ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৭ বছরে বাজেট থেকে সরকারী ব্যাংকগুলোকে ২১ হাজার কোটি টাকা যোগান

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২৫ মে ২০১৮

৭ বছরে বাজেট থেকে সরকারী ব্যাংকগুলোকে ২১ হাজার কোটি টাকা যোগান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জনগণের করের টাকায় বছরের পর বছর ধরে সরকারী ব্যাংকগুলোর মূলধন যোগান দিয়ে আসছে সরকার। সাত বছরে জাতীয় বাজেট থেকে দেয়া হয়েছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। অব্যবস্থাপনায় বেরিয়ে গেছে এর পুরো অর্থই। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বরাদ্দ দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে কোনভাবে টিকিয়ে রাখার যৌক্তিকতা নেই। এই ধারা বন্ধ না হলে অনিয়ম আরও বাড়বে বলে মনে করেন তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারী ব্যাংকের মধ্যে ৫৩৯৭ কোটি টাকা মূলধন হারিয়ে শীর্ষে সোনালী ব্যাংক। এরপর রয়েছে বেসিক, রুপালী ও জনতা। বিশেষায়িত মধ্যে ৭ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা হারিয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ৬টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ১৭ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ৬৫৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৬৩৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, জনতা ব্যাংকের ১৬১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৭ হাজার ৭৭৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৮১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এমন অবস্থায় প্রতিবছর সরকারী ব্যাংকগুলোকে বাজেট থেকে দেয়া হয় মূলধনের ঘাটতি পূরণে বরাদ্দের নামে লাইফ সাপোর্ট। সরকারের এ ধরনের প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন সিপিডির গবেষক মোয়াজ্জেম হোসেন। সরকারের অর্থবিভাগের তথ্য মতে, পাঁচ অর্থবছর আগেও বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৫০০ কোটির ঘরে। যা ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে তিন অর্থবছর বেড়ে দাঁড়ায় ৫০০০ কোটির ওপর। পরবর্তীতে ২০১৬-১৭ ও ১৭-১৮ অর্থবছর দেয়া হয় পর্যায়ক্রমে ৩১৯ ও ২০০০ কোটি টাকা। ৭ বছরে ব্যাংক খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ২১ হাজার কোটি। চলতি বছরের বরাদ্দ ও আসছে বাজেটেও এর পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিবছর এ ধরনের বরাদ্দকে অনৈতিক বলছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ক্ষতি হলে সেটা সরকার পুষিয়ে দেবে; এমন ভাবনা খুবই ক্ষতিকর। আমাদের সার্বিক ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য এটা বড় চিন্তার বিষয়। ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা কমাতে সংখ্যা কমিয়ে আনা প্রয়োজন বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। পাটচাষীরা ক্ষতির মুখে স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের উলিপুরে নানা প্রতিকূলতার কারণে পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এ অঞ্চলের চাষীরা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় মাত্র ১ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছে। ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা বকেয়া পরিশোধ না করেই পাট ক্রয় কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়। উৎপাদন খরচ বেশি হলেও ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত এসব পাট চাষীরা ক্রমেই লোকসানের মুখে পড়ে পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। প্রতিবছর ৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করে থাকে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ কম হয়েছে। এক সময়ে সোনালি আঁশ পাটকে ঘিরে ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠে উলিপুর হাট। উপজেলা কৃষি অফিসার অশোক কুমার রায় জানান, বিভিন্ন কারণে কৃষকরা পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। উলিপুর পৌরসভার নারিকেল বাড়ি খামার এলাকার বাবু নামের এক কৃষক বলেন, পাট চাষ না করলে যেন কৃষক হিসেবে পূর্ণতা আসে না।
×