ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

অষ্টম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

প্রকাশিত: ০৭:১২, ২৪ মে ২০১৮

অষ্টম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

সিনিয়র শিক্ষক বি এ এফ শাহীন কলেজ কুর্মিটোলা, ঢাকা (৩য় অধ্যায়) তোমার কম্পিউটারটি ভাইরাস আক্রান্ত হলে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে? উত্তরঃ কম্পিউটার ভাইরাস এক ধরনের ক্ষতিকর সফটওয়্যার। আমার কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা হলো: ১. একটি আপডেট অ্যান্টিভাইরাস কম্পিউটারে ইনষ্টল করতে হবে। এরপর পুরো কম্পিউটারটির স্ক্যান করে ভাইরাস সনাক্ত করতে হবে এবং প্রাপ্ত ভাইরাসসমূহ ধ্বংস করতে হবে ঐ এন্টিভাইরাস সফ্টওয়্যারটি ব্যবহার করে। ২. চেক করতে হবে ভাইরাস দ্বারা কিভাবে কম্পিউটারটি আক্রান্ত হলো। যদি পেনড্রাইভ এর মাধ্যমে হয় তবে পেনড্রাইভটি অ্যান্টিভাইরাস দ্বারা স্ক্যান করতে হবে অথবা পেনড্রাইভ ফরম্যাট দিতে হবে। ভাইরাস ছড়ানোর উৎস খুঁজে নির্মূল করতে হবে। ৩. ইন্টারনেট থেকে ভাইরাস যাতে আক্রান্ত না হয় সেজন্য ইন্টারনেট সিকিউরিটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। পাসওয়ার্ড কেন ব্যবহার করা হয়? শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির কৌশল আলোচনা কর। উত্তরঃ ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এর মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য অন্যের কাছে চলে যেতে পারে কিংবা কেউ আমাদের যন্ত্রের সফটওয়্যারের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির কৌশলগুলো হলো- ১. সংক্ষিপ্ত পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে দীর্ঘ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। প্রয়োজনে এমনকি কোনো প্রিয় বাক্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। ২. বিভিন্ন ধরনের বর্ণ ব্যবহার করা অর্থাৎ কেবল ছোট হাতের অক্ষর ব্যবহার না করে বড় হাতে এবং ছোট হাতের বর্ণ ব্যবহার করা। ৩. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা অর্থাৎ শব্দ, বাক্য, সংখ্যা এবং প্রতীকের সমন্বয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করা। যেমন: ত২৬ধ১$ৎ১৮ধষ@মসধরষ.পড়স ৪. বেশির ভাগ অনলাইন সাইটে পাসওয়ার্ডের শক্তিমত্তা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে। নিয়মিত সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাসওয়ার্ডের শক্তিমত্তা যাচাই করা এবং শক্তিমত্তা কম হলে তা বাড়িয়ে নেওয়া। ৫. অনেকেই সাইবার ক্যাফে. ইউনিয়ন তথ্য বা সেবা কেন্দ্র ইত্যাদিতে অনলাইন ব্যবহার করে থাকেন, এরুপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আসন ত্যাগের পূর্বে সংশ্লিষ্ট সাইট থেকে লগ আউট করা। ৬. অনেকেই পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করেন। যেমন-ষধংঃঢ়ধংং, শববঢ়ধংং ইত্যাদি এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। ম্যালওয়্যার কী? ম্যালওয়্যারের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে লিখ। উত্তরঃ ম্যালওয়্যার: ম্যালওয়্যার এক ধরনের সফ্টওয়্যার যা কিনা অন্য সফ্টওয়্যারকে কাঙ্খিত কর্মসম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে। শুধু যে বাধার সৃষ্টি করে তা নয়, কোনো কোনো ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে রক্ষিত তথ্য চুরি করে। কোনো কোনো ব্যবহারকারীর অজান্তে তার কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশাধিকার লাভ করে। প্রচলিত এবং শনাক্তকৃত ম্যালওয়্যারসমূহের মধ্যে নি¤েœাক্ত তিন ধরনের ম্যালওয়্যার সরচেয়ে বেশি দেখা যায়: ১। কম্পিউটা ভাইরাস ২। কম্পিউটার ওয়ার্ম ৩। ট্রোজান হর্স। ১। কম্পিউটার ভাইরাস: কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন এক ধরনের সফ্টওয়্যার যা কোন কার্যকরী ফাইলের সঙ্গে যুক্ত হয়। যখন ঔ প্রোগ্রামটি চালু হয় বা চালানো হয় তখন ভাইরাসটি অন্যান্য কার্যকরী ফাইলে সংক্রমিত হয়। ২। কম্পিউটার ওয়ার্ম: কম্পিউটার ওয়ার্ম সে প্রোগ্রাম, যা