ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ-বধে সরফরাজের হুঙ্কার

লর্ডসে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান প্রথম টেস্ট শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৪ মে ২০১৮

লর্ডসে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান প্রথম টেস্ট শুরু আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রঙিন পোশাকে ভাল খেললেও সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে পাকিস্তানের অবস্থা মোটেই ভাল নয়। অভিজ্ঞ মিসবাহ-উল হক ও ইউনুস খান অবসরের যাওয়ার পর সাদা পোশাকে কেমন চুপসে গেছে এশিয়ার পরাশক্তিরা। তার ওপর ইনজুরির কারণে অনুপস্থিত তুখোড় লেগস্পিনার ইয়াসির শাহ। সবমিলিয়ে লর্ডসে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই টেস্টের সিরিজটা পাকিদের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তবে এক ঝাঁক তরুণ খেলোয়াড় নিয়ে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের প্রত্যয় সরফরাজের কণ্ঠে, ‘ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ড অবশ্যই শক্তিশালী। আমার এই দলে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, আক্রমণাত্মক খেলা উপহার দিয়ে নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করা। আমার মনে হয় মনোভাবে পরিবর্তনের এটাই সময়। রঙিন পোশাকে যে খেলাটা খেলছি সেটা টেস্টেও বয়ে নিতে চাই। জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছি না।’ বলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। প্রায় একই বক্তব্য পাকিস্তান কোচ মিকি আর্থারের, ‘আমরা এখানে জয় না তুলে নেয়ার জন্য আসিনি। এটা বদলে যাওয়া দল, তরুণদের, ভয়-ডরহীন ক্রিকেটার এবং দারুণ স্কিলের ক্রিকেটারদের দল। যদি এটা কাজে লাগাতে পারি সবকিছু আমাদের পক্ষেই যাবে। ছেলেরা ইংল্যান্ডকে অবশ্যই চাপে ফেলবে।’ ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আসছে। অধিনায়ক জো রুট তিন নম্বরে, উইকেটকিপার জনি বেয়ারস্টো পাঁচে এবং জস বাটলারকে ফিরিয়ে এনে সাতে দেয়া হচ্ছে। জ্যাক লিচ ইনজুরিতে। তার জায়গায় টেস্ট অভিষেক হতে পারে সমারসেটের স্পিনার ডমিনিক বেসের। আর্থার বলেন, ‘নিজেদের কন্ডিশনে ইংল্যান্ড বিদেশের চেয়ে ভিন্ন দল। বাটলারের দিকে আমাদের চোখ রাখতে হবে নিশ্চিতভাবেই। ইংল্যান্ড দলে আক্রমণ শক্তি বাড়াবে সে।’ দুই বছর আগে সর্বশেষ ইংল্যান্ড সফরে ২-২এ সিরিজ ড্র করে প্রশংসা কুড়িয়েছিল মিসবাহর পাকিস্তান। সেবার পার্থক্য গড়ে দেয়া মিসবাহ, ইউনুস, ইয়াসির এবার নেই। ব্যাটিংয়ে সফরকারীরা ভরসা করবে আজহার আলি, আসাদ শফিক, সরফরাজের ব্যাটে। তবে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হকের ভাগ্নে ইমাম-উল হক হতে পারেন নতুন তারকা। আইরিশদের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে। সফরে প্রস্তুতিম্যাচসহ এরই মাঝে তিনটি ফিফটি করেছেন। তারমধ্যে একটি এবার আইরিশদের বিপক্ষে টেস্ট জেতানো। আর্থার আরও বলেন, ‘আমরা অবিশ্বাস্য রকম ফিট একটি দল। ছেলেরা বিস্ময়কর শক্ত পরিশ্রম করেছে। ২০১৬ সালে যখন এখানে এসেছিলাম তখন এমনটা ছিল না। আমরা প্রায় ফিটনেস রাজত্বেই ঢুকেছি। আমাদের খেলা ব্র্যান্ড ক্রিকেটও আক্রমণাত্মক।’ উল্লেখ্য, তারকা পেসার মোহাম্মদ আমিরও পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠেছেন। ওদিকে ইংল্যান্ডও যে চাপে নেই তা নয়। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিলান্ডে তাদের শেষ সফর ছিল জয়হীন। এ্যাওয়ের বাজে রেকর্ড তাতে আরও দীর্ঘ হয়েছে। সাদা পোশাকে দেশের বাইরে ১৩ ম্যাচে জয়হীন ইংলিশরা। জো রুটদের জন্য এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেশের মাটিতেই জয়ে ফেরাটা গুরুত্বপূর্ণ। আবার পাকিস্তানও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাজে সময় কাটিয়েছে আগের টেস্টগুলোতে। জয় নেই। আছে অকল্যান্ডে ৫৮ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জা। আয়ারল্যান্ডের অভিষেক টেস্টটা ৫ উইকেটে জিতে কিছুটা স্বস্তিতে ফিরেছে তারা। কিন্তু দলটা তো টেস্ট পরিবারের নবীনতম সদস্য। পাকিস্তানের বোলিং ২৬ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার আমিরের ওপর নির্ভরশীল। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং টেস্টে সাফল্য আছে তার। আছে শেষ মৌসুমে এসেক্সের সঙ্গে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার অভিজ্ঞতা। এখানেই ২০১০ সালে তার ক্যারিয়ার স্পট ফিক্সিং-এর কারণে শেষ হতে বসেছিল লর্ডসেই। উঠে এসেছেন ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে। লেগস্পিনে ইয়াসিরের জায়গায় ১৯ বছরের শাদাব খান। ১৯৫৪ থেকে দু’দল মোট ৮১টি টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে। ইংল্যান্ডের জয় ২৪ ও পাকিস্তানের ২০টিতে। ড্র হয় ৩৭টি ম্যাচ। ২০১৬ সালে শেষ ইংল্যান্ড সফরে ৪ টেস্টের সিরিজ ২-২এ ড্র করেছিল পাকিস্তান। তার আগে ২০১২ ও ২০১৫ সালে নিজেদের হোম ভেন্যু আমিরাতে দুটি সিরিজই জিতেছিল পাকিস্তান।
×