ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্যালিয়েটিভ সেবা প্রদানে ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ প্রকল্পের সমঝোতা সই

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৪ মে ২০১৮

প্যালিয়েটিভ সেবা প্রদানে ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ প্রকল্পের সমঝোতা সই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিরাময় অযোগ্য রোগীদের প্যালিয়েটিভ সেবা প্রদানের জন্য ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ও ওয়ার্ল্ডওয়াইড হসপিস এ্যান্ড প্যালিয়েটিভ কেয়ার এলায়েন্সর (ডব্লিউএইচপিসিএ) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বুধবার বিএসএমএমইউ’র পক্ষে ভিসি ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া এবং ডব্লিউএইচপিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক স্টিফেন কোন্নর এর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির গ্লোবাল এডভোকেসি ডিরেক্টর ক্লেয়ার মার্গারেট মরিস। বুধবার বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্টন হলে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ সাহানা আখতার রহমান, প্যালিয়েটিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ নিজামউদ্দিন আহমদ প্রমুখ। প্যালিয়েটিভ সেবার প্রয়োজনীয়তা ও করণীয় বিষয় তুলে ধরে সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রকল্পের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহমেদ বলেন, প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর মাধ্যমে হাতে-কলমে শেখানো হবে প্রান্তিক রোগীদের ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ, উপযুক্ত কথোপকথন এবং সার্বিক সেবার বিভিন্ন বিষয়। চিকিৎসাসেবা কর্মীরা নিরাময় অযোগ্য রোগীদের যে গভীর কষ্ট এবং দুর্দশা পর্যবেক্ষণ করেন, তার যথাযথ যতœ নেয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করি, তাদের দক্ষতা শুধু ব্যথা কমানো নয়;বরং এর গভীরে কী হচ্ছে, তা কিভাবে বর্ণনা করতে হবে এবং রোগী ও তার পরিবারকে কিভাবে আশা যোগাতে হবে সে ক্ষেত্রেও দক্ষতা বাড়ানো দরকার। তিনি আরও বলেন, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় চরম আরোগ্য-নির্ভরতার সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে নতুন আশার সম্ভাবনা নিয়েই এগিয়ে এসেছে ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’ অথবা ‘প্রশমন সেবা’র দর্শন। যখন কোনও রোগীর রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়, তখন তার রোগ সংক্রান্ত উপসর্গগুলো নিরাময় বা সুরাহা করাকে প্যালিয়েটিভ কেয়ার বলে। সমাজসেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার একটি যথাযথ সম্মিলনে কতিপয় উন্নয়নশীল দেশে যে ‘কমিউনিটি প্যালিয়েটিভ কেয়ার’-এর ধারণা গড়ে উঠেছে, তা বাংলাদেশেও বহু পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন হয় সেসব রোগীদের যাদের দীর্ঘমেয়াদী স্নায়ুরোগ। যেমন- স্ট্রোক, প্যারালাইসিস আছে। অথবা যারা এইডস বা ক্যান্সারের মত জটিল রোগে আক্রান্ত। যেসব রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। কিন্তু এসব রোগের উপসর্গগুলোর অন্যতম হচ্ছে তীব্র ব্যথা, যা অনেক কষ্টকর। এ রোগীরা যেহেতু জানতে পারে সে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাই তার মানসিক কষ্টও কম নয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা শারীরিকভাবে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এসব ক্ষেত্রে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন। অধ্যাপক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আরও বলেন, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কষ্ট লাঘব করে চিকিৎসাসেবা এবং সহানুভূতি ও মমতার সমন্বয়ে রোগীকে পরিচর্যা করাই প্যালিয়েটিভ কেয়ারের লক্ষ্য। প্যালিয়েটিভ কেয়ার বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা খাতে তুলনামূলক নতুন একটি ধারণা। ‘ভাল হবার নয়’ এমন রোগী ও তার পরিবারকে চিকিৎসা সেবা ও সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার আওতায় নিয়ে আসাই প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা প্রশমন চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য।
×