ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়ায় কৃষকদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৪ মে ২০১৮

অস্ট্রেলিয়ায় কৃষকদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম শস্য উৎপাদনকারী এলাকা। কৃষিপণ্য রফতানি করে দেশটির অর্থনীতি এখন সমৃদ্ধশালী । এসব কিছুর পরও সেখানে কৃষকরা আত্মহত্যা করে থাকে। আর্থিক সঙ্কট থেকে মানসিক সমস্যা এবং তার ফলেই বেশিরভাগ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। নিউইয়র্ক টাইমস। জেমস গাই অনেক দিন ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ডেইরি ফার্ম চালাচ্ছেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি এ ব্যবসায় নামেন। তার বয়স এখন ৫৫। তার এখন অবসরের প্রস্তুতি নেয়ার কথা। কিন্তু তার পরিবর্তে তাকে এখন ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য পরিশ্রম করতে হচ্ছে। দুধের দাম পড়ে গিয়ে তার ব্যবসার যে ক্ষতি হয়েছে সেটি তিনি কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। ২০১৬ সালের নবেম্বরের কোন এক রাতের ঘটনা। তার স্ত্রী মেরি গাইয়ের মৃতদেহ দেখতে পান। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গাই। ব্যবসার দেনা মেটাতে মেরি এখন খ-কালীন নার্স হিসেবে কাজ করছেন। মেরি বলেন, ‘একজন খামারি যখন দেখেন তার সারাজীবনে গড়ে তোলা খামার ব্যবসা মার খাচ্ছে তখন তার চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হয় না। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের সিম্পসন শহরে তাদের খামারবাড়ি অবস্থিত। শহরটি অস্ট্রেলিয়ার ডেইরি শিল্পের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। কথা বলার সময় মেরির কণ্ঠস্বর কাঁপছিল। তিনি বলেন, ‘এখানকার খামারিরা তাদের পরিচয় হারাতে বসেছে।’ অস্ট্রেলিয়ার কৃষি সমৃদ্ধির পেছনে গাইয়ের মতো পরিবারগুলোর অনেক অবদান আছে। পল্লীর উৎপাদিত কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্য সামগ্রী যখন রফতানি হতে শুরু করে ক্ষুদ্র চাষী ও খামারিদের দুর্দিন তখন থেকেই শুরু। অনেকেই অর্থ ঋণ করতে অথবা খামার বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা মনোবলও হারাতে থাকে থাকে। অনেকের শরীর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে, কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেয়। পল্লী অঞ্চলে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকে। শহর এলাকায় যেখানে প্রতি বছর ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১০ জন আত্মহত্যা করে, পল্লী অঞ্চলে এই হার দাঁড়ায় ২০ জনে। কোন এলাকায় এই সংখ্যা ২৩ জন পর্যন্ত দেখা গেছে। চলতি বছর পার্থের পূর্বাঞ্চলীয় ক্ষুদ্র শহর অসমিংটনে একটি পরিবারের সাত জন আত্মহত্যার খবর প্রকাশের পর বিষয়টি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে।
×