ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তারুণ্যের প্রতীক জাস্টিন ট্রুডো

প্রকাশিত: ০৭:৫১, ২২ মে ২০১৮

তারুণ্যের প্রতীক জাস্টিন ট্রুডো

শুধু সুদর্শন বলে নয়, মানবিক গুণাবলী, মানুষের প্রতি তার মমতা ও ভালবাসার কারণেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় একজন মানুষ। তাকে পছন্দ করে না এইরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। জাস্টিন ট্রুডো কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ২০১৫ সালে দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। জো ক্লার্কের পর তিনি কানাডার দ্বিতীয় কম বয়স্ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিতা পিয়েরে ট্রুডোও কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অটোয়াতে জন্ম নেয়া ট্রুডো কলেজ জিন-দ্যে-ব্রেবুফ এ পড়ালেখা করেন। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে এবং ১৯৯৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পিতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে দেয়া একটি বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সবার প্রথম জনসমক্ষে নিজের স্বীয়ব্যক্তিত্ব তুলে ধরেন। স্নাতক শেষ করে ট্রুডো ভ্যানকুভারের ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে চাকরি ছাড়র আগে তিনি মন্ট্রিলের ইকোল পলিটেকনিক থেকে এক বছরের ইঞ্জিনিয়রিং প্রোগ্রাম শেষ করেন। ২০০৫ সালে জাস্টিন ট্রুডো ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়েরিবেশগত ভূগোলে স্নাতকোত্তর শুরু রলেও এক বছর পরেই তা থেকে অব্যাহতি নেন। ‘দ্য গ্রেট ওয়র’ নামক একটি টিভি মিনি সিরিজে তিনি নিজের জনপ্রিয়াকে কাজে লাগান। বাবার মৃত্যুর আট বছর পর ট্রুডো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ২০০৮ সালের ফেডারেল ইলেকশনে তিনি হাউজ অব কমন্সে নির্বাচিত হয়েলবারেল পার্টির যুব ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন সমালোচক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরবর্তী বছর তিনি নাগরিক ও ইমিগ্রেশন বিভাগের সমালোচকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে সেকেন্ডারি শিক্ষা এবং যুব ও সৌখিন খেলাধুলা বিভাগের সমালোচকের দায়িত্ব পান। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ট্রুডো লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব পান। ২০১৫ সালে তার নেতৃত্বে ১৮৪ এর মধ্যে ৩৬টি আসন পেয়ে কানাডার ইতিহাসে সর্বোচ্চসংখ্যক আসন নিয়ে লিবারেল পার্টি সরকার গঠন করে। গত ১৬ মে ২০১৮ জাস্টিন ট্রুডো কে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করে তাদের ১৮৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি তার বক্তব্যে বৈশ্বিক রাজনৈতিক বিষয়গুলো আলোকপাত করেন তার বক্তব্যে উঠে আসে জলবায়ুর পরিবর্তন, সাম্প্রতিক বিষয়সমূহ। মাইগ্রেশন নিয়ে যখন বিশ্বের সকল দেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে, তখন ঠিক তার বিপরীত ছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ২৮০০০ সিরিয়ান রিফিউজিকে (শরণার্থী) আশ্রয় প্রদান করেছেন। সমাবর্তন ভাষণে তিনি বলেন আমরা যদি একে ওপর কে সম্মান করি তাহলে খুব সহজেই আমাদের সাময়িক সমস্যার সমাধান করতে পারি। আমরা যদি মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করি, মানবতার কথা বলি তবে সব ধরনের বর্ণবাদ, সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে পারি। একটি জাতি, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্মীয় বা জাতিগত উৎস, বা আমাদের বিশ্বাস এবং নিজেদের মূল্যবোধ দুর্বলতা হতে পারে না। এটা আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি হতে পারে। তিনি আরও বলেন নিছক সহনশীলতা যথেষ্ট নয়। আমাদের একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে। নারী-পুরুষ একসঙ্গে কাজ করলে একটি দেশ উন্নত হতে বাধ্য। তাই তিনি তার মন্ত্রিসভা অর্ধেক নারী ও অর্ধেক পুরুষ সদস্য দিয়ে সাজিয়েছেন। যুগে যুগে পৃথিবীর বুকে জন্ম হোক মানবতাবাদী মানুষ , যারা বুঝতে পারবে সাধারণ মানুষের কষ্ট। জড়িয়ে নেবে ভালবাসার বন্ধনে, আগলে রাখবে পরম মমতায়।
×