ছয়টি বন্দুকের গুলির খোসা উদ্ধার করেছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা ছয়েরউদ্দিন। নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোঃ সেলিম (৩২) নামে সন্দেহভাজন এক মাদক চোরাকারবারি নিহত হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলছেন, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে দক্ষিণ নিমাইকাশারী এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম বাগমারা সানারপাড় এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। পুলিশ বলছে, সেলিম এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। স্থানীরা তাকে ‘ফেনসি সেলিম’ হিসেবে চেনে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পরিদর্শক নজরুল বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে পুলিশের একটি দল রাতে দক্ষিণ নিমাইকাশারী এলাকায় গেলে সংঘবদ্ধ একটি দল পুলিশের দিকে গুলি করে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তখন অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি শুটারগান, একটি চাকু, ৫০০ ইয়াবা, ৫০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয় বলে জানান পরিদর্শক নজরুল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। তারা খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান পরিদর্শক নজরুল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা ও মাদক মামলার এক আসামি নিহত হয়েছে। বুধবার রাত ২টার দিকে উপেজলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ স্টিল ব্রিজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার মোড় এলাকায় গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে বলে আখাউড়া থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফদারের দাবি। নিহত আমির খাঁ উপজেলার চানপুর এলাকার সুরুজ খাঁর ছেলে। তার বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলা, একটি হত্যা মামলাসহ মাদক চোরাচালান, সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মোট ১২টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওসি বলেন, রাতে পুলিশের একটি দল বনগজ স্টিল ব্রিজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার মোড় এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে আমির খা ও তার সহযোগীরা পুলিশকে দেখে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও তখন পাল্টা গুলি ছোড়ে। ওই গোলাগুলির মধ্যেই আমির নিহত হন বলে ওসি মোশারফ হোসেনের দাবি। তিনি বলেন, এ অভিযানে আখাউড়া থানার একজন এএসআই ও দুজন কনস্টেবলও আহত হয়েছেন। তাদের আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি কার্তুজ, একটি রামদা, ১০ কেজি গাঁজা ও আটটি কফের সিরাপ উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন ওসি। সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রাম থেকে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার পরিচয় জানাতে না পারলেও ঘটনাস্থলে মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কালিগঞ্জ থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান। ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পিয়ার আলী জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে চৌবাড়িয়া গ্রামের সিদ্ধেরপুকুর এলাকায় রাস্তার পাশে রক্তাক্ত ওই লাশটি পড়ে থাকতে দেখে তারা থানায় খবর দেন। পরে কালিগঞ্জ থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব হোসেন ও উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে লাশটি নিয়ে যান। নিহত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৪৫ থেকে ৫০ বছর। পরনে ছিল সাদা রঙের ফুল শার্ট ও চেক লুঙ্গি। তার চোয়ালে ও গলায় দুটি গুলির চিহ্ন ছিল বলে জানান পিয়ার আলী। ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, লাশের পাশ থেকে একটি দেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি নতুন গামছা ও একটি পলিথিনের বস্তায় ৪৮ বোতল ফেনসিডিল পেয়েছেন তারা। তিনি বলেন, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছে। কক্সবাজার ॥ কক্সবাজার শহরে মাদক মামলার এক আসামির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আফরাজুল হক টুটুল জানান, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে কলাতলী এলাকা থেকে লাশটি তারা উদ্ধার করেন। নিহত মোহাম্মদ হাসান (৩৬) কলাতলীর আদর্শগ্রাম এলাকার খুইল্যা মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় মাদক আইনের বেশ কয়েকটি মামলা থাকার কথা বলেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোন্দলের জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে এক হাজারের বেশি ইয়াবা ও একটি দেশে তৈরি বন্দুক উদ্ধারের কথাও বলেছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। হাসানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
×