ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সড়ক কি ধান শুকানোর চাতাল?

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২২ মে ২০১৮

সড়ক কি ধান শুকানোর চাতাল?

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ চলছে ভরা বোরো মৌসুম। ক্ষেতের সোনালি ধান কাটা মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। পঞ্চগড়ের কৃষাণ কৃষাণী পাড়ায় এখন অবসর নেই। তবে ক্ষেতের ধান এখন সড়ক মহাসড়কের জায়গা দখল করে নিয়েছে। মহাসড়ক থেকে সুরু সড়কে সর্বত্রই ধান মাড়াই, শুকানো ও খড় শুকানোর কাজ চলছে। এতে সাধারণ পথচারীদের যেমন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অন্যদিকে সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। সরেজমিনে দেখা যায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সড়ক ও সংযোগ সড়কগুলোতে বোরো ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছে। দেবীগঞ্জে টেপ্রিগঞ্জ এলাকায় দেখা যায় রাস্তা বন্ধ করে সড়কের ওপর মাড়াই মেশিন দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন কৃষকরা। মাড়াই করা ধান আর খড় আবার শুকানো হচ্ছে সড়কেই। কয়েকটি ভ্যান ও পথচারী দাঁড়িয়ে আছে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য। তারা প্রতিবাদ করায় মাড়াই মেশিন একটু সরিয়ে তাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল তারা। তারপর আবার আগের মতো মাড়াই শুরু হয়। এ অবস্থা শুধু দেবীগঞ্জে টেপ্রিগঞ্জ এলাকার নয় দেবীগঞ্জ উপজেলার সব এলাকাতেই একইভাবে সড়কের ওপর ধান মাড়াই ও শুকানো কাজ চলছে। এ ছাড়া পঞ্চগড় সদর, বোদা, আটোয়ারী ও তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেও সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে তেঁতুলিয়া বাইপাস থেকে বাংলাবান্ধা এবং বোদা থেকে দেবীগঞ্জ মহাসড়কটি। ব্যস্তময় এই মহাসড়কটিতে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ চললেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন নজরদারিই লক্ষ্য করা যায়নি। পথচারী নুর মোহাম্মদ জানান, পুরো রাস্তা বন্ধ করে ধান মাড়াই করা হচ্ছে। একজন মানুষ যে সাইকেল মোটরসাইকেল নিয়ে যাবে তার উপায় নেই। আবার রাস্তার ধান খড় শুকানোয় দুর্ঘটনা ঘটছে। দেবীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর এলাকার কৃষক আব্দুস সালাম জানান, আমাদের বাড়িতে ধান মাড়াইয়ের মতো জায়গা নেই। তাছাড়া ক্ষেতেও পানি জমে গেছে। নিরুপায় হয়ে সড়কেই ধান মাড়াই করতে হচ্ছে। পঞ্চগড় সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, আমরা বরাবরই সড়কের ওপর ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজে স্থানীয়দের নিরুতসাহিত করে আসছি। তবে আমাদের জনবল সঙ্কট থাকায় সব সময় সড়কে নজর রাখা সম্ভব হয় না। পঞ্চগড় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা ছাড়া সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানো বন্ধ করা যাবে না। দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোর অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোর বিষয়ে কৃষকদের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারপরও কেউ রাস্তা বন্ধ করে ধান মাড়াই করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×