কোনো নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যান্য কম্পিউটারকেও সংক্রমিত করে। ৩। ট্রোজান হর্স: ট্রোজান হর্স হলো ছদ্মবেশী সফ্টওয়্যার। ক্ষতিকর সফ্টওয়্যারের উদ্দেশ্য তখনই সফল জয় যখন কি-না সেটিকে ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। এজন্য অনেক সফ্টওয়্যার ভালো সফ্টওয়্যারের আড়ালে নিজেকে ঢেকে রাখে। ব্যবহারকারী সরল বিশ^াসে সেটি ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এটি হলো ট্রোজান হর্স- এর কাজের প্রক্রিয়া। যখনই ছদ্মবেশি সফ্টওয়্যারটি চালু হয়। তখনই ট্রোজানটি কার্যকর হয়ে ব্যবহারকারীর ফাইল ধ্বংস করে। তথ্য অধিকার আইন কী? দুর্নীতি নিরসনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা বর্ণনা কর। উত্তর: রাষ্ট্রীয় কার্যাবলির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার অধিকারই হলো তথ্য অধিকার। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিশে^র ৯৩টি দেশে এই জাতীয় তথ্য জানাকে আইনি অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এটিই হলো তথ্য অধিকার আইন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দুর্নীতি নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন- ১. বর্তমান তথ্য সংরক্ষন এবং প্রক্রিয়া করার জন্য পুরো পদ্ধতিকে ই তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় আনতে হয়েছে। তাই কোনো তথ্য ভুল হলে বা লেনদেন অনিয়ম হলে তা সহজেই সবার সামনে প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। ২. টেন্ডার প্রক্রিয়াটি পূর্বে লিখিতভাবে হতো কিন্তু বর্তমানে ব- ঃবহফবৎরহম এর মাধ্যমে এর আর্থিক লেনদেন বা টেন্ডার চুরির ঘটনা কমে যাচ্ছ্ েবাংলাদেশে ই-টেন্ডার করার জন্য বিশেষ পোর্টাল তৈরি হয়েছে। ৩. ব-পড়সসবৎপব প্রক্রিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য হওয়ার কারণে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। যাতে করে মধ্যভোগী অসৎ লোকেরা কোনো সুযোগ গ্রহণ করতে পারছে না। ৪. পরীক্ষার ফলাফল দেখার ক্ষেত্রে ঙগজ পদ্ধতি ব্যবহার করায় দুর্নীতির কোনো সুযোগ থাকছে না। ৫. এখন ইন্টারনেট এবং মিডিয়ার কারণে ক্ষমতাশীল মানুষের বিরুদ্ধে, তাদের অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, মানুষের মতামত প্রদানের এবং একত্রিত হবার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কেউ চাইলেই দূর্নীতি করতে পারবে না। ম্যালওয়্যার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পাঁচটি উপায় লিখ। উত্তর: কম্পিউটারে অনুপ্রবেশকারী বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর সফ্টওয়ারের সাধারণ নামই হলো ম্যালওয়্যার। ম্যালওয়্যার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পাঁচটি উপায় নিচে দেওয়া হলো: ১। বিশেষ ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা এন্টিভাইরাস বা এন্টিম্যালওয়্যার নামে পরিচিত এগুলো কম্পিউটারের ম্যালওয়্যারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কাজ করে। যা এক ধরনের সফ্টওয়ার যা ম্যালওয়্যারের বিরুদ্ধে কাজ করে। ২। ফায়ারওয়াল ব্যবস্থার মাধ্যমেও ব্যবহারকারিগণ ম্যালওয়্যারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে থাকে। ৩। যেহেতু প্রতিনিয়তই ম্যালওয়্যার তৈরি হচ্ছে তাই এর তৈরি, বিপণন, বিকাশের ব্যাপারটি আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা উচিত। ৪। সব ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারেরএকটি নির্দিষ্ট চধঃঃবৎহ রয়েছে। এন্টি ম্যালওয়্যার এসব চধঃঃবৎহ এর তালিকা সংগ্রহ করে এবং এর ভিত্তিতে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারটি শনাক্ত করে। তাই এ তালিকাটি নিয়মিত হালনাগাদ করার প্রয়োজন হয়। এভাবে সবসময় ভাইরাস থেকে ওঈঞ যন্ত্রকে রক্ষা করা যায়। ৫। এছাড়া যেসব মাধ্যম যেমন পেনড্রাইভ, হার্ডডিক্স, নেটওয়ার্ক পেইটওয়ে (এধঃবধিু)এর সাহায্যে ভাইরাস ছড়ায় সেসব ব্যবহারে সচেতন হলে এর থেকে অনেকটাই নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে।
×