ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে সবজিতে ঠকছেন কৃষক-ভোক্তা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২২ মে ২০১৮

যশোরে সবজিতে ঠকছেন কৃষক-ভোক্তা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে কৃষকের কম মূল্যের সবজি, বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। রমজানে কয়েক দিনের ব্যবধানে বেড়েছে সবজির দাম। কৃষকরা ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হলেও ভোক্তার পকেট কাটা যাচ্ছে। কৃষকরা বলছে, এখন সবজির মৌসুম নয়, এজন্য সবজি উৎপাদন কম হচ্ছে। তবে দাম মোটামুটি ভাল পেয়েছেন। যশোরের সবজি দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হয়। কৃষকের সবজি যশোর শহর ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কয়েক হাত বদলের পর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। চৌগাছার সিংহঝুলি গ্রামের কৃষক জাফর ইকবাল বলেন, ঢেঁড়স ২৮ টাকা, পটোল ৩৩ টাকা, পুঁইশাক ৭ টাকা ও বেগুন ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। সবজির চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন কমেছে। এ জন্য মোটামুটি ভাল দাম পেয়েছি। রমজানের কারণে সবজির দাম বেড়েছে। শিলা বৃষ্টিতে অনেকের সবজি নষ্ট হয়েছে। তাছাড়াও সবজি মৌসুমও শেষ পর্যায়ে। এ জন্য দাম বেশি। যশোরের চৌগাছার কাঁচামালের আড়তদার গোলাম মোস্তফা মল্লিক জানান, রবিবার কৃষকরা আলু ১৭-১৮ টাকা, পটোল ৩০-৩৫ টাকা, বেগুন ৪৮-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১২-১৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, পুঁইশাক ৬ টাকা, উচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, শসা ৪৫-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৪০-৪৫ টাকা, পিঁয়াজ ভারতীয় ১৮-২০ টাকা ও দেশী ৩০-৩২ টাকা, রসুন ৪৫-৫০ টাকা, কলা ২৫-৩০ টাকা, ধনেপাতা ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। এছাড়া পাতাকপি ১০-১৫ টাকা পিস বিক্রি হয়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজির পাইকারি দামও বেড়েছে। উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চৌগাছার সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির সবজি চাষী মিজানুর রহমান বলেন, ৫০ শতক জমিতে পটোল, ৩৩ শতক জমিতে বেগুন রয়েছে। ক্ষেতে সবজি উৎপাদন কমেছে। মাস খানেক আগে পটোল যেখানে ২০ মণ উঠত, বর্তমানে ৫ মণে নেমেছে। বেগুনও কমেছে। সবজির মৌসুম ফুরিয়ে আসায় উৎপাদন কমছে। তবে, অল্প পরিমাণে সবজি উৎপাদন হলেও কয়েকদিনে পাইকারি মূল্যও বেড়েছে। মিজানুর রহমান জানালেন, পটোল ৪০-৪২ টাকা, বেগুন ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। এছাড়াও ধুন্দল ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তবে ভিন্নচিত্র যশোরের খুচরা বাজারে। কৃষকের হাত বদলের পর খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এইসব সবজি। শহরের বড় বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৪৫ টাকা, কলা ৩০-৩৫ টাকা, আলু ২২ টাকা, পুঁইশাক ১৫-২০ টাকা, উচ্ছে ৪০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০-২৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, পিঁয়াজ ৪০ টাকা (দেশী), ধনেপাতা ১০০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, টমেটো ৭০ টাকা। খুচরা বিক্রেতা গোবিন্দ সাহা বলেন, বেশি দামে সবজি কিনছি। অল্প লাভেই বিক্রি করছি। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। রোজার এই দুইদিন হঠাৎ সবজির দাম বেড়েছে। একই কথা জানালেন বড় বাজারের অপর খুচরা বিক্রেতা আবদুস সালাম বলেন, কাঁচামাল (সবজি) পাওয়া যাচ্ছে না। বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ জন্য খুচরাও দাম বেশি পড়ছে। যশোরের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সোহেল শেখ বলেন, মধ্যস্বত্ব¡ভোগীদের কারণে দামের ব্যবধান বেশি হয়। আমরা সরাসরি দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। তবে খুচরা ও পাইকারি বাজারের দামের ব্যবধান কমানো চেষ্টা করি। তিনি আরও বলেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মূল্য তালিকা টাঙ্গানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
×