ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরমাণু শোডাউনের হুমকি

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২৫ মে ২০১৮

পরমাণু শোডাউনের হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ব ঘোষিত শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হলে পরমাণু শো ডাউনের হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সোন হো বৃহস্পতিবার বলেন, ওয়াশিংটন যদি তাদের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন না করে তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তারা প্রস্তাবিত বৈঠকের বিষয় পুনর্বিবেচনা করে দেখতে পারে। এ ছাড়া তিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে একজন ‘অজ্ঞ ও নির্বোধ’ ব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন।- সিএনএন, বিবিসি ও এএফপি। চো সোন হো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার বর্তমান অবস্থান থেকে সরে না আসে, তাহলে উত্তর কোরিয়ার উচিত ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়া। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে কোন সাক্ষাতকক্ষে কথা বলবে নাকি পরমাণু অস্ত্রের শো ডাউনে দেখবে সেটা এখন তাদের বিষয়। এটা সম্পূর্ণই নির্ভর করছে তাদের আচরণের ওপর।’ ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকের আগে উত্তর কোরিয়ার এই নেতার বক্তব্য খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এ সময় দু দেশের কূটনীতির ভাষায় কথা বলা উচিত। কিন্তু ওয়াশিংটন বা পিয়ংইয়ং সে পথে না গিয়ে সুর চড়া করছে। ফক্স নিউজকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, লিবিয়া মডেলের চুক্তি হবে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে। এমন বক্তব্যের পরেই চো সোন এ কথা। লিবিয়া মডেল বলতে বোঝান হয়েছে উত্তর কোরিয়া পরমাণু কর্মসূচী সম্পূর্ণ ত্যাগ করবে বিনিময়ে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তাগুলো পাবে। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বাগাড়ম্বর নতুন কিছু নয়। তবে সব শেষ এই বক্তব্য এমন এক সময় এলো যখন আর ক’দিন পরেই ট্রাম্প ও উনের বৈঠকে বসার কথা। এ ছাড়া সরকারের বেশ উচ্চ পর্যায় থেকেই হুঁশিয়ারিটি এসেছে। ২ হাজার সালের প্রথম দশকে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি মার্কিন পরামর্শে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচী পরিত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তার শেষ রক্ষা হয়নি। ২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত সামরিক অভিযানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হন। লিবিয়ার উদাহরণ তাই উত্তর কোরিয়ার জন্য ইতিবাচক বিষয় নয়। এ দিকে ট্রাম্প ও উনের বৈঠকের আগে ট্রাম্প প্রশাসন দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আরও বৈঠক চায় বলে জানা গেছে। এ ছাড়া শীর্ষ দুই নেতার বৈঠকের আগেই উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে পরমাণু কর্মসূচী থেকে সরে আসার নিশ্চয়তা চায় যুক্তরাষ্ট্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে আমরা কী নিয়ে আলোচনা করব, তা ঠিক করার জন্য দুই দেশের মধ্যে আরও আলোচনা প্রয়োজন। এর আগে আমাদের জানতে হবে যে এটি আদৌ প্রয়োজনীয় কী না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি হলো উন পরমাণু কর্মসূচী থেকে সরে আসবেন কী না। যদি তিনি সেটি করেন, তবে কোন সমঝোতায় পৌঁছানো কঠিন কিছু হবে না। আর যদি তিনি পরমাণু কর্মসূচী থেকে সরে না আসেন, তবে এই বৈঠক সফল হবে না। কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তির সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে এই বৈঠক। তবে একই সঙ্গে এ রকম শঙ্কাও রয়েছে যে, বৈঠক থেকে কোন ফল না এলে উত্তর কোরিয়া ফের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচী শুরু করতে পারে। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে উন দক্ষিণ কোরিযার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসেছেন। ট্রাম্প-উনের বৈঠক সামনে রেখে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোতে শুরু করেছিল উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু কোন কারণে বৈঠক না হলে বা পিছিয়ে গেলে কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।
